নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও জনগণের অপারগতা।।২২ ডিসেম্বর ২০২৩

in hive-129948 •  last year 

এই মুহূর্তে ভারতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির একটা বড় উদ্বেগ এর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে এই দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি দারুণভাবে প্রভাবিত করে। খাদ্য, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির মূল্য সময়ের সাথে সাথে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জনগণের জন্য একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ।

image.png

Image by macrovector_official on Freepik

এই মূল্যবৃদ্ধির প্রাথমিক কারণগুলির মধ্যে একটি হল বিশ্বব্যাপী পণ্যের দামের ওঠানামা। ভারত বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানির করে এবং ভারতীয় বাজার এই আমদানি পণ্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।আন্তর্জাতিক মূল্যের অস্থিরতা সরাসরি অভ্যন্তরীণ দামকে প্রভাবিত করে।অপরিশোধিত তেলের মূল্য বৃদ্ধি হারের মতো কারণগুলি, যা জ্বালানীর দামকে প্রভাবিত করে, পরিবহন খরচকে সরাসরি প্রভাবিত করে, যার ফলে পণ্যের সামগ্রিক মূল্য বৃদ্ধি পায়।

ফলে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন এবং অদক্ষ বিতরণ ব্যবস্থার মতো সাধারন কারণগুলি এই সমস্যার জন্য প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ী। অপর্যাপ্ত হিমাগার সুবিধা এবং ফসল কাটার পর অনাকাঙ্ক্ষিত লোকসান কৃষি খাত কে খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয়।কৃষি উৎপাদনের জন্য যে বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন তার অভাব উপর অনিয়মিত উৎপাদনের পরিবেশ সৃষ্টি করে।যা দামকে আরও প্রভাবিত করে।

কোভিড-১৯ মহামারী ও পরবর্তী জটিল বিষয় গুলো এই চ্যালেঞ্জ কে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। লকডাউন সরবরাহ শৃঙ্খলকে ভীষণ ভাবে ব্যাহত করেছে, যার ফলে পণ্যের ঘাটতি এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ সৃষ্টি হয়েছে। মহামারী চলাকালীন চাকরি হারানো এবং আয় হ্রাস অনেক পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রয়ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়েছে ফলে তাদের আর্থিক চাপ বেড়ে গেছে উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর্থ-সামাজিক ভাবে ও প্রভাবিত করেছে। নিম্ন আয়ের পরিবারগুলি বিশেষত, এই দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির ধাক্কার সম্মুখীন হচ্ছে।আর এটা সামগ্রিক জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে।

এই চ্যালেঞ্জগুলিকে প্রশমিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসের উপর ভর্তুকি, মূল্য নিয়ন্ত্রণ, এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের মতো প্রকল্পগুলি কে জোর দেওয়া হয়েছে।সমাজের দুর্বল বাজার গুলোতে ভর্তুকিযুক্ত হারে খাদ্য সরবরাহ করা।তবে এই ব্যবস্থাগুলির কার্যকারিতা প্রায়ই বাধাপ্রাপ্ত হয় প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং দুর্নীতির কারণে।

যাই হোক,অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, সরবরাহ চেইন আধুনিকীকরণ এবং কৃষি পদ্ধতির উন্নতি মূল্য স্থিতিশীল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং টেকসই কৃষি অনুশীলনের সুপারিশ ও ফসল-পরবর্তী ক্ষতি কমাতে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক।

ক্ষুদ্র আকারের কৃষকদের ক্ষমতায়ন করা, তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা এবং 'মেক ইন ইন্ডিয়া'-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় উৎপাদন ও ব্যবহারকে উৎসাহিত করা দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসেবে কাজ করতে পারে।

ভারতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা মোকাবেলায় নীতি সংস্কার, অবকাঠামোতে বিনিয়োগ এবং কৃষি খাতকে শক্তিশালী করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার।জনগণের উপর চাপ কমাতে এবং সমাজের সকল অংশের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলির সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার, বেসরকারী খাত এবং সুশীল সমাজের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমন্বয় ও প্রচেষ্টা অপরিহার্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কিছু পণ্যের উপর ভর্তুকি দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর মূল্যবৃদ্ধি আটকানো সম্ভব। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।

Posted using SteemPro Mobile

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

দাদা আপনার লেখাটা পড়ে,
আমি আমার এখানকার অবস্থার কথাটা চিন্তা করছি, আপনাদের ওখানেই যদি এরকম অবস্থা হয়, তাহলে এখানকার কথা আর নাই বলি ভাই। বড্ড করুণ দশা যাচ্ছে।

তবে,
তীর্থের কাকের মত চেয়ে আছি, হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে এই প্রত্যাশায়।

কোভিড মহামারিতে কল-কারখানা বন্ধ থাকায় উৎপাদন ক্ষমতা ভয়ানকভাবে কমে যায় সেটারই প্রভাব বর্তমান সময়ে মুদ্রাস্ফীতিতে দেখা যাচ্ছে। পরিকাঠামোর ব্যাপক বদল হলেই মুদ্রাস্ফীতিতে হ্রাস দেখতে পাওয়া যাবে। আশা করছি আগামী কয়েকমাসে এতে কিছুটা পরিবর্তন আসবে।

দাদা শুধু ভারতে নয়, আমাদের এখানেও দ্রব্য মূল্যের জন্য আর বাজারে কোন কিছুতে হাত দেওয়া যায় না। তবে আপনি কিন্তু বেশ সুন্দর করে দ্রব্য মূল্য নিয়ে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে কিছু সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, সরবরাহ চেইন আধুনিকীকরণ এবং কৃষি পদ্ধতির উন্নতি মূল্য স্থিতিশীল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু সত্যিই রাখতে পারে।

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটা বিষয় নিয়ে দারুণ কিছু কথা উপস্থাপন করেছেন এবং আপনার সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরেছেন। জ্বী দাদা আমরাও বাংলাদেশে একই সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছি। বাজারে গেলেই অনেক ক্ষেত্রে সদাই না নিয়ে ফিরে আসছি শুধুমাত্র পন্যের দাম শুনে। তবে প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং দুর্নীতির রেশ টেনে না ধরতে পারলে এই সমস্যা হতে আমরা বের হয়ে আসতে পারবো না।

ভারতেও মতো বাংলাদেশেও দাদা পণ্য দ্রব্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হারে বাড়ছে! সাধারণ জনগণের পণ্য কিনতেও বেগ পোহাতে হচ্ছে! আসলে সবকিছুর পিছনে আমার মনে হয় সিন্ডিকেট, কৃষকের ন্যায্যমূল্য না দেয়া, জমিতে কৃষি কাজে অনুৎসাহী এসবই দায়ী। এছাড়াও কারণ রয়েছে আপনি যেগুলো উল্লেখ করেছেন। মূল্য বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অবশ্যই কৃষি খাতকে শক্তিশালী করা জরুরি। এছাড়াও সরকার সহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসা উচিত।

সবকিছু মিলিয়ে দাদা অস্থির একটি পরিবেশে আমরা এখন আছি। যেটা আসলে আমাদের মানবজাতির জন্য খুবই ভয়ংকর একটি মুহূর্ত অপেক্ষা করতেছে। কারণ শুধু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নয়। পুরো বিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝতে পারা যাচ্ছে আমাদের জন্য খুব খারাপ একটা সময় অপেক্ষা করতেছে। কারণ বিভিন্ন ধরনের মহামারী, যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখন খুব খারাপ অবস্থায় আছি। আপনার লেখা গুলো পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।

দাদা আমাদের দেশে ও একই অবস্থা। প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার তিন বেলার খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। এখন শীতকাল চলছে, তবুও কৃষিজাত পণ্যের দাম অনেক। টমেটো, শিম ৮০-১০০ টাকা কেজি। সুতরাং সবার উচিত উৎপাদন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা। তাছাড়া সরকারি পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া উচিত। যাইহোক সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

আমাদের দেশে তো আরো ভয়াবহ অবস্থা দাদা। বাজারে গেলে রীতিমতো মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনি সঠিক বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করেছেন। তবে আমাদের দেশে সরকারের বাজার ব্যবস্থাপনায় ভয়াবহ অদক্ষতা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে। পরিস্থিতি মনে হয় সামনে আরো ভয়াবহ হবে। সামনের দিনগুলোর জন্য মনের ভিতর রীতিমতো ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।

很好

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং সাধারণ জনগণের ভোগান্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না। কারণ বাজারে গেলে দেখা যায় প্রত্যেকটি জিনিসের মূল্য এত পরিমাণ বেড়েছে । কিছু কেনার আগেই হিসাব করে রাখতে হয়
পরের দিনগুলো কিভাবে চলবো। একটি সময় বাজারে গেলে বাজারের ব্যাগ ভর্তি না হলে আসা হতো না কিন্ত এখন সাধারণ জনগণ অসহায় আয় বুঝে ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য হিসাব করে ব্যয় করতে হচ্ছে তাদের।
ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, কৃষি পদ্ধতির উন্নতির মূল্য, স্থিতিশীল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু রাখতে পারে। অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।