আমার সেকেন্ড টাইম রক্ত দেওয়া এবং তার পরবর্তী ঘটনা।। 10% for @shy-fox

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার বন্ধুরা। আমি @bloggershanto। আজ আমি আমার সেকেন্ড টাইম রক্ত দেওয়া এবং রক্ত দেওয়ার পর আমার সাথে কি ঘটেছিল তা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।


blood-5053760_640.jpg
Source

দিনটি ছিল ৮ই নভেম্বর। সেমিষ্টার ফাইনাল থিওরি পরীক্ষা শেষ করে বাসায় আসলাম। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র আপু আমায় কল দিয়ে বলল যে তার আম্মুর হার্টের অপারেশন করাতে হবে কিন্তু শরীরে হিমোগ্লোবিন অনেক কমে যাওয়ার কারণে ডাক্তারেরা অপারেশন করতে চাইছেন না। ডাক্তারেরা বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে ৪/৫ ব্যাগ A+ ব্লাড দিয়ে হিমোগ্লোবিন সমতায় আনতে হবে। আমি শুনেই আপুকে বললাম ব্লাড আমি দিতে পারব কারণ আমার ব্লাড গ্ৰুপও A+ এবং আমার পূর্বের ব্লাড দেওয়ার ১২০ দিন পূর্ণ হয়ে গেছে। আপু আমাকে বলল হাসপাতালে পৌঁছে আমাকে কল করবে তাই আমি যেন রেডি হয়ে থাকি। আমি স্নান করে দুপুরের খাবার খেয়ে রেডি হয়ে আপুর কলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। আপু কল দিতেই আমার রুমমেট শাকিলকে নিয়ে হাসপাতালে চলে গেলাম।

lab-3498584_640.jpg
Source

হাসপাতালে যাওয়ার পর দেখলাম আন্টির অবস্থা খুবই খারাপ তিনি একদমই হাঁটতে পারছেন না। হাসপাতালের নার্স আমাদেরকে বলল প্যাথলজি ভবনে গিয়ে ব্লাড ম্যাচ করিয়ে ব্লাড নিয়ে আসার জন্য। অনেক কষ্টে আন্টিকে নিয়ে প্যাথলজি ভবনে নিয়ে আমার আর আন্টির ব্লাড টেস্ট করে দেখা গেল আন্টির এবং আমার ব্লাড ম্যাচ হয়েছে। ব্লাড দেয়ার জন্য আমরা আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করছিলাম কারণ আমার আগে আরো দুইজন ব্লাড ডোনার ব্লাড দেওয়ার জন্য রেডি ছিল। এই ফাঁকে আপু শাকিলকে নিয়ে বাহিরে গেল এবং আমার জন্য ডাব এবং জুস নিয়ে আসল। আন্টি বলল ব্লাড দেয়ার আগেই ডাব এবং জুস খেয়ে নিতে যাতে ব্লাড দেওয়ার পর শরীর দুর্বল না হয়ে যায়।

earth-4861456_640.jpg
Source

ডাব এবং জুস খাওয়ার পর আমি ব্লাড দিলাম । বেশি হাঁটার কারণে ধীরে ধীরে আন্টির শরীর খারাপ হতে থাকল আমি দৌড়ে গিয়ে আন্টির জন্য হুইলচেয়ার নিয়ে আসলাম। এরপর নার্স বলল ব্লাড দেয়ার জন্য ৪র্থ তলায় যেতে হবে কিন্তু লিফট নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা বুঝে উঠতে পারছিলাম না কিভাবে আন্টিকে নিয়ে ৪র্থ তলায় উঠব। কোন উপায় না পেয়ে আমি আর শাকিল হুইলচেয়ারের দুপাশে দুইজন ধরে ৪র্থ তলায় আন্টিকে উঠালাম। তারপর সব কাজ শেষ করে আন্টিকে এবং আপুকে রিকশায় তুলে দিয়ে আমি এবং শাকিল বাসায় ফিরে আসলাম। বাসায় ফিরে আপুকে কল করে বাসায় পৌঁছেছে কিনা এবং আন্টির শরীরের কি অবস্থা জিজ্ঞেস করলাম। সব মিলিয়ে দিনশেষে নিজের ব্লাড দেয়া স্বার্থক হয়েছে বলে মনে হয়েছে। আপু এবং আন্টি আমার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক ছিল তাইতো ব্লাড দেয়ার এক সপ্তাহ পর্যন্ত আমার খোঁজখবর নিয়েছে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

রক্ত দেওয়া খুব ভালো কাজ। আপনি রক্ত দেয়ার জন্য সবসময় আগ্রহী থাকেন এটা জেনে ভালো লাগলো। রক্ত দেওয়ার আগে ডাবের পানি জুস এসব খেয়ে নেওয়া ভালো। নাহলে আবার শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। রক্ত দেওয়ার পর আবার লিফ্ট নষ্ট হওয়ার জন্য আপনি আর আপনার বন্ধু আন্টিকে নিয়ে আবার চার তলায় উঠিয়েছেন যেন অবাক হলাম। আসলে হসপিটাল এর যেকোনো দরকারি জিনিস নষ্ট হলে সবাইকে অনেক বিড়ম্বনাই পরতে হয়। এদিকে হসপিটালে কর্তৃপক্ষদের ভালোভাবে নজর রাখা উচিত।

ঠিকই বলেছেন হসপিটালের কোন দরকারি জিনিস নষ্ট হলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

আপু পোস্টটি পড়ে আমার মনে হচ্ছে আপনার রক্ত দেওয়া আসলেই সার্থক হয়েছে। রক্ত দেওয়া খুব মহৎ একটি কাজ, এই রক্ত দেওয়ার মাধ্যমে যেমন আপনি নিজেও উপকৃত হচ্ছেন তেমন অন্যকেও উপকৃত করতে পারছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার রক্ত দেওয়ার ব্যাপারটি। শুভকামনা রইল আপনার জন্য এগিয়ে যান ভাইয়া ।এভাবে মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন 😊।

হ্যাঁ রক্ত দিলে দাতা এবং গ্ৰহীতা দুজনেই উপকৃত হয়।

আপনি রক্ত দিয়ে একটি মহৎ কাজ করেছেন। নিশ্চয় এই মহৎ কাজের জন্য আপনি প্রশংসার দাবিদার। আমাদের প্রতি তিন মাস পর পর রক্ত দেওয়া উচিত। আপনার পুরো পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনি রক্ত দিতে খুবই আগ্রহী জেনে খুশি হলাম। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। ভালো থাকবেন সব সময় ধন্যবাদ।

আমাদের সকলেরই রক্তদানে এগিয়ে আসা উচিত।