আমার জীবনের প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি। 10% for shy-fox and 5% for abb-school

in hive-129948 •  2 years ago 

আদাব - নমস্কার। আমি শান্ত চন্দ্র দাস। আমার ইউজার নেম @bloggershanto । আশা করি, আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্য খুব ভালো আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমার জীবনের প্রথম মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতি।তো চলুন শুরু করা যাক।

mobile-phone-ge1fb6fd84_1920.jpg
https://pixabay.com/photos/mobile-phone-nokia-old-broken-1253408/

আমি ছোটবেলা থেকেই মোবাইল টিপতে খুব পছন্দ করি। আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন আমার বাবার একটি নোকিয়া মোবাইল ছিল। বাবা সারাদিন ব্যবসার কাজে বাইরে থাকত এবং রাতে বাড়ি আসতো। বাবা আমাকে তার ফোন ধরতে দিত না কারণ আমি নাকি বাবার সেভ করা নাম্বার ডিলিট করে ফেলতাম। তাই বাবা যখন সকালবেলা স্নান করতে যেত তখন আমি বাবার ফোন নিয়ে টিপাটিপি শুরু করতাম আর দরজার ফাঁক দিয়ে খেয়াল রাখতাম কখন বাবা চলে আসে। তখন বাবার ফোনে ক্রিকেট আর ক্যারাম এই দুটি গেম ছিল।এই দুটি গেম কত যে খেলেছি তার কোন হিসাব নেই।
আমাদের বাড়িতে প্রথম যখন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় তখন অনেকেই এসে নিজেদের মোবাইল চার্জ দিত। মোবাইল চার্জে লাগানোর সাথে সাথে আমার টিপাটিপির পালা শুরু হতো। অনেকের মোবাইলে মেমোরি কার্ড থাকত আবার অনেকের মোবাইলে থাকতো না।যাদের ফোনে মেমোরি কার্ডে লক থাকতো অনেক চেষ্টা করতাম লক খোলার জন্য। মাঝে মাঝে গান শুনতে শুনতে মেমোরি কার্ড ফরমেট দিয়ে দিতাম। সেদিন আর আমাকে বাড়িতে খুঁজে পাওয়া যেত না।
যখন আস্তে আস্তে বড় হতে থাকি তখন দেখি বন্ধুরা ফেসবুক চালায়। বন্ধুরা বলতো ফেসবুকে তারা স্ট্যাটাস দেয়। আমি তখন চিন্তা করতাম আমার বন্ধুদের সবার স্ট্যাটাস আছে অথচ আমার স্ট্যাটাস নাই। তাই বাড়িতে ফোন কিনে দেওয়ার জন্য অনেক কান্নাকাটি করতাম। অভিমান করে অনেক না খেয়ে থেকেছি, অনেক স্কুল ফাঁকি দিয়েছি কিন্তু কাজ হয়নি। তাদের একটাই কথা এস.এস.সি. পাশ করার আগে কোন ভাবেই মোবাইল ফোন দিবে না।
যখন দশম শ্রেণীতে উঠলাম তখন কোচিং করার জন্য শহরে আসলাম। তখন তো আমার ফোন না থাকার কারণে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে আমায় ৭০০/৮০০ টাকা দিয়ে একটা সিম্ফনি বাটন ফোন কিনে দেয়। সেই ফোনে অনেক মজার মজার গেম ছিল এবং ইন্টারনেট ও ব্যাবহার করা যেত। বাসায় এসেই সবগুলো গেইম একবার করে খেলে নিলাম। তারপর অনেককেই বললাম ফেসবুক একাউন্ট খুলে দেয়ার জন্য কিন্তু কেউ খুলে দেয় নি। তারপর ২ টাকায় ৫ এমবি কিনে ফেসবুক খোলার জন্যে নিজেই চেষ্টা করলাম। অনেক চেষ্টার পর ফেসবুক একাউন্ট খুলে ছিলাম ।
ফোন কেনার পর প্রথম কলটা একজন স্পেসাল মানুষকে করেছিলাম। অনেক রাত পর্যন্ত গেম খেলতাম আর ফেসবুকে বন্ধু তৈরি করতাম।আজ ও মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বহু যুগ আগের ফোন দেখালেন দাদা। সত্যিই সেই সময়টা আমাদের খুব সুন্দর ছিল। স্মৃতিগুলো বেশ মধুর মনোরম ছিল। আজ সেই দিনগুলোতে নেই, তবে স্মৃতি থেকে গেছে।

সত্যিই আগের যুগের স্মৃতিগুলো আমাদের মন কেড়ে নেয়

আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে খুব চমৎকারভাবে আপনি শেয়ার করেছেন ‌‌। এত অসাধারণ পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

পুরো পোস্টটি সুন্দর ভাবে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

প্রথম মোবাইল ফোন পাওয়ার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। যদিও আপনার মত আমাকে মোবাইল ফোন দেবার জন্য কোন শর্ত দিয়েছিল না। তারপরও দেখছি আপনি শহরে ভর্তি হবার কারণে শর্ত পূরণ হবার আগেই মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে গেলেন। আর ওই সময়ের জনপ্রিয় গেম ছিল কেরাম।

মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আগের গেম গুলো যতই খেলতাম ততই ভালো লাগতো।