আসসালামু আলাইকুম
আশা করি সকলে ভালো আছেন । আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি । আজকে যে দ্বিপটি নিয়ে আলোচনা করব সেটার নাম হলো বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল । বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল যেটাকে শয়তানের দ্বিপ বলা হয় । পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরের এমন একটি জায়গা যার ভিতর দিয়ে কোন মানুষ, জাহাজ এবং প্লেনও যেতে পারে না । কেউ বিশ্বাস করে এটা এলিয়েনদের কাজ, কেউ বিশ্বাস করে এটা সামুদ্রিক দৈত্যের কাজ আবার কেউ বিশ্বাস করে এটা ভুতুড়ে কাজ । আজকে আমরা এক্সপ্লোর করব বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল কি আসলেই রহস্যজনক নাকি ভুয়া ।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে সর্বপ্রথম অদ্ভুত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস । ১৪৯২ সালে তিনি লিখেছিলেন যে তার জাহাজের নাবিকেরা এই অঞ্চলের দিগন্তে আলোর নাচানাচি দেখছে এবং তার কম্পাসও উল্টোপাল্টা দিকনির্দেশনা দিচ্ছে । কিন্তু এই ট্রায়াঙ্গেল সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে ১৯৪৫ সালে পাঁচটা টর্পেডো বোমারু বিমান একসাথে নিখোঁজ হওয়ার পর । এই বিমানগুলোকে উদ্ধার করতে যে বিমানকে পাঠানো হয় সেটাও ঐ অঞ্চলে এসে বিস্ফোরিত হয়ে যায় । মানুষ এই ঘটনাগুলোর কোন ব্যাখ্যা করতে পারে না এবং দুর্ভাগ্যবশত এই অঞ্চলে আরো দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে । এরপর থেকে টেলিকাইনেসিস, এলিয়েন স্পেসশিপ এই ধরনের সব অদ্ভুত থিওরি সামনে আসতে থাকে ।
এখন আসা যাক এগুলো কি আসলেই সত্য নাকি এগুলো গুজব । বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে সাইন্টিস্ট কার্ল ক্রুজেলনিক সম্পূর্ণ প্রমানের মাধ্যমে বলেন “বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল ঘিরে একমাত্র রহস্য হল এর সাথে শুরু করার মতো কোনও রহস্য ছিল না”। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নাবিকেরা যে আলোর নাচানাচি দেখেছিল সেটা হলো স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত নৌকায় রান্নার কাজে ব্যবহৃত আগুন । আর কম্পাসের সমস্যা দেখা দিচ্ছিল নক্ষত্রের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে । ১৯৪৫ সালে যে পাঁচটি বিমান নিখোঁজ হয়েছিল এটা সম্পূর্ণ মানুষের ত্রুটির কারণে এবং যে বিমানটা অনুসন্ধানের জন্য গিয়েছিল সেটা বিস্ফোরিত হয়েছিল সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল ডিফিকাল্টির জন্য । দ্যা ইনফোগ্রাফিক্স শো- তে এই ঘটনার বর্ণনা খুব সুন্দর ভাবে দেওয়া আছে । এইরকমই অন্যান্য ঘটনার ব্যাখ্যা মর্ডান সাইন্টিস্টরা দিয়েছেন । এবং মহাসাগরে প্রতিকুল আবহাওয়া খুবই নরমাল একটা বিষয়, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বড়সড়ো কোন বিষয় না । এবং বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল দিয়ে প্রতিনিয়ত জাহাজ যাতায়াত করে কোন প্রকারের সমস্যা ছাড়া । দ্যা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড শিপ এর তথ্য অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক দশটি দ্বীপের মধ্যে বারমুন্ডা ট্রায়াঙ্গেলের নাম নেই । বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের সত্য ব্যাখ্যা আসলে মহাসাগরে না এটার ব্যাখ্যা আমাদের মনে । আমাদের মন সবসময় অদ্ভুত অথবা স্মরণীয় ঘটনার দিকে বেশি আকর্ষণ জন্ম দেয় । আমরা অদ্ভুত জিনিস বেশি মনে রাখি, তাই একটা জাহাজ হারিকেনে ডুবে গেছে এটার থেকে জাহাজটা কোনো প্রকার ব্যাখ্যা ছাড়াই হারিয়ে গেছে এটা বেশি স্মরণীয় এবং আকর্ষণীয় । আর একবার যদি আমাদের চোখে কোন জিনিস স্ট্যান্ডার্ড করে তাহলে আমরা সেই জিনিসটার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া শুরু করি যেটাকে সহজ ভাষায় বলা হয় ফ্রিকোয়েন্সি ইল্যুশন । যেহেতু আমরা জিনিসটা বেশি লক্ষ করছি তখন আমাদের কাছে মনে হয় ঘটনাটা বারবার ঘটছে কিন্তু বাস্তবে আমরা শুধু নোটিশ বেশি করছি । ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে । আজ এই পর্যন্তই, দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টে ।
টুইটার
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit