লাইফ স্টাইল:- গুটিগুটি বৃষ্টিতে ছাদে শাক তোলার কিছু মুহূর্ত।

in hive-129948 •  4 months ago 

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷ সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।

আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আমার দৈনন্দিন জীবনের কিছু অংশ অর্থাৎ লাইফ স্টাইল। যেটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে করে থাকি। তবে সবসময় শেয়ার করা হয় না। তাই আজ ভাবলাম পোস্টের ভ্যারিয়েশনের কথা চিন্তা করে একটা লাইফ স্টাইল বিষয়ক কিছু শেয়ার করি।

IMG-20240708-WA0015.jpg

বিশেষত শ্বশুরবাড়িতে রেগুলার রান্না বান্নার ক্ষেত্রে আমাকে খুব কমই রান্না করতে হয়। তবে অন্যান্য যে সকল রান্নার রেসিপি তৈরি করতে হয় সেগুলোই আমিই করি।প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু করতে হয়। তবে সব সময় রেগুলার রান্না গুলো করা হয় না।তার একমাত্র কারণ হলো আমার ছেলে নিভৃত সব সময় রান্নাঘরে গিয়ে অনেক বেশি বিরক্ত করে। আর আমি যখন রান্নাঘরে রান্না করতে বসি তখন সে বারবার যাবে, আগুন ধরবে।একবার সে গরম তেলে হাত দিয়েছিল,তেল বেশি গরম ছিলনা বিধায় রেহাই পেলাম। সেজন্যই মূলত আমার শাশুড়ি নিজে রান্না করেন। তার কাজে টুকটাক হেল্প করি। তবে আমার যে রান্না গুলো থাকে, সেগুলো সব সময় আমি নিজে তৈরি করার চেষ্টা করি,তখন নিভৃতকে তার দাদু বা বাবা সামলায়।

IMG-20240708-WA0021.jpg

যাইহোক আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে এসেছি কিছুদিন হল। তবে এবার আসার পর থেকে মোটামুটি সব রান্নাবান্না আমিই করছি। কারণ নিভৃত তার দাদুর সাথে কিছুক্ষণ হলেও খেলা করে। আর এই সময়টায় আমি এই রান্নাবান্নার কাজকর্মগুলো সেরে ফেলি। তবে গতকাল হঠাৎ একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল। আমার ননদের ছেলে হঠাৎ করে পড়ে হাত ভেঙে ফেলেছে। এমন একটা অবস্থা হয়েছে, পরবর্তীতে প্লাস্টার করে আনতে হয়েছে। তাকে দেখে এসেছি বিকেলেই, আর আমার শাশুড়ি যেহেতু সেখানে গিয়েছে সে হিসেবে তিনি ওর কাছে রয়ে গিয়েছে। আজ সকালে আসার কথা ছিল কিন্তু আসেনি তাই আজকের রান্নাটাও করতে হবে।

IMG-20240708-WA0024.jpg

সকালে যখন নাস্তা করছিলাম তখন মূলত আমার হাজব্যন্ডকে জিজ্ঞেস করছিলাম আজকে কি রান্না করব। কালকের রান্না করা কিছু খাবারও রয়ে গেল। সে বলল আজকে তার পছন্দের পুঁইশাক খাবে, ডাল দিয়ে রান্না করার জন্য বলল।আসলে পুঁইশাক আমি তেমন একটা খেতাম না। এখানে আসার পর একটু পরিমাণে হলেও খাই। যাই হোক রান্না করতে তো আমার বরাবরই ভালো লাগে। আর সেজন্য নাস্তা করেই চলে গেলাম ছাদে।গিয়ে দেখি বাইরে গুটিগুটি বৃষ্টি পড়ছে।

IMG-20240708-WA0025.jpg

IMG-20240708-WA0018.jpg

মূলত টানা কয়েকদিন যাবত ধরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ছাদে পানি জমি আছে আর পুরোপুরি পিচ্ছিল হয়ে আছে। পরিষ্কার করার কোন সুযোগ হচ্ছে না। যাই হোক তবুও কোন রকমেই নিজের পায়ের উপর ভরসা করেই চলে গেলাম সবজি বাগানের কাছে। ছাদের উপরে পশ্চিম পাশে এক সাইডে বিভিন্ন রকম শাকসবজি লাগানো আছে। যদিও আমার হাজব্যান্ড নিজে কিছুটা সময় পেলে ছাদে অনেক কিছুই করে,গত ২ বছর যাবৎ করেছে অনেক কিছু। তবে এই বছর সে তেমন কিছুই করতে পারেনি। বাইরে কাজ বেশি থাকায়, ব্যস্ততা বেড়েছে। তাই শখের কাজ কম করা হয়। এজন্য কতগুলো টব খালি পড়ে আছে।

IMG-20240708-WA0017.jpg

IMG-20240708-WA0023.jpg

আমি যেহেতু পুঁইশাক নিতে গিয়েছিলাম তাই সরাসরি সেখানে চলে গেলাম। আমি সেখানে দেখলাম বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে পুঁইশাকের পাতাগুলোর মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে বসে আছে। আসলে এই মুহূর্তটা আমার বেশ ভালো লাগে। আর তখন পাতার মাঝখানে এটা টোকা দিলেই পানি গুলো ঝরে পড়ে যায়। তবে অবশ্য কচু পাতার মতো নয়। এই পাতাগুলোর মধ্যে পানি কিছুটা থেকেই যায়। যাই হোক এক এক করে আমি কয়েকটা ডালপালা এবং পাতা নিয়ে নিলাম। তারপর এদিক সেদিক একটু হাটাহাটি করলাম। ভয়েই ছিলাম যদি আবার পিছলে পড়ে যাই তখন কি হবে, এমনিতেই সবদিকে শুধু বিপদ আর বিপদ।

IMG-20240708-WA0011.jpg

IMG-20240708-WA0009.jpg

IMG-20240708-WA0008.jpg

যাইহোক ছাদের কিছু ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। এখানে দুটো লেবু গাছ আছে এগুলোতে বেশ কিছু লেবু ধরেছে। আমাদের ফ্যামিলিতে লেবু অনেক বেশি খাওয়া হয়,আমার তো প্রতিদিনই লাগে। এইতো বাজার থেকে গতকালই কতগুলো লেবু নিয়ে এসেছে। যাইহোক গাছের লেবু খেতে যতটা তৃপ্তি লাগে বাজার থেকে কেনা লেবুতে তেমন লাগেনা। তাছাড়া আরো কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। এই যে নিচে পাতাটা দেখছেন এটা হল বড় আলু বা মেটে আলুর পাতা। এগুলো অনেকটা পান পাতার মতো দেখতে হয়।

IMG-20240708-WA0001.jpg

যাইহোক, আজকের মতো এতোটুকুই ছিল। আশা করি আমার ছাদ বাগানে কাটানো মুহূর্তটা আপনাদের ভালো লেগেছে। আর অন্য কোনদিন আবারো দৈনন্দিন জীবনের বিস্তারিত কিছু নিয়ে চলে আসবো আপনাদের মাঝে।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

images (4).png

20221126_200743.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি আর আমাদের মাঝে অনেক আনন্দময় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন সত্য কথা বলতে বৃষ্টির দিনে যে কোন কাজ আমার অনেক বেশি ভালো লাগে আর আপনি গুটি গুটি বৃষ্টিতে ছাদে সার তোলার কিছু মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে এই মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে একদিন ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার মুহূর্তটা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পেরে ধন্যবাদ।

আসলে বৃষ্টিতে ভিজলেই আমার কিন্তু ঠান্ডা লেগে যায়।তাই বৃষ্টি আসার মুহূর্তে গিয়েছিলাম। তবুও গুটিগুটি বৃষ্টি পড়ছিল।

গুটি গুটি বৃষ্টিতে ছাদে শাক তোলার অনুভূতি আপনি আজকে শেয়ার করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লাগে। আসলে বৃষ্টিতে ভিজে কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলো করতে অনেক ভালো লাগে। আর আপনার পুঁইশাকের উপরে পানির ফোটা টা দেখতে আমার অনেক ভালো লেগেছে আসলে পুঁইশাকের ফটোগ্রাফিটা অনেক সুন্দর হয়েছে। সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলে আপু ছাদে যখন গিয়েছিলাম তখন দেখলাম গুটি গুটি বৃষ্টির কারণে প্রত্যেকটা পাতায় এত সুন্দর পানি জমে আছে। আমার নিজের কাছেও খুব ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ আপু।

বৃষ্টিতে শাক গুলো খুব তরতাজা হয়ে আছে।দেখতে খুব সুন্দর লাগছে ।আর নিজের গাছের শাক খাওয়ার মজাই আলাদা কেননা ফরমালিন মুক্ত।আপনি ছাদে বেশ কিছু গাছ লাগিয়েছেন।আর বৃষ্টির মধ্যে শাক তোলার সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

না আপু এই গাছগুলো আমি লাগাইনি আমার শাশুড়িমা লাগিয়েছে। যাইহোক মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনার ননদের ছেলের কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। আসলে কখন যে কার বিপদ হয় বলা যায় না। যাইহোক ছাদের গাছ থেকে শাক তোলার মুহূর্ত শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আমাদের বারান্দার গাছেও অনেক সুন্দর পুইশাক হয়েছে। কয়েকবার নিয়ে খেয়েছিলাম। নিজেদের গাছের জিনিস কম হলেও খেতে ভালো লাগে।

একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু। নিজেদের করা কোন কিছু যদি কমও হয় তবুও খেতে অনেক বেশি তৃপ্তি লাগে। এটাই অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।

আপনার ছাদ বাগানের কাটানো কিছু মুহুর্ত জেনে এবং ছবিগুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো আপু। আমার খুবই ভালো লাগে ছাদ বাগানের বিষয়টি। নিজের গাছের, নিজের ফলানো জিনিস খাওয়ার মজাই আলাদা, সেটা যাই হোক না কেন। আর পুই শাক এর পাতা গুলো কি সুন্দর, কোন দাগ নেই! বেশ ভালো লাগলো বড় বড় লেবু গুলো দেখেও।

আসলে আপু কিছু কিছু পাতা আরো বড় ছিল। যদিও সেগুলো তোলার সুযোগ হয়নি। কারণ সেগুলো লতানো গাছেই ছিল। যাইহোক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মন্তব্য ভাগ করে নেয়ার জন্য।

ভাইয়ার পছন্দের পুঁই শাক তুলতে ছাদ বাগানে গিয়ে চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। বৃষ্টি হওয়ায় শাক গুলো সতেজ লাগছে।আর নিজের হাতের লাগানো শাক খেতে একটু বেশীই স্বাদের হয়।বাচ্চা ছোট থাকলে মায়েরা সব কাজ আসলে করতে পারে না।বাচ্চা হাঁটতে শুরু করলে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। আপনার ননদের ছেলের হাত ভেঙ্গেছে শুনে খারাপ লাগলো আপু।আশাকরি সবকিছু একপাশে আর ছেলেকে অন্য পাশে খুব সাবধানে রাখবেন।ছেলে মাশাল্লাহ বড় হলে অনেক কাজ ই করতে পারবেন।ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

আসলে ননদের ছেলের হঠাৎ এ দুর্ঘটনা খুব খারাপ লেগেছিল। তাও আবার তার বাবা সেদিন বিদেশ চলে যাচ্ছে, যাওয়ার আগ মুহূর্তের ঘটনা। যাই হোক আল্লাহ যা করে হয়তো ভালোর জন্যই করে। ধন্যবাদ আপনাকে।

ছোট বাচ্চা নিয়ে রান্না করা কতটা কষ্ট সেটা আমি জানি আপু। আপনার ননদের ছেলের হাত ভেঙেছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। ছাদে দেখছি বেশ ভালোই পুঁইশাক হয়েছে। আপনার ব্লগটি পরে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু গুটি গুটি বৃষ্টিতে ছাদ থেকে টাটকা শাক তোলার মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।

এবার তো শাক-সবজি খুব বেশি নেই আপু। অন্যান্য বার অনেক রকমের শাকসবজি থাকতো।

ছাদ বাগান থেকে চমৎকার সুন্দর শাক খুলেছেন আপু। অনেক কিছুই দেখছি আপনার ছাতবাগানে হয়েছে। মেতে আলু আমার ভীষণ পছন্দের। আমি ডাল পছন্দ করি না কিন্তু পুঁইশাক দিয়ে ডাল রান্না করলে আমি খেয়ে থাকি বেশ মজা লাগে আমার কাছে। সবগুলো ফটোগ্রাফি অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

পুঁইশাক দিয়ে ডাল আপনার ভাইয়ের খুবই পছন্দের রেসিপি। সেজন্যই তো মাঝে মাঝেই সেইটার আবদার করে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু ভালো লাগলো মন্তব্য দেখে।