♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগএর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ কিছুটা ভালো আছি৷ সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট শুরু করছি।
অকৃতজ্ঞতা হলো একজন মানুষের সবচেয়ে বড় নির্বোধ প্রমাণ করার ধারাবাহিকতা।আজকে একদম ভিন্নভাবে আসলাম আপনাদের মাঝে।কারণ আমি আহত,ক্ষত-বিক্ষত হয়েছি এই শব্দটার সাথে প্রতিনিয়ত সাক্ষাৎ করে। ক্ষতবিক্ষত দীর্ঘশ্বাস প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করছি। হয়তবা ভাবছেন আমার প্রতি কেউ অকৃতজ্ঞ। একদমই ভুল ভাবছেন তাহলে।আমি কারো জন্য এমন কিছুও করি নাই যে আমি কৃতজ্ঞতা আশা করব।যাইহোক আসুন তাহলে আমার আজকের ব্লগটি উপভোগ করতে।যদিও জানি না কতটুকু উপভোগ করবেন।
একটা মানুষ প্রতিনিয়ত তার সর্বোচ্চটা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যার জন্য সর্বোচ্চ দিচ্ছে সে কতটুকু উপলব্ধি করছে বা তার প্রতিদান কি দিচ্ছে? হ্যাঁ, হয়তোবা আমরা কারো কাছ থেকে প্রতিদান আশা করাটা বোকামি। অন্যের উপকার করে যাওয়াটা এক ধরনের ভালো কাজের মধ্যেই পড়ে। তবে যখন দেখব সেই উপকার করার বিপরীতে কেউ উপকারকারীকে বাঁশ দিচ্ছে বা তার মনে আঘাত দিচ্ছে তখন কেমন টা লাগবে বলেন তো।
আসলে আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের দিকটাকেই আগে প্রাধান্য দিবে। কারণ এমন মানুষগুলো খুবই ভয়ঙ্কর মনে করি। তারা নিজেদেরকে সবচেয়ে বড় মনে করে। তারা অন্যের হাত ধরে এগিয়ে গিয়ে একটা অবস্থানে পৌঁছে যায়। কিন্তু তাদের কোনো কৃতজ্ঞতা বোধ থাকেনা। কিন্তু জনসম্মুখে তারা প্রমাণ করতে চায় তারাই সবচেয়ে বড় মানুষ, যারা নিজেকে একটি প্রতিষ্ঠিত পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। কিন্তু যার জন্য আজ সে স্বাবলম্বী, যার জন্য একটা খারাপ পথ থেকে ফিরে এসে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটা মনে রাখার মত মন নেই।
কিছুদিন আগে একটা ঘটনা শুনেছিলাম আমার এক মামার কাছে। উনি বলছিলেন তার সেই কষ্টের উপলব্ধির কথা। উনি এক ছাত্র পড়াতেন। ছাত্রটা যদিও মেধাবী ছিল কিন্তু সঙ্গদোষ এর কারণে সে খারাপ পথে হাটা শুরু করেছিল।যখন তার বাবা মা দেখল ছেলের এই অবনতি তখন তারা আমার সেই মামার কাছে আসল, যাতে তিনি ওকে ভালো পথে নিয়ে আসেন।আমার সেই মামার মধ্যে বেশ ভালো একটা গুণ আছে।তিনি কেমন জানি খুব সুন্দর করে যে কাউকে বুঝতে পারেন।ভালো মন্দ সবকিছু বুঝে শুনে কাজ করতে পারেন।যদিও তিনি শিক্ষকতা করেন না,কিন্তু ভালো স্টুডেন্ট ছিলেন।আর তার পছন্দমত কিছু ছাত্র পড়াতেন।তাও আবার ইচ্ছে হলে।
যাইহোক সেই ছাত্রের বাবা মায়ের আবদারে আমার মামা তাকে পড়াতে রাজি হলেন।শুরুর দিকেই তিনি সেই ছাত্রের সাথে বন্ধুত্ব করে নিয়েছেন। তারপর তিনি ধীরে ধীরে তার সাথে ভালোভাবে মিশে যান এবং তার খারাপ দিকগুলোকে ধীরে ধীরে তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে ফেলেন। অর্থাৎ পড়ালেখার পাশাপাশি তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেক বেশি ভালো হয়ে যায়। যেমনটা আগের মতই ছিল ছেলেটি। যাই হোক তারপর থেকে ভালোভাবে পড়ালেখা করেছে। আমার মামা মাস্টার্স কমপ্লিট করেছেন। আর সেই হিসেবে তিনি ছেলেটিকে ভালোভাবেই পড়াতেন। ছেলেটি যখন অনার্সে পড়ে কখনো মামা তাকে পড়িয়েছেন এবং ভালো একটা রেজাল্ট করে সে মামা যেখানে চাকরি করে সেখানেই একটা চাকরি পেয়েছেন।যদিও সেখানেও মামার অবদান ছিল।
একদিন সেখানে তাদের অফিসের একটা আনন্দানুষ্ঠানে তার অগ্রগতি এবং প্রচেষ্টা নিয়ে কথা বলতে বলা হলো। কিন্তু সেদিন সে তার পথপ্রদর্শক এর কথা বলেনি। যার কারণে আজ সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এত দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পেরেছে, তার একটা নির্দিষ্ট অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে, তার জীবন পরিবর্তন করতে পেরেছে, কিন্তু যথাসময়ে এসে সে তার কথাই স্মরণ করতে ভুলে গিয়েছে। কিন্তু তথাকথিতভাবে যে মানুষগুলো তার পাশে থাকে এবং তাকে সাধারণভাবে উৎসাহ দিচ্ছে বা কিছুটা সাহায্য করছে তারাই আজকে তার প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছে। এটাও শুনলাম সে তার এক কলিগ এর কারনে আর অনুপ্রেরণায় নাকি এতদূর এসেছে। তার জন্যই এখন সে অনেক কিছুই করতেছে।
কিন্তু এখানে আমার মামার এতোটুকু আশা ছিল যে অন্তত এই প্রচেষ্টার পিছনের গল্পে তার নামটা একবারের জন্য হলে উঠে আসবে বা তার স্মরণে থাকবে। কিন্তু সে ভুলেও তাকে স্মরণ করেনি। তখন আমার মামা খুবই কষ্ট পেয়েছেন এবং সেই কষ্টগুলো থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলেই সেগুলোকে ভুলতে চেষ্টা করছেন। নিজের জন্য নিজের জীবনকে বুঝতে শিখতেছেন।
আসলে এই গল্পটা থেকে শিক্ষা পেলাম কিছু মানুষ এমন আছে যে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করতে পারলে তার পিছনে কে কি অবদান রেখেছে তার কথা ভুলেই যায়।কিন্তু ঐ যে বললাম মামার সামনে সে দেখায় মামাকেই সে সবথেকে বেশি প্রাধান্য দেয়। কিন্তু যেখানে যখন প্রয়োজন সেখানে তাকে স্মরণ করার কথা মনে থাকে না। সে মনে করে তার নিজ প্রচেষ্টায় এসেছে। কিন্তু পথ দেখানো মানুষটাকে সে পাত্তাই দিল না। এমন অকৃতজ্ঞ মানুষগুলো সমাজের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর। কারণ তারা স্বার্থের জন্যই সবার সাথে মিশে এবং স্বার্থ উদ্ধার হলে নিজেকে গুটিয়ে নিতেও দ্বিধাবোধ করে না। অকৃতজ্ঞতা ও তাদের মধ্যে জন্ম নেয়।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
আপনার আজকের পোস্টটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। এরকম অকৃতজ্ঞ মানুষ আমাদের সমাজে অনেক রয়েছে। যাদেরকে নিচ থেকে উঠিয়ে উপরে তোলা হয়, আর যখন তারা উপরে উঠে তখন কে তাকে উপরে উঠতে সাহায্য করেছে তাঁকেই ভুলে যায়। আসলে উপকারীর উপকার স্বীকার করতে চায় না এরকম অকৃতজ্ঞ মানুষ সমাজের জন্য অনেক ভয়ঙ্কর, এর মাধ্যমে যে ব্যাক্তি সাহায্য করে তার মন-মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে কাউকে আর সাহায্য করার ইচ্ছা থাকে না। আসলে আপনার মামা এবং তার ছাত্রের গল্পটি পড়ে খুবই কষ্ট পেলাম, কারণ আপনার মামা ছাত্রটিকে নেশাগ্রস্ত থেকে উঠিয়ে এনে একটি ভালো ছাত্র বানিয়ে ভালো রেজাল্ট করাতে সাহায্য করেছে এবং তাকে সেই অফিসে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে,এতো বড় অবদান রেখেছে কিন্তু শেষমেশ সেই ছাত্রের জীবনের গল্পটা জানতে চাইল তখন আপনার মামা অবদানের কথাই বলল নয়। আসলে তখন আপনার মামা খুবই কষ্ট পেয়েছে। কারণ জন্য এত উপকার করল,কিন্তু বিনিময়ে কোন অর্থ নয় শুধু একটু সন্মানের সাথে তার নামটা বললে অনেক খুশি হতো, কিন্তু সে তার কোন অবদানের কথা বললো না,তাই আপনার মামা খুব কষ্ট পেয়েছে। সামান্য নামটুকু বলে তাকে সম্মান দেওয়া হল না। আসলে এরকম মানুষ অনেক রয়েছে আমাদের সমাজে। যাদের আমরা প্রতিনিয়ত সাহায্য করি কিন্তু শেষমেশ যখন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নামটা বললে খুশি হব, সেই জায়গাটায় আমরা তারা অবদানকে তুচ্ছ মনে করি। আমরা সে জায়গার নামটা বলি না আমরা কিভাবে এতো দুর এসেছি, বরং এটা বলে থাকি যে আমরা নিজের চেষ্টায় এসেছে,বা নিজের পরিশ্রমের এর মাধ্যমে এসেছি।কিন্তু আমাদের যে পথ দেখালো তাকে আমরা ভুলে যাই। আসলে খুবই কষ্ট পেলাম, প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজে এরকম উপকারী ব্যক্তিদের আমরাই ছোট করছি। তবে দিন শেষে একটা কথাই বলবো এরকম অকৃতজ্ঞ মানুষ বেশিদিন সমাজেটিকে থাকতে পারে না। যে আমাদের উপরে উঠেছে তাকে যখন ভুলে যাবো।তখন আমরা উপরে উঠতে নিজেকে টিকে রাখতে পারবো না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি অনেক কাছের একজন ব্যক্তি, যার কারণে আপনি বিষয়টি খুব চমৎকার ভাবে বুঝতে পেরেছেন।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন অকৃতজ্ঞ মানুষ আমাদের আশেপাশে অনেক আছে আপু। আমরা শুধু তাদেরকে সারা জীবন দিয়েই যাব কিন্তু তারা তা কখনো স্বীকার করবে না বরং আমাদের ক্ষতি করে বসে থাকবে। ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ একটি এই বিষয় আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য। স্বার্থপররা নিজের স্বার্থের জন্য যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কষ্ট করে আমার পোস্ট পড়ে উপলব্ধি করে, খুব চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন।আর আপমার মন্তব্যটি আমার অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে আপু এমন কিছু কিছু মানুষ আছে যারা তাদের শিকড়কে ভুলে যায়। যার মাধ্যমে তারা সফল হয়েছে তাদের নাম মুখে আনতে চাই না। তারা হলো অকৃতজ্ঞ। আপনার মামা হয়তো তার জন্য আর কোন ছাত্রের পিছনে শ্রম দিবে না। আপনার গল্প থেকে একটি শিক্ষা পেলাম। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, আসলে অনেক কষ্ট থেকে এ লেখাগুলো লিখেছিলাম। ধন্যবাদ বুঝে নেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তোমার কথা গুলোতো যথেষ্ট লজিক রয়েছে যদিও অনেক কষ্ট থেকে এই লেখাগুলো লিখেছো । তবে শিক্ষনীয় কিছু বিষয় রয়েছে তোমার এই লেখাগুলোতে। আর আমি আশা করছি যারা এই লেখাগুলো পড়বে তারা অনেক কিছু শিখতে পারবে। অনেক ধন্যবাদ সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ বিষয়বস্তু বুঝে যথাযথ একটি মন্তব্য করার জন্য। ভালো থেকো সবসময় এবং নিজের যত্ন নিবে এই কামনা করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তোমাকে ও অনেক ধন্যবাদ, সময় উপযোগী একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।ভালো থেকো তুমিও।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit