♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমার বাংলা ব্লগ এর প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের এই পোস্ট শুরু করলাম।
ব্যক্তিগত ভাবে @shuvo35 ভাইয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য।এই প্রতিযোগিতায় যে শুধুমাত্র অংশগ্রহণ করছি তা নয়,আমার কিছু স্মৃতিকে স্মরণ করছি।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২৪।ফেলে আসা জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি |
---|
বন্ধু তো অনেক থাকে,তবে নিজের মনের মত কয়জন হতে পারে?হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া।তবে আত্মিক বন্ধুত্ব যদি একটা হয় তাহলে আর বেশি কারো প্রয়োজন নেই।হ্যাঁ বন্ধুরা, আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার এক আত্মিক বন্ধুত্বের সামান্য কিছু স্মৃতি কথায় এবং ছবিতে শেয়ার করব।
বন্ধুত্ব মানে এমন একটি বন্ধন যেখানে বিশ্বাস,ভরসা, মান, অভিমান, রাগ সবকিছুই থাকবে। এটি এমন একটি সম্পর্ক যেখানে কোন মিথ্যা থাকবে না। যেখানে কোনো লুকোচুরি থাকবে না। জীবনের সব সুখ দুঃখ একে অপরের সাথে শেয়ার করে নিজেকে হালকা করার মাধ্যমই হল বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব শব্দে বয়স, সময় অথবা লিঙ্গ ভেদ নেই। সবার সাথে বন্ধুত্ব করা যায়। যদি সে মনের মত একজন মানুষ হয়। কখনো কখনো বন্ধুত্বে আত্মার মিল পাওয়া যায়। আবার কখনো বা একে অপরের একই গুণাবলীর কারণেও বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
আজকে আমি আমার ফেলে আসা জীবনে বন্ধুত্বের কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি। হয়তোবা বন্ধুত্ব শব্দটা আমরা প্রথম শুরু করি স্কুল জীবনের শুরু থেকেই,যখন আমরা স্কুলে ভর্তি হতাম। তখন হয়তোবা একেক জন একেকজনের সাথে বিভিন্নভাবে সময় কাটাতাম। সাধারণত ক্লাসমেট গুলো বা ক্লোজ যারা থাকে তাদেরকে বন্ধু বলে থাকি। সেখানে ছেলে মেয়ে উভয়ই বিদ্যমান। তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলতে আমার জীবনে একটাই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল এবং আছে। সেটি আমার কলেজ জীবনে হয়েছে। আর আমার সেই বন্ধু হলো একটি মেয়ে। আমাদের মাঝে যে বন্ধন তা এখনো বিদ্যমান। যদিও আমরা এখন অনেক দূরে। দুজনের সাথে অনেকদিন ধরেই দেখা হয় না,কথাও কম হয় ব্যস্ততার কারনে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে দুজনে আগের মত সময় কাটাই কিন্তু পরিস্থিতি বাধা দেয়।
সত্যি বলতে আমি এই পোস্ট লিখতে লিখতে ওকে খুব মিস করছি।এক এক করে মনে পড়ে যাচ্ছে আমাদের কাটানো মুহূর্তগুলো।
আমি যখন প্রথম কলেজে ভর্তি হই তখন আমি কারো সাথেই তেমন একটা কথা বলতাম না। বিশেষ করে আমার সাথে যখন কেউ এসে কথা বলত তখন বলতাম।আমার নিজ থেকে কথা বলতে কেমন যেন লজ্জা লাগতো।তবে মাঝে মধ্যে কারো সাথে ফরমাল ব্যাপারে কথা বলতাম। তখন পর্যন্ত তেমন কেউ তৈরি হয়নি।
কিন্তু ধীরে ধীরে যখন আমরা ক্লাস করতে থাকলাম তখন কয়েকজন বন্ধু হয়ে যায়। আমার বন্ধুর সংখ্যা ৮ জন। তবে আমার স্মৃতি মাখা বন্ধুত্ব একজনের সাথেই তৈরি হয়। যার সাথে আমি আমার সকল সুখ দুঃখ, জীবনের কষ্ট গুলো ভাগ করে নিতে পেরেছিলাম এবং এখনো পারি। আমার সেই প্রিয় মানুষটির নাম হল ইরা। যে আমার কলেজ লাইফে বেস্ট ফ্রেন্ড। আর তার সাথেই আমার অনেক স্মৃতিময় মুহূর্ত রয়েছে। বাকিদের সাথেও মুহূর্তগুলো খুবই দারুণ। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সাথে এই একজনের স্মৃতির মুহূর্তগুলো তুলে ধরতে চাই। কারণ সবার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো বা বন্ধুত্বের স্মৃতি যেগুলো ছিল সেগুলো তুলে ধরলে হয়তো বা শেষ হবে না কখনোই। কথা দিয়ে একটা অধ্যায় শেষ করা যায় কিন্তু বন্ধুত্বের স্মৃতিগুলো কখনো শেষ করা যাবে না।
মূলত ইরার সাথে পরিচিত হই অন্য একজন ফ্রেন্ডের মাধ্যমে। মজার বিষয় হলো আমরা দুজন নাকি একই রকম দেখতে। মনে হয় যেন যমজ বোনের মত। যদিও আমার মনে হয়না কিন্তু এই ব্যাপারটা আমার প্রিয় শিক্ষক, আমার ফ্রেন্ডরা এবং অন্য লোকেরাও বলতো। মাঝে মাঝে আমরা যখন একসাথে হাঁটতাম তখন জিজ্ঞেস করতো তোমরা কি যমজ বোন? আমাদের বন্ধুত্বের শুরুটা খুবই সাধারণ ছিল। ধীরে ধীরে আমাদের একে অপরের সাথে খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়।
একেক জন একেকজনের জন্য সব সময় অপেক্ষা করতাম। যেহেতু আমরা দুই রাস্তার মানুষ অর্থাৎ ওর বাড়ি একদিকে আর আমার বাড়ি বিপরীত দিকে।সেজন্য আমরা দুজনই এক পয়েন্টে এসে অপেক্ষা করতাম।প্রাইভেট অথবা কলেজে যাওয়ার সময় একে অপরের জন্য অপেক্ষা করতাম এক পয়েন্টে।আমার সেই ফ্রেন্ডের সাথে আমি অনেক জায়গায় গিয়েছি।আমাদের পারিবারিক দিক থেকেও খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল।বিশেষ করে ওর আম্মুর সাথে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়।ওরা তিন বোন কিন্তু ভাই নেই।আর তাও আন্টি আমায় খুব আদর করতেন।
ঐ যে বললাম বন্ধুত্বে বিশ্বাসের কথা।আমরা একে অপরের সাথে যেকোনো বিষয় শেয়ার করতাম।ওর আম্মুর বিশ্বাস ওর থেকেও আমার ওপর বেশি ছিল।তা কেন বলছি?....
ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারের শেষের দিকে আমরা প্রাইভেট থেকে একটা পিকনিকের আয়োজন করি।যদিও আমার আব্বু আমাকে যেতে নিষেধ করেছিল প্রথমে, কারণ ফ্যামিলির কেউ যাবে না শুধুমাত্র প্রাইভেট শিক্ষার্থী আর ম্যাম এর ফ্যামিলি যাবে।কিন্তু ইরার ব্যাপারে ওর আব্বু আম্মু বলেছে যদি আমি যাই তাহলে তারা ইরাকে যেতে দিবে।আর ইরা কিন্তু আমাকে ছাড়া যাবেও না।আমি গেলে ও যাবে আর আমি না গেলে ও যাবে না।আর এইদিকে আমরা ২ জন না গেলে পিকনিক ক্যান্সেল করে দেয়া হবে ম্যাম এর আদেশ।যাইহোক কোনোমতে ভাইয়াকে ম্যাম বুঝিয়ে আব্বুকে ম্যানেজ করে পিকনিকে যাওয়ার আগের দিন আমরা সবকিছু ঠিক করলাম।যাওয়া আসার পথে আমরা একসাথে,সব যায়গায় একসাথেই ছিলাম।
কলেজে একটা মেয়ে আমাকে খুব ফলো করত।কেন জানিনা সে চাইতো আমার পাশে বসতে,পড়ালেখার বিষয়ে আমার সাথে ডিসকাস করতে।কিন্তু ইরা এবং আমার বাকি ফ্রেন্ডরা এটা মোটেও সহ্য করতে পারতো না।যদি দেখতো মেয়েটা আসেপাশে আসতে চাচ্ছে তখন সবাই ওকে যেকোনোভাবে সরিয়ে দিত।তারা চাইতো না আমাদের ফ্রেন্ডশিপে অন্য কেউ আসুক।এভাবেই দীর্ঘ ২বছর পার হলো।
সর্বপ্রথম ওরা আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমার সকল ফ্রেন্ডরা আমাদের বাড়িতে এসেছিল। এরপর আমি ওদের বাড়িতে যাই তাদের বাড়ির আশেপাশে জায়গাগুলো খুবই সুন্দর। আসলে মুহূর্তগুলো বলে হয়তো বোঝানো যাবে না। কিন্তু কিছু কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি আশা করি এগুলো দেখেই হয়তো বুঝবেন। ছবিতেই স্মৃতিগুলো রেখে দিলাম। আমাদের আসা যাওয়া ছিল,বিশ্বাস ভরসা এখনো আছে।
আমার মনে আছে,ওর ফোনের সবকিছু আমাকে করতে হয়েছে।কারণ সে আগে থেকেই কোনো মোবাইল ব্যবহার করত না।তারপর সোস্যাল মিডিয়াগুলো ওপেন করে দিলাম।ফেসবুক খুলেছি জিমেইল দিয়ে,সব পাসওয়ার্ড আমার মনে আছে কিন্তু ও ভুলে যায়।যখন কোনো দরকার হয় আমাকে কল করে জিজ্ঞেস করে নিতো পাসওয়ার্ড নিতো।মানে সব পার্সোনাল বিষয়ে আমার উপর ডিপেন্ড করত।আর আমার বিশ্বাস ওর উপর খুব বেশি ছিল।আমার জীবনের কিছু খারাপ সময়ের কথাও সে জানে।ওভারঅল ও আমার আত্মার বন্ধু।
আমার বিয়েতে সে খুবই খুশি ছিল।প্রতিটা মুহূর্ত এনজয় করেছে।আমার পাশে পাশে ছিল সবসময়।তবে আমার আর তার একটাই বিশ্বাস ছিল দুজন আগের মতই থাকবো।হয়তোবা দেখা কম হবে।বিয়ের স্টেজেও সে আমাকে নিজ হাতে উঠিয়ে দিচ্ছে।বিদায়ের আগ পর্যন্ত সে আমার পাশে থেকে সরেনি।হয়তোবা বেশিক্ষণ সময় আর পাশে দেখতে পারবে না তাই।
এইতো অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তির পর আমি ক্লাস করতে পারি নি প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকটায়।মাঝখানে একদিন কলজে যাব আমার রেজিস্ট্রেশন এর জন্য।তখন আমি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে মেসেজ দিলাম আমি কলেজে যাব,ইরাও সাথে সাথে ডিরেক্ট মেসেজ,কখন যাব,কতক্ষণ থাকবো,কোনো সমস্যা হবে কিনা।আমায় নিয়ে রীতিমত ব্যস্ত হয়ে যায়।আমি কলেজে যাওয়ার আগেই ও হাজির হয়ে যায়।আমি তো এতদিন পর দেখতে পেরে খুবই খুশি। এরপরে বাকিরাও এলো। তারপর কাজ সেরে সবাই এক জায়গায়, ওরা ফুসকা খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে আর আমাকে তো সে ছাড়তে নারাজ।ছবিতে হয়ত দেখতে পাচ্ছেন সে আমাকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।পুরোটা সময় আমার হাত ধরে রেখেছিল।আসার সময়ও রিকসায় উঠিয়ে দিয়ে বলল সাবধানে যাবি গিয়ে কল করবি।এই কেয়ারিং ব্যাপারটা আমার অনেক ভালো লাগে।
আমার মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে ওর সাথে আগের মত সময় কাটাই কিন্তু তা আর পারা হয়ে উঠে না।ও যদিও এখনো সিঙ্গেল কিন্তু আমি তো চাইলেই আর বেরোতে পারি না।কারণ নিভৃতকে ছাড়া তো একা বাইরে যাওয়া এখন সম্ভবই হয় না।তবে কথা হয় মাঝে মাঝে।সেই কথার মাঝেই যেন আগের কাটানো সময়গুলোতে ঘুরে আসি।ওর যেকোনো সমস্যা হলেই আমাকে জানায়।আমরা ২জনই খুব মিস করি একে অপরকে।আমাদের এই বন্ধন আরও দৃঢ় হোক,এই প্রার্থনা করবেন।
খুবই সামান্য কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।২০১৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত আমাদের সম্পর্কটা অটুট রয়েছে।এই পর্যন্ত তো হাজারো স্মৃতি মনে কোণে জমা হয়ে গিয়েছে।তবে এতটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://twitter.com/bristy110/status/1580430372755865601?s=20&t=Y3uRQVKtFsshOno8OkL4Rw
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit