গত কয়েকদিন বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা অংশ।

in hive-129948 •  6 months ago 

♥️আসসালামুআলাইকুম♥️

আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।

biking-5680458_1280.jpg

source

আলহামদুলিল্লাহ সবদিকের অবস্থা এখন উন্নতি হয়েছে। আমাদের ঘরের একদম সিড়ির কাছেই পানি চলে এসেছিল। আর একটু উপরে উঠলেই সিড়ির উপরে চলে আসতো।আসলে প্রথমদিক থেকেই আমাদের বাড়িতে পানি খুব বেশি আসেনি।ধীরে ধীরে পানি বাড়ছিল আবার কমছিল।মূলত বৃষ্টি হওয়ার কারণেই পানি বেশি বেড়ে গিয়েছিল।শেষ যেদিন পানি বেড়েছিল সেদিন তো বৃষ্টি ছিল না। তবুও পানি ধীরে ধীরে বাড়ছিল।

যাইহোক মনের মাঝে আতঙ্ক ছিল। যেহেতু ছোট বাচ্চা ছিল তাই চিন্তা একটু বেশিই ছিল। আমাদের এলাকায় আমাদের বাড়িতে কারো ঘরে পানি ঢুকেনি। কিন্তু চারপাশের সবার ঘরে ঘরে পানি।কেউ আমাদের বাড়ির স্থানীয় মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছিল। আবার কেউ বাজারের দিকে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিল।যাইহোক আমরা ভেবেছিলাম পানি খুব বেশি বেড়ে যাবে। যেদিন রাতে ফেনী,কুমিল্লা বা তার আশেপাশের এলাকায় প্লাবিত হয়েছে তার পরদিন সকাল সকাল আমরা বাসার জন্য খোঁজ করছিলাম।

কিন্তু নিয়তির কি খেলা রাতে রাতেই সব বুকড হয়ে গিয়েছিল। কোথাও কোনো বাসা খালি নেই। মূলত দাগনভূঞা বাজারের আশেপাশের যে জায়গাগুলো ছিল তারা রাতের মধ্যেই বাসায় চলে গিয়েছিল।কারণ পানি যদি অন্যান্য দিকের মত এদিকেই চলে আসে তখন কি হবে। যাইহোক অনেক খোঁজাখুঁজির পরও
কোথাও পাইনি। তারপর কি আর করার যেহেতু পানি ধীরে ধীরে বাড়ছিল তাই বাড়িতেই রয়ে গেলাম।

এদিকে শ্বশুরবাড়িতেও সবাই নিরাপদে ছিল।বাড়ির সামনে পানি উঠেছিল,কারো ঘরে ঢুকেনি। আর সেখানেও কিছু মানুষ এসেছিল আমাদের রিলেটিভ। যদিও সেখানে বেশ কিছুদিন কারেন্ট একদমই ছিল না।আমাদের এখানে ২দিন পর এসেছিল। তবুও অনেকবার আসছিল আর যাচ্ছিল।যাইহোক এভাবে আতঙ্কে কাটলো গত ৭দিন। কত মানসিক অস্থিরতা কাজ করছিল সেটা আমরাই জানি।

এই ছিল সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি।আর এই বন্যাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু লোকের আসল রূপ দেখা গেল। মোমবাতি তখন ছিল একদম আবশ্যক একটা জিনিস।আর এটা কিনতে গিয়েও গুনতে হয়েছিল অত্যাধিক টাকা।অনেকের ঘরে ঘরে পানি।কেউ কেউ রান্নাঘরে যেতে পারতো না,তার কোনোমতে সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না করত।সেখানেও সিন্ডিকেট। কোথাও গ্যাস নেই,তাই দাম ৪০০০ টাকা। এভাবে অনেক লোক তাদের আসল চেহারা দেখিয়েছে।

সবকিছু থাকা স্বত্বেও তারা কাস্টমারকে বলে নেই। এমনও হয়েছে গো-ডাউনে সিলিন্ডার ভর্তি,কিন্তু দোকানদার বলে একটাও নেই।পরে জোর করে তল্লাসি করে ছাত্ররা সেখানে দেখে সিলিন্ডার ভর্তি।বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক।মানুষ হয়তো আগের অবস্থানে ফিরবে। কিন্তু এই পরিচিত মুখগুলো কি তারা ভুলে যাবে? কে কেমন আচরণ করেছিল তা কি সবাই ভুলে যাবে। মানুষ বিপদে হাত পাতে স্বভাবে নয়। আর বিপদের সময়ই আসল রূপ দেখা যায়।

যাইহোক আল্লাহর অশেষ রহমত আর আপনাদের সকলের দোয়ায় আমরা ভালো ছিলাম আছি।আপনাদের মাঝে আজ সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা অংশ তুলে ধরতে পেরে খুব ভালো লাগলো।

সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

♥️আল্লাহ হাফেজ♥️

images (4).png

20221126_200743.jpg

আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

images (4).png

💦

💦 BRISTY 💦

💦

animasi-bergerak-terima-kasih-0078.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে সময় উপযোগী একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনাদের এলাকার বন্যা পরিস্থিতির খবর শুনে সত্যি আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছে। আপনাদের এলাকায় দুইদিন কারেন্ট ছিল না আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আসলে এই পরিস্থিতিতে কিছু লোক সুযোগের ব্যবহার করেছে এবং সবকিছু জিনিসের দাম অনেক বেশি নিয়েছি জানতে পেরে সত্যি বেশ খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ পোস্টটি লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আসলে বন্যায় সময় মানুষ অনেক বেশি খারাপ পরিস্থিতিতে ছিল। সেগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে পেরেছি এটাই অনেক ভাগ্যের বিষয়।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

আপু আপনার পোস্ট দেখে খুবই ভালো লাগলো। তাছাড়া আপনার পোস্ট পড়ে বন্যার পরিস্থিতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে এই ভয়াবহ দৃশ্যে ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক। আরো একটা ভয় ছিল সেটা হচ্ছে আপনার ছোট ছেলেকে নিয়ে। কেননা আপনাদের আশেপাশে বাড়ি ডুবে গিয়েছে যদি আপনাদের বাড়িতে এখনো পানি আসেনি। তাই যতটা সম্ভব সাবধানে থাকবেন। আর আপনাদের ওইখানে বন্যার কারণে অনেকেই মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছে এমনকি আপনাদের বাড়িতে অনেকে রিলেটিভ তারা আশ্রয় নিয়েছে। বিষয়টা খুবই ভালো লাগলো। কেননা মানুষ মানুষের জন্য। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু পোস্টটি খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখে শেয়ার করার জন্য।

জি ভাইয়া,বিপদে সবাই সবার পাশে দাঁড়ানো উচিত।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

দেশের অনেকটা জেলার মানুষ কঠিন মুহূর্ত পার করলো এই বন্যার কারণে। এমন মুহূর্তে সত্যি নিজেকে কন্ট্রোলে রাখা বা নিজের পরিবারকে ধারণ পোষণ করানো বেশ কঠিন। আপনাদের মাধ্যমে আপনাদের অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আল্লাহ যেন সবাইকে হেফাজত করে এমন দুর্যোগ থেকে।

জি আপু,অনেক কিছু এই বন্যায় ধ্বংস হয়েছে, যার কোনো ক্ষতিপূরণ নেই।

বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝতে পারছি আপু। আপনারা যেহেতু এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন তাই হয়তো আরও কাছ থেকে বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। তবে আমরা সব সময় প্রার্থনা করবো এরকম বিপদে যেন কেউ না পরে।

জি ভাইয়া,খুব বাজে পরিস্থিতি ছিল আমাদের ফেনী জেলাতে।