♥️আসসালামুআলাইকুম♥️
আমি @bristy1, আমার বাংলা ব্লগ এর একজন সদস্য। আর আমার এই প্রিয় কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি৷সবার সুস্থতা কামনা করেই আজকের পোস্টটি শুরু করতে যাচ্ছি।
source
আজ আপনাদের মাঝে আমার শৈশবস্মৃতির একটা মুহূর্ত শেয়ার করব।আসলে শৈশব আমাদের সবার জীবনের একটা গোল্ডেন টাইম ছিল।সে সময় ছিল না কোনো চিন্তা,কোনো দায়িত্ব বা কোনো চাপ।আর সেই সময়টায় আমরা সবাই চাইতাম কবে বড় হবো,কবে বড় হয়ে আরও বেশি মজা করব। কিন্তু তখন আমাদের কারোর চিন্তা ছিল না যে বড় হওয়া মানেই কাঁধে দায়িত্ব নেয়া।যাইহোক আজ একটা মজার এবং মজার মাঝেই দুঃখের কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।
সময়টা ছিল নভেম্বর মাস,আমি ক্লাস ফাইভের ফাইনাল এক্সাম দিয়েছি। তবে আমার আবার ছোটবেলা কেটেছে বেশিরভাগই নানার বাড়িতে।আমি আমার নানার পরিবারের সবচেয়ে বড় নাতনি ছিলাম।আমার আম্মু যেহেতু সবার বড় তাই আমার মামা আর খালামনিরা ছোট ছিল।এমনকি আমার ছোট ছোট দুইটা আন্টিও আছে।যাইহোক সেই সুবাধে আমার থাকাটা হতো নানুর বাড়িতে।তবুও সেই বছর পড়ালেখার জন্য যাওয়া হতো কম।
প্রতি বৃহঃস্পতিবার আমার মন অনেক বেশি খুশি থাকতো। আর প্রতি শনিবার সকালবেলা আমার মন খুব খারাপ থাকতো। এর কারণ হলো প্রতি বৃহস্পতিবারে আমার মেজো মামা সাইকেল নিয়ে চলে আসতো আমাকে নানুর বাড়িতে নেওয়ার জন্য। আর প্রতি শনিবারে আবার সাইকেল নিয়ে স্কুলে দিয়ে যেত। নানার বাড়ি খুব বেশি কাছে ছিল না তবুও মামা আমাকে এসে নিয়ে যেত আবার দিয়ে যেত।এটা তার একটা ডিউটি ছিল। এর কারণ হলো তারা চায় আমরা সেখানেই থাকি। এমনকি আমার নানু বলেছিল আমি যেন সেখানে ভর্তি হই, সেখানে পড়ালেখা করি। কিন্তু আমার আব্বু আমাদের এলাকার একটা কেজি স্কুলে আমাকে ভর্তি করিয়েছিল।
যাইহোক আমার মামা সব সময় আমাকে যাওয়ার সময় আইসক্রিম কিনে দিত। আমি ছোটবেলা থেকে আইসক্রিম প্রেমি হয়ে উঠেছি,এমন কোনো আইস্ক্রিম ছিল না যা আমার খাওয়া হয়নি। তবে ফাইনাল এক্সামের সময় কয়েক মাস আর নানু বাড়িতে যাওয়া হয়নি। কারণ প্রত্যেকদিন প্রাইভেট ছিল। আর সেই জন্যই স্যার আমাকে কোথাও যেতে নিষেধ করেছে। বাড়ি থেকে পড়াশোনা করার জন্য বলেছিল। যাই হোক অবশেষে পরীক্ষার শেষ দিন। যখন পরীক্ষা শেষ হল শেষের দিনে আমার মামা এসে হাজির আমার আগেই।
তখন আমি ঘরে ঢুকে মামাকে দেখেই দৌড়ে চলে গেলাম জামা কাপড় গোছানোর জন্য। এদিকে আমার আম্মু আমাকে জিজ্ঞেস করতে ছিল আমি পরীক্ষায় কি দিয়েছি,কেমন হয়েছে। তখন আমার মামা বলতেছিল যা দিয়েছে তা শেষ।এ নিয়ে এখন আর টেনশন করে কি লাভ। যেটা হবে পরে দেখা যাবে। তুই চল আমার সাথে এই কথা বলেই মামা আমাকে রেডি হতে বলল। আর আমি তো ঝটফট রেডি হয়ে গেলাম কারণ আমাকে নানুর বাড়ি যেতে হবে। সেখানে আমার কত যে খেলার প্ল্যান আছে,আর আমার সঙ্গীরা অপেক্ষা করছে।
যাই হোক আমি সেদিন মামার সাথে নানার বাড়িতে চলে গেলাম এবং তার কয়েকদিন পরে কিন্তু আমার আম্মু গিয়েছিল। যাই হোক দেখতে দেখতে দিন পার হয়ে গেল এবং সময় এলো পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার। আমার থেকে আমার আব্বু আম্মুর চিন্তাই বেশি। প্রতিদিন বিকেলে আমাদের একটা খেলা হতো সেটা নিয়ে মূলত দুঃখের কাহিনী রয়েছে। সেটা আপনাদের মাঝে পরেই শেয়ার করব। এদিকে আমার আম্মু আমাকে বকা দিতেছে আজ পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে তার কোন খবর নেই সে শুধু সারাদিন খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত।
আর আমাকে সাপোর্ট করার জন্য আমার মামা খালারা তো আছেই। তারা বলল ফেল তো আর করবে না যা হওয়ার হবে মিষ্টি খাবই খাব, ফেল করলেও মিষ্টি খাব।আর আমার সাঙ্গ পাঙ্গ যেহেতু বেশি সেই হিসেবে আমার আনন্দটা একটু বেশি ছিল। এই বলে আবার দৌড় দিলাম খেলায়। এদিকে আমার আম্মু আব্বুই ব্যস্ত পরীক্ষার রেজাল্টের জন্য।যাক তারা অপেক্ষা করছে আর স্যারকে কল দিচ্ছে রেজাল্টের জন্য।
অবশেষে দুপুরের দিকে খবর এলো পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। আর ২পয়েন্টের জন্য এ প্লাস মিস করে গিয়েছিলাম। তবে সেই সময় আমাদের ইংরেজি এবং অংক পরীক্ষাটা খুব বেশি হার্ড হয়েছিল। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম হয়তো সেখানে অনেক কম নাম্বার পাব। তবুও অনেক ভালই পেয়েছি, এটা দেখেই তো আমি খুশি,আমার আর কি লাগে। সেই সাথে আম্মু আমাকে বকতেছে আমি ভালো রেজাল্ট করলে কি করতাম আল্লাহ-ই জানে। এখন আমি বললাম আমি তোর খারাপ রেজাল্ট করিনি ফেলও করিনি আমি তো ভালোই পেয়েছি। শুধুমাত্র দুই পয়েন্টের ব্যবধানে এ প্লাস পাইনি।
তখন সবাই আমার আম্মুকে বকতেছিল যে এত বকাবকির কি আছে। যা হয়েছে, হয়েছে ছোট মানুষ,হাহাহা। পড়ালেখা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা যতটা না ছিল তার থেকে বেশি মাথাব্যথা ছিল আমার আম্মু আব্বুর। যাইহোক পরবর্তীতে বিকেলবেলা ঘটে আরেকটা ঘটনা,যেটা আসলেই আমার জন্য দুঃখের এবং ভোগান্তির ছিল। সেটা নিয়ে আপনাদের মাঝে আরেক দিন চলে আসবো আজকের মতো এতোটুকুই।
সবাই অনেক অনেক ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সবার জন্য আন্তরিক ভালোবাসা রইল। সম্পূর্ণ পোস্টে আমার ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। |
---|
♥️আল্লাহ হাফেজ♥️ |
---|
আমি তাহমিনা আক্তার বৃষ্টি। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাংলায় কথা বলি,আমি বাংলায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি নিজের মত করে সবকিছু করার চেষ্টা করি। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি আমি বিভিন্ন জিনিস আঁকতে পছন্দ করি। বিভিন্ন ধরনের ছবি আঁকা, রঙ করা, নতুন নতুন কিছু তৈরি করা আমার পছন্দের কাজ। তবে রান্নাবান্না আমার ভালোলাগা, চেষ্টা করি সবসময় নিজে নতুনভাবে কিছু রান্না করার। ভ্রমণপ্রেমীদের মত আমিও ঘুরতে পছন্দ করি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই ছোটবেলার সময়টা যেন সকলের জন্যই ব্লেসিংস একটা সময়৷ অথচ তখন আমরা ভাবতাম কবে বড় হবো!! আর এমনিতেও পড়াশুনা নিয়ে সকল স্টুডেন্ট দের থেকে তাদের বাবা-মায়েদেরই চিন্তা অনেক বেশি থাকে সবসময়ই। আর রেজাল্ট দিয়ে তাদের খুশি করাটাও বেশ কঠিন ই বিষয়!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনি অসাধারণ একটা ছোটবেলার স্মৃতি শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। আসলে সত্যি বলতে ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো এখন অনেক বেশি মিস করি। মাঝেমধ্যে স্মরণ হলে আবেগপ্রবণ হয়ে যাই। সবাই মিলে একসাথে খেলাধুলা করার মজাটাই ছিল তখন আলাদা। আর নানার বাড়ি মানে তো ছিল মুক্ত একটা জীবন। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব বেশি ভালো লাগলো আমার। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এত সুন্দর স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই আমাদের ছোট বেলার সময়টা অনেক মজার ছিলো। তখন শুধু ভাবতাম কবে বড় হয়ে উৎবো। যদি তখন জানতে পারতাম বড়ে হলে এতো দায়িত্ব কাঁধে এসে পরবে। তাহলে কখনোই বড় হতে চাইতাম না। আপনার পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit