হ্যালো
আমার বাংলা ব্লগ বাসী সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব। আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন? ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমি পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।
প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের সংক্রান্তিতে মা মনসার পূজা করা হয়।সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে,সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে,প্রজনন ও ঐস্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তার পূজা করা হয়।মনসা ঘট
স্থাপন করে পূজা করা হয়।মনসা নাগরাজ সর্পরাজ
বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরুৎকারুর স্ত্রী। তার অন্য নামগুলো হলো মাবিষহরী,বিষধংসকারিণী,নিত্যা
চিরন্তনী, ও পদ্মাবতী।
আমাদের এলাকায় বাবাজী বাড়ি নামে এক বাড়িতে খুব ধুমধামের সহিত প্রতি বছর মা মনসার পূজা করা হয়।আমার বিয়ের পর থেকে প্রতিবছর এই বাড়িতে পুজার উপোস থাকি আর যদি নিজের এলাকায় থাকি তাহলে অবশ্যই উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি।
আমি প্রথম যেবার এই পূজা দেখতে এসেছিলাম আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিল। দুইবার পূজায় ছিলাম, ঢাকায় থাকার কারনে প্রতিবার পূজা দেখা হয়নি কিন্তু উপোস সবসময়ই করি, গতবছর পূজার আগে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়ে তাই চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হয় তাই পূজায় থাকতে পারিনি খুব খারাপ লেগেছিল। এই বছর আগে থেকেই মনস্থির করে রেখেছিলাম পূজার সময় কোথাও যাবো না যেহেতু এখন নিজের এলাকায় আছি তাই এবারের পূজা মিস করতে চাই না। কয়দিন আগেই মায়ের পূজার নামে প্রণামি দিয়ে এসেছি। এখানে যে যা দিতে চায় সেটা পূজার আগেই দিয়ে আসতে হয়, পরে দিলে মা সেটা গ্রহণ করে না এটার বাস্তব সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে,এখানকার মা অনেক জাগ্রত সেটাতে কোন সন্দেহ নেই। যে ভক্তিভরে মায়ের পূজা করে তার নাম কালিপদ, তার একটা সময় কিছুই ছিলনা একটা মাত্র ঘরে থাককো সেই ঘরেই মায়ের পূজা করতো। আমি প্রথমবার তার বাড়ির যে পরিস্থিতি দেখেছিলাম আর এখনকার যা অবস্থা তাতে আকাশ-পাতাল ব্যবধান আমি এবার গিয়ে তার বাড়ি চিনতেই পারিনি, দোতলা বাড়ি চারদিকে ঝকঝকে তকতকে জিনিস পত্র অন্যরকম একটা ব্যাপার, দেখে খুবই ভালো লেগেছে। সবই মায়ের কৃপা ছিল বলে তার এই অবস্থার উন্নতি।
আমি উপোস ছিলাম স্নান সেরে নিজের বাসায় পূজা শেষ করে মেয়েদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম যে ওরা স্কুল থেকে আসার পর আমি পূজা বাড়িতে যাবো। সকালে যাইনি তার কারন কতপরিমাণে লোকের সমাগম ঘটে যে পা ফেলানোর মতো কোন পরিস্থিতি থাকে না। এখন জায়গায় প্রসার অনেক ঘটেছে তারপরও লোকজন বসা বা দাঁড়ানোর মতো কোন পরিস্থিতি থাকেনা সেজন্য সকালের দিকে যেতে পারিনি। আমার পায়ে কয়েকদিন আগে ব্যথা পেয়েছি লোকজনের ভিড়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না,তাই যেতে পারিনি। যাইহোক মেয়ে স্কুল থেকে আসার পর ওরা স্নান করে রেডি হয়ে তিনটার দিকে বাসা থেকে বেড়িয়ে পড়লাম রিক্সায় করে বাবাজী বাড়িতে পৌঁছে গেলাম খুব তাড়াতাড়ি, গিয়ে দেখি পূজা শেষ হয়েছে সবাইকে প্রসাদ বিতরণ করা হচ্ছে।
আমি বাড়িতে ঢুকতেই কালিপদ কাকাবাবুর সাথে দেখা হলো আমাদের দেখে বললো এত দেরিতে কেন আসলে মা, আমি আমার সমস্যার কথা কাকাবাবুকে বললাম, উনি বললো তুমি ভিতরে গিয়ে একটু দাঁড়াও আমি আসছি এই বলে উনি একটু বাইরে চলে গেলো। আমি ভিতরে গিয়ে মায়ের মুখ দর্শন করলাম প্রণাম করলাম তারপর এগিয়ে এসে বাইরে প্রসাদ দিচ্ছে ওখান থেকে প্রসাদ নিলাম
কিছুক্ষণের মধ্যেই কাকাবাবু বাইরে থেকে আসলেন তারপর আমাকে ডেকে নিয়ে ভোগ রান্নার রুমের সামনে গেলেন, তারপর ভিতর থেকে একটা ভোগের সড়া নিয়ে এসে আমার হাতে দিলেন।আমার খুবই ভালো লাগলো যে পরে এসেও মায়ের ভোগের সড়া পেলাম।এখানে মায়ের পূজায় ১০৮ টা সড়া দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়, সেই সড়া পাওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করে কিন্তু এত পরিমাণ লোক থাকে সবাইকে যে দেওয়া সম্ভব হয়না হাতে গোনা কয়েকজন পেয়ে থাকেন, আমি আজকে পেয়েছি সেই সড়া। আমার খুব ভালো লেগেছে
পূজা বাড়িতে নিজের বাড়ির দিকের অনেক লোকজন এসেছিল তাদের সাথে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ ভালো মন্দ গল্প করে তারপর বাসায় চলে আসলাম।এসে সবাই মিলে প্রসাদ খেলাম।
আজকের দিনের অনুভুতি খুবই সুন্দর ছিল তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আবার দেখা হবে অন কোন সময়ে অন্য কোন কিছু নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
বেশ ভাল সময় কাটিয়েছেন। অনেক সুন্দর ভাবে মোমেন্ট গুলো তুলে ধরেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit