সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় এখন একটু ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
জন্মগ্রহণ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হবেই আর এটাই চিরন্তন সত্য তাই আমাদের কাছ থেকে অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত বিদায় নিয়ে যাচ্ছে।জীবন যে কতোটা অনিশ্চিত তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় একটি ঘটনা বা দূর্ঘটনা।কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাল্টে যেতে পারে মানুষের নিয়তি।এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের জন্মের জন্য নির্দিষ্ট একটি সময় আছে কিন্তু মৃত্যুর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। আমাদের পৃথিবীর আলো দেখার জন্য ১০ মাস ১০ দিন মায়ের গর্বে থাকতে হয়।এই ১০ মাস ১০ দিন মায়ের গর্ভ থাকার পরে আমরা পৃথিবীর আলো দেখতে পারি।জন্মগ্রহণের নির্দিষ্ট একটি সময় আছে কিন্তু মৃত্যুর জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই মৃত্যু যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় হতে পারে।
মৃত্যুর দোরগোড়া থেকে আজ মনে হয় কোনোরকমে ফিরে এসেছি যা কল্পনাও করতে পারছি না।কাল রাতে যখন ঘুমাতে যাই তখনও ভাবিনি সকাল বেলা এরকম একটা ঘটনা আমার সাথে ঘটবে!প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে নিয়মঅনুযায়ী ঘুমিয়ে পড়ি,খুব সকাল সকাল ঘুম ভেঙে যায়।ঘুম থেকে উঠেই মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম যে আজ থেকে কাজে মনোনিবেশ করতে হবে।সেই ভেবেই প্রথমে জেনারেল চ্যাটে ঢুকলাম ভাবলাম সবার সাথে একটু আড্ডা দিয়ে কয়েকটা কমেন্ট করেই বিছানা ছাড়বো।জেনারেল চ্যাটে কথা বললাম তারপর কমেন্ট করতে নিজের প্রোফাইলে ক্লিক করলাম ভাবলাম আগে আমার পোস্টের কমেন্টের উত্তর গুলো দিয়ে বাকিদের পোস্ট গুলো পড়বো।
এরমধ্যেই হঠাৎ করেই পেটের মধ্যে কেমন জানি চিনচিন করে ব্যথা শুরু হলো সাথে একটু জ্বালাও করছিলো!সাথে সাথে ওষুধ খেয়ে নিলাম ভাবলাম একটু শুয়ে থাকি তাহলে হয়তো কমবে!কিন্তু না আস্তে আস্তে আরও ব্যথা বেড়ে যেতে লাগলো এক পর্যায়ে গিয়ে তো অসহ্য যন্ত্রণায় পরিনত হয়ে গেলো এবং সমানে গা ঘামতে শুরু হলো।সাথে সাথে মেয়েকে ডাক দিলাম ওকে বললাম ফ্যান দিতে ও ফুল স্পিডে ফ্যান চালিয়ে দিলো কিন্তু তাতেও কিছু হচ্ছে না ঘাম বেড়েই চলছে গোটা শরীর ঘেমে ভিজে গেলো।আমি অস্থির হয়ে যাচ্ছিলাম!তারপর শুরু হয়ে গেলো নাম মুখ দিয়ে অনর্গল বমি। প্রথমে বিছানাপত্র নষ্ট হয়ে গেলো পরে বালতি এনে দিলো এক নিমেষেই মনে হয় পেটের সব জল বেড়িয়ে বালতি ভরে গেলো শুধুই জল।
আমার এরকম অবস্থা দেখে মেয়ে বাড়িওয়ালী আপাকে ডাক দিলেন উনি সাথে সাথে চলে আসেন এবং গামছা দিয়ে আমার পুরো শরীর মুছতে লাগলেন।তারপর হাত পা মালিশ করে দিলেন,আমি শুধু ঘামছি!আর মনে হয় জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি কখন যে প্রাণ টা বেড়িয়ে যাবে এরকম অবস্থা!তারপর আস্তে আস্তে আমার হাত পা অবশ হয়ে আসতে লাগলো শরীর ছেড়ে দিলো ওরা আমাকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলো।বাড়িওয়ালী আপা সমানে তাদের সূরাহ পড়া শুরু করলেন এবং আমার শরীরে ফু দিতে লাগলেন আমি একেবারে নিস্তেজ হয়ে বিছানায় পড়ে রইলাম।আমার পুরো শরীর তখন অবশ হয়ে গেছে আমার আর বোধশক্তি কাজ করছিলো না শুধু একবার আমার প্রিয়জন আমার সন্তানের কথা মনে হলো,যে এবার তাদের ছেড়ে যাওয়ার সময় মনে হয় হয়েছে এরপর আর কিছু বলতে পারি না।
প্রায় ঘন্টা দুয়েক এরকম অবস্থায় ছিলাম এখানে হাতের কাছে কোনো ডাক্তার নেই যে তাকে ডেকে আনবে! হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।বাসায় কোনো পুরুষ মানুষ ছিলো না বিধায় হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব ছিলো না।মেয়ে বাড়িওয়ালী আপা মিলে আমার মাথা শরীর ভিজা কাপড় দিয়ে বার বার মুছে দেওয়া হাত পায়ে তেল মালিশ করা এগুলো করেছে।হয়তো ভগবান আমাকে এ যাত্রায় মাফ করে দিয়েছেন তাই আমি আবারও সজ্ঞানে ফিরে আসি।তখন ওরা সবাই একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।চোখ খুলেই দেখি দুই মেয়ের করুন অবস্থা মনে হচ্ছে এমন কান্না করেছে যে ওদের মা আর এই পৃথিবীতে নেই খুবই অসহায়ের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি বললাম চিন্তা করো না আমি এখন ঠিক আছি।
আমার ভুল ছিলো আমার সমস্যা অনেকদিন থেকেই ডাক্তার দেখিয়েছি ওষুধ খাওয়ার পর একটু সুস্থ হয়ে গেছি আর ওমনি ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পুরো ডোজ কমপ্লিট করা হয়নি তারই খেসারত দিতে হলো আর কি!মাসের মধ্যে বেশিরভাগ দিনগুলো আমার অসুস্থতার মধ্যে কেটে যায় কখনো কম কখনো বেশি তবে এবার বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম,মৃত্যুর যন্ত্রণা কি আজ একটু হলেও টের পেলাম।এখন মনে হচ্ছে আবারও নতুন করে জন্ম নিলাম কি এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হলো ভাবলেও গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে।সারাদিন রেস্ট করার পর এখন একটু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে তবে শরীর খুবই দূর্বল লাগছে শুয়ে শুয়েই লিখতে বসলাম নিজের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার গল্প!!
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।আর আমার জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন যাতে করে মেয়েদের বড় হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারি।
OR
জীবন কতটা অমূল্য এবং অনিশ্চিত, তা আবারও উপলব্ধি করলাম। আপনি যে দৃঢ় মনোবল দেখিয়েছেন এবং মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসতে পেরেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনার এই অভিজ্ঞতা অনেকের জন্য প্রেরণা হতে পারে এবং তাদের সচেতন করে তুলবে সুস্থতার গুরুত্ব সম্পর্কে।আপনার সম্পূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যিই তাই, আমি বেঁচে আছি এখনো ভালো আছি এটাই অনেক বেশি আর এটা আমার দৃঢ় মনোবল ছিলো বলেই সম্ভব হয়েছে।আমি সবক্ষেত্রেই নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করি তার কারণ হলো আমার কিছু হলে মেয়েদের জীবন অন্ধকার।দোয়া করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টুইটার লিংক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু হঠাৎ এমন পেটে যন্ত্রণা বমি হওয়ার প্রধান কারণ বদহজম গ্যাসের প্রবলেম আর প্রেশারের সমস্যা। আপনি গ্যাসের ঔষধ নিয়মিত খাবেন আর যেগুলো খেলে গ্যাস হয় সেগুলো থেকে বিরত থাকবেন। শরীর দুর্বল থাকলে খুব সহজে মানুষের অসুখে ধরে ফেলে। আপনার জন্য দোয়া করি। খুব সাবধানে থাকবেন, ভালো থাকবেন সেই দোয়া রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আমার অনেক দিন ধরেই হজম জনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।ডাক্তার দেখিয়েছি ওষুধ খতে একটু অনিয়ম হয়েছে তাই এমন হয়েছিলো।ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার সাথে আমি সকালে চেটিং করলাম।তারপরের ঘটনা শুনে খুবই কষ্ট পেলাম।আপনার যে অবস্থা হয়েছিল শুনলাম তাতে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে।আর মেয়ে দুটো তো ছোট তাই ভয় পেয়ে গেছে।আসলে আমাদের সবার উচিত মেডিসিনের কোর্স কমপ্লিট করা।আপনার আজকের পোস্টটি সচেতনতা মূলক পোস্ট আমি মনে করি।দোয়া করি আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আপনাদের সাথে কথা বলার কিছুক্ষণ পরের ঘটনা।ঠিক বলেছেন আপু ওষুধের ডোজ পুরোপুরি কমপ্লিট না করলে অনেক শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে এরকম অবস্থায় অনেকেই মৃত্যুবরণ করে। হয়তো সৃষ্টিকর্তা আপনার আরো আয়ু দান করে দিয়েছেন। তবে এখন থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পুরো ডোজ কমপ্লিট করবেন। যেহেতু এরকম সমস্যা যদি আগামীতে হয় সেক্ষেত্রে মারাত্মক কিছু ঘটলেও ঘটতে পারে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সচেতন হতে হবে এবং ডাক্তারের পুরো পরামর্শ অনুসারে চলতে হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাইয়া মৃত্যু কি তা নিজের চোখে দেখেছি এমন মনে হয়।খুবই কষ্ট পেয়েছি সামান্য একটু ভুলের জন্য।দোয়া করবেন ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার মুখে এমন কথা শুনে নিজের গায়েই বশ কাটা দিয়ে উঠলো। আশা করি ভালো কনো ডাক্তার দেখিয়ে নিবেন। তবে নিজের দিকে একটু খেয়ালও রাখবেন। যাই হোক উপর ওয়ালা আপনার মঙ্গল করুন এমন দোয়াই করি আপু। খুব খারাপ লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু অনেক ভয়ংকর পরিস্থিতি হয়েছিলো।ভালো ডাক্তার দেখাচ্ছি।দোয়া করবেন আমার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার পোস্ট পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিল নিজেকে এক মুহূর্তের জন্য হারিয়ে ফেলেছি। আপনার পরিস্থিতিটা অনুভব করলেই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক অনেক দোয়া করি আপনাকে যেন দ্রুত সুস্থ করে দেয়। আর এরকম পরিস্থিতিতে যেন কখনো কোন মানুষের পড়তে না হয়। সব সময় দোয়া করি সকল মানুষ সুস্থ থাক তাদের কাছের মানুষের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমিও যতোবার ভাবছি ততোবারই মনে হচ্ছে যদি মারা যেতাম তাহলে মেয়েদের কি হতো!এখনো ভাবলে ভয় লাগছে।দোয়া করবেন আপু,ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
TEAM 2
Congratulations! Your post has been upvoted through @steemcurator04. Good post here should be..Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit