হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশাকরি আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন কিছুদিন আগে এসএসসির রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে এবং আমার বড় মেয়ে ভালো ফালাফলের সহিত উত্তীর্ণ হয়েছে।পরীক্ষা,রেজাল্ট এগুলোর চিন্তা মোটামুটি মুক্ত হলাম।তারপর শুরু হলো নতুন চিন্তা মেয়েকে কোথায় ভর্তি করাবো!আমি যেখানে বসবাস করি তা হলো উপজেলা ভিত্তিক শহর তাই খুব একটা সুযোগ সুবিধা নেই।থাকা খাওয়ার জন্য বেশ মনোরম পরিবেশ কিন্তু লেখাপড়ার জন্য উপযোগী নয়।আর আমার উদ্দেশ্য থাকা খাওয়ার আরাম নয়,আমার উদ্দেশ্য হলো সন্তানদের সুশিক্ষা দিয়ে বড় করা।তাই চিন্তার পাহাড়টাও অনেক বেশি।প্রথমে রাজশাহী দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেছিলাম পরে ভেবে দেখলাম রাজশাহী আমার জন্য অনেক দূর হয়ে যায়।বাড়িতে যাতায়াত এবং আমার হাজবেন্ডের জন্য বেশ দূর হয়ে যায়।আর আমি আগে থেকেই চিন্তা করেছি মেয়েকে কখনো হোস্টেলে দিবো না আমার কাছে রেখেই পড়ানোর চিন্তা ভাবনা করেছি।কারণ ও এখনো খুবই ছোট বাহিরের জগত সম্পর্কে তেমন কোনো ধারনা নেই,যখন ভার্সিটিতে উঠবে তখনকার কথা আলাদা।তারপরও চেষ্টা করবো সাথে থাকার।
অনেক চিন্তা ভাবনা করে বগুড়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।লেখাপড়ার জন্য বগুড়াও বেশ উন্নত,তারপর থাকার জন্য বেশ ভালো উপযোগী একটি শহর।সবচেয়ে বড় কথা বগুড়া থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব খুবই কম এবং ঢাকা থেকে আসা-যাওয়ার সুযোগ সুবিধা অনেক।ক্ষেত্রে আমার হাজবেন্ডের জন্য বেশ সুবিধা হবে।তারপর বগুড়ার নামকরা পাঁচটি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করলাম।শুরু থেকে ইচ্ছা ছিলো আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে দেওয়ার।তাই প্রথম চয়েস এপিবিএন দিয়েছিলাম,তারপর বাকি চারটা দিয়েছি।আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পছন্দ করার উদ্দেশ্য হলো এই কলেজের নিয়ম-শৃঙ্খলা খুবই কঠোর এবং পড়াশোনার মান অনেক উন্নত।প্রতিবছর রেজাল্ট অনুযায়ী বোর্ডে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় সারিতেই থাকে।ইচ্ছে না করলেও প্রতিদিন কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে এবং নিয়মিত পড়া দিতে হবে।মাসিক পরীক্ষা ফলাফল খারাপ হলে অভিভাবক ডেকে সমাবেশ করা এগুলো কলেজের নিয়মের মধ্যে।এসএসসি পাস করার পর অনেক বাচ্চারাই যখন কলেজে যায় তখন তারা নিজেকে অনেক বড় ভাবে ভুলভাল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সেই সাথে পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে ওঠে।এগুলো চিন্তাভাবনা করেই এই কলেজ কে নির্বাচণ করি যাতে আর যাই হোক বাহিরে ঘোরাঘুরি বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা এগুলোর থেকে দূরে থাকতে পারে এবং বাধ্য হয়ে পড়াশোনা করে।
আবেদন করার পর থেকেই একটা টেনশনে ছিলাম ছোট মেয়ের জন্য বাসা নিতে হয়েছে তাড়াতাড়ি।কারণ আগামী মাসের তিন তারিখ থেকে ওর স্কুলের পরীক্ষা শুরু তাই বাসা না নিয়ে উপায় ছিলো না।এপিবিএন কলেজের পাশেই বাসা নিয়েছি যাতে মেয়ের কলেজ যাতায়াতের সুবিধা হয় গাড়ি ভাড়া না লাগে হেঁটে কলেজ করতে পারে।বাসাতো নিয়ে ফেললাম কিন্তু পরে চিন্তা হচ্ছিলো যদি কোনো কারণে মেয়ের এই কলেজে ভর্তির সুযোগ না আসে তাহলে তো বিপদ হয়ে যাবে!এগুলো নিয়ে খুবই চিন্তার মধ্যে ছিলাম।গতকাল রেজাল্টের দিন ছিলো।এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের দিন যেমন টেনশন হয়েছে ঠিক তেমনটাই মনে হচ্ছিলো।সারাদিন খুবই চিন্তার মধ্যে ছিলাম কি হয় কি হয় একটা উত্তেজনা কাজ করছিলো।সারাদিন এভাবেই পার করি,রাত ৮:৩০ টায় রেজাল্ট প্রকাশ হলো কিন্তু কিছুতেই সার্ভারের কাজ করছিলো না তাই রেজাল্টও জানা যাচ্ছিলো না।সবমিলিয়ে খুবই চিন্তা হচ্ছিলো।রাত ৯টার দিকে শ্যামসুন্দর মেসেজ দিয়ে জানালো আমার কাঙ্খিত কলেজে ওর নাম এসেছে।ওর মেসেজটা দেখে খুবই আনন্দিত হলাম।
কলেজ যদিও বা কোনো বিষয় না কিন্তু আমার উদ্দেশ্য হলো মেয়েকে সুশৃংখল একটা পরিবেশ দেওয়া যেখানে সে চাইলেও নিজের মতো করে চলতে পারবে না।আমার মেয়ে এমনিতেই একটু অলস প্রকৃতির।সরকারি কলেজগুলোতে ঠিকঠাক মতো ক্লাস হয় না ছাত্র-ছাত্রীরা যে যার মত চলাফেরা করে কেউ কারো ধার ধারে না।আর এগুলো থেকে দূরে রাখার জন্যই এপিবিএন কলেজ একেবারে আমার মন মতো।আর যখন নিজের ইচ্ছা পূরণ হয় তখন এমনিতেই অনেক বেশি ভালো লাগে।আপাতত মনে অনেক শান্তি পাচ্ছি,দেখা যাক পরবর্তী সময়ে কি হয় আশা করি প্রতিটি মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
আপনারা সকলেই আমার মেয়ের জন্য আশীর্বাদ দোয়া করবেন।ওর জীবনের নতুন অধ্যায় যেনো সুস্থ সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত হয়,এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাক, শেষ পর্যন্ত আপনার ইচ্ছাটা যে পূরণ হয়েছে আর এই জন্য আপনি যে শান্তি অনুভব করছেন, এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো দিদি। আশা করি, এই এপিবিএন কলেজে গেলে আপনার মেয়ে সুন্দরভাবেই গড়ে উঠবে। আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো দিদি। তার জীবনের নতুন অধ্যায় যেনো সুস্থ সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত হয়, এই প্রার্থনাই করি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit