সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আবারও নতুন একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি,আশাকরি আজকের পোস্টটিও আপনাদের ভালো লাগবে।
উল্টো বিড়ম্বনা নিয়ে একটি পোস্ট আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।আজ তারই শেষ পর্ব টি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর স্যালাইন দিয়ে বাসায় এসে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেও তেমন কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি।সকালবেলা খাবার খেয়ে দুপুরের রান্নাবান্না শেষ করে খেয়ে রেস্ট করি।তারপর হঠাৎ করেই মনে হলো তিনতলায় ময়না ভাবির মা অসুস্থ তাই আন্টিকে একটু দেখতে যাওয়া দরকার।মনে পড়ার সাথে সাথেই তাড়াতাড়ি করে তিনতলায় চলে গেলাম এবং আন্টির পাশে গিয়ে বসলাম।আন্টি আমাকে খুবই ভালোবাসেন আমিও আন্টিকে সন্মান করি।আন্টির পাশে বসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম হঠাৎ করেই চোখে পড়লো আমার বাম হাতে কয়েকটা ছোট ছোট গোটা দেখা যাচ্ছে আর একটু চুলকাচ্ছে।
বেশিক্ষণ পর দেখি আস্তে আস্তে গোটা গুলো বেশি হচ্ছে আর চুলকানোটাও বেড়ে যাচ্ছে।রাতের খাবার খেয়ে ঘরে থাকা একটা এ্যালার্জির ঔষধ খেয়ে নিলাম তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম।হঠাৎ করেই মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো তারপর হাতের চুলকানোটাও অসহ্য লাগছিলো অনেক কষ্টে রাতটুকু পার করলাম।সকালবেলা উঠেই হাতের একটা ছবি তুললাম তারপর আমি যে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে আছি আসিফ রব্বানী স্যার কে হোয়াটসঅ্যাপ এ পাঠিয়ে পরামর্শ চাইলাম।স্যার দেখে আমাকে দুইটা ঔষধ লিখে দিলেন আর পাঁচদিন খেতে বললেন।স্যারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেতে লাগলাম একদিন পার হলো কিন্তু কোনোপ্রকার উপকার মিললো না।বরং বেশিই মনে হচ্ছিলো।আবারও ডাক্তার সাহেব কে বললাম তিনি আরও একদিন দেখতে বললেন।আমি আরেকদিন ঔষধ খেলাম কিন্তু সেদিন খুবই ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম।সাথে সাথে আবারও একটি ছবি তুলে আসিফ রব্বানী স্যারকে পাঠিয়ে দিলাম। তিনি ছবিটি দেখে আমাকে বললেন এখন আর আমার করার কিছু নেই আপনাকে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
পরেরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই বগুড়া ইবনে সিনায় কল করলাম এবং একজন ভালো চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের নাম জানতে চাইলাম।তখন ওখান থেকে কয়েকজনের নাম বললেন আমি বললাম সবচেয়ে যে ভালো তার একটি সিরিয়াল দিতে ওনারা শিল্পী আক্তার ম্যাম এর সিরিয়াল দিলেন।আমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বগুড়ায় পৌঁছে গেলাম এবং ডাক্তারের অপেক্ষায় রইলাম।বিকেলে ৪ টায় ডাক্তার চেম্বারে আসলেন,আমার প্রথম সিরিয়াল ছিলো তাই আমি সবার প্রথমে চেম্বারের ভিতরে প্রবেশ করলাম।আমার কাছে সমস্যার কথা জানতে চাইলেন আমি বিস্তারিত জানালাম।তারপর সবকিছু পর্যবেক্ষণ করলেন এবং ঔষধ লিখলেন।
ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে নিচে চলে আসলাম ঔষধ কেনার জন্য।নিচে ফার্মেসীতে প্রেসক্রিপশন জমা দিলাম কিছুক্ষণ পর বললেন এগুলো ঔষধ এখানে পাওয়া যাবে না।তারপর আমি ওখান থেকে বেড়িয়ে আমার পরিচিত একজনকে কল করলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম বগুড়ার কোথায় সবধরনের ঔষধ পাওয়া যায়!তখন উনি বললেন সাত মাথা সবুজ ফার্মেসীতে সবধরনের ঔষধ পাওয়া যায়।আমি রিক্সায় করে সাত মাথা সবুজ ফার্মেসীতে চলে আসলাম।অনেক বড় ফার্মেসী দেখেই বুঝতে পারলাম সব পাওয়া যায়।
প্রেসক্রিপশন জমা দিলাম ওরা বললো সবগুলোই পাওয়া যাবে।আমি বললাম যা যা লেখা আছে ঠিক সেগুলোই দিবেন।ওখানকার একজন কর্মচারী সবগুলো ঔষধ নিয়ে আসলেন।ঔষধ গুলো দেখেই আমার মনে হলো অনেক দামী হবে।তাই আমি ওনাকে বললাম ভাইয়া আপনি সবগুলো ঔষধের দাম দেখে আমাকে জানান কতো হয়!তখন উনি সবগুলো ঔষধের দাম হিসেব করে আমাকে বললেন যে ৯৬৪২ টাকা।আমি তো শুনেই হতবাক হয়ে গেলাম!আমি সবমিলিয়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে ডাক্তার দেখতে আসছি।ভিজিট ৭'শ আর বাদবাকি দিয়ে যাতায়াত ঔষধ হয়ে যাওয়ার কথা এই ভেবেই আসছিলাম।
কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।তারপর আমার হাসবেন্ড কে কল করে বিস্তারিত জানালাম তখন আমার হাসবেন্ড বললো তোমার সাথে ক্রেডিট কার্ড আছে না?আমি বললাম আছে তখন সে বললো তাহলে ১০ হাজার টাকা তুলে সবগুলো ঔষধ কিনে তারপর বাসায় যাবা।আমি তো কি করবো বুঝতে পারছি না এত্তো গুলো টাকার ঔষধ কিনতে কিছুতেই মন চাইছে না আবার না কিনলেও নয়।সবমিলিয়ে খুবই লজ্জাজনক একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো আমার জন্য।আমার হাসবেন্ড এমন একজন মানুষ সে আমাদের ভালো থাকার জন্য সবকিছুই করতে পারে।
এরকম একজন মানুষ যদি পাশে থাকে তাহলে যতো সমস্যাই আসুক না কেনো তারপরও ভালো থাকা যায়।চলবে......
আজ এপর্যন্তই আবার দেখা হবে পরবর্তী পর্বে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থনা করি।
আমাদের উইটনেস কে সাপোর্ট করুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit