সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
জন্মগ্রহণ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হবেই আর এটাই চিরন্তন সত্য তাই আমাদের কাছ থেকে অনেক মানুষ প্রতিনিয়ত বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। এই পৃথিবী থেকে ছেড়ে আর তাই তো এই মানুষগুলোর কথা যখন মনে পড়ে তখন ভিতরটা কেঁদে উঠে মনে হয় আর কখনোই এই মানুষ গুলোকে দেখতে পারবো না ভাবতেই কেমন জানি লাগে।আজ সকালে আমার এক দিদির ফোন থেকে কল আসলো রিসিভ করার সাথে সাথেই বললেন অনিকের মা মারা গেছে..!কথাটা শুনেই একমুহূর্তের মধ্যে আমার হৃদয় টা ভেঙেচুরে চুরমার হয়ে যাওয়ার উপক্রম!এইতো সেদিনের কথা আমরা সবাই একসাথে পুরো রাজশাহী শহরে ঘুরলাম তারপর তাঁর বাসায় গিয়ে কতো গল্প কতো হাসিতামাশা হলো।
আমার ডানপাশে কেয়া দিদি বামপাশে জনি দিদি মাঝে আমি।😥
কেয়া দিদির বামপশে তাঁর বড় ছেলে এবং ডানপাশে তাঁর স্বামী বিপ্লব দাদা।😥
অনিকের মা আমার স্বামীর সহকর্মীর সহধর্মিণী তার নাম কেয়া চক্রবর্তী জন্ম নওগাঁ জেলায় স্বামীর চাকরি সুত্রে রাজশাহী শহরে বসবাস করেন।তাঁর সাথে আমার পরিচয় ছিলো না কখনো দেখা হয়নি।কিন্তু বছর দুয়েক আগে রাজশাহীতে আমার জনি দিদির বাসায় গিয়ে তাঁর সাথে পরিচয় খুব অল্প সময়ের পরিচয় হলেও বেশ ঘনিষ্ঠ হয়েছিলাম আমরা।একদিন সারাদিন সবাই মিলে অনেক ঘোরাঘুরি করলাম।কেয়া দিদি অনেক আগে একবার স্ট্রোক করেছিলেন তারপর থেকে তাঁর ডান হাত ডান পায়ে সমস্যা কাজকর্ম তেমন করতে পারতেন না।তাঁর বড় ছেলে পড়াশোনার জন্য ইন্ডিয়াতে থাকে এখানে ছোট ছেলে আর স্বামী নিয়ে থাকতেন। তাঁর স্বামী এবং ছোট ছেলে সংসারের সকল কাজকর্ম করতেন।দাদা কেয়া দিদির খুবই যত্ন করতেন।যেদিন আমরা ঘুরতে যাই তখন দেখিছি বিপ্লব দাদা সর্বক্ষণ কেয়া দিদির হাত ধরে সবখানে নিয়ে গেছেন,তাঁর পায়ে জুতা পড়িয়ে দেওয়া তাকে ধরে ধরে হাঁটানো সারাটা সময় দিদির হাত ধরেই কাটিয়েছেন।কখনো বউয়ের উপর বিরক্ত ছিলেন না।
এভাবেই অনেক গুলো বছর তাঁদের সংসার জীবন কেটে যায়।মাস তিনেক আগে কেয়া দিদি আবারও স্ট্রোক করেন এবং এবার কোমায় চলে যান!অনেক দিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা চালান কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি নেই তারপর বাসায় নিয়ে আসেন এবং বাসাতেই রেখে চিকিৎসা ও সেবা যত্ন চালিয়ে যান বিপ্লব দাদা।তিন মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাকে বাঁচিয়ে রাখেন ইন্ডিয়া নিয়ে যাওয়ার খুব চেষ্টা করেছিলেন এ পর্যন্ত অনেক টাকাপয়সা খরচ করেছেন।তাঁর কথা যতো টাকা লাগুক তবুও তাঁর স্ত্রী কে সুস্থ করে তুলবেন।তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন করে টাকার ব্যবস্থা করেছেন ইন্ডিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি শেষ।এরমধ্যেই আজ সকালে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন, সাথে সাথে এম্বুলেন্স কল করেন এম্বুলেন্স এসে পৌঁছানোর সাথে সাথেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন!
তাঁর বড় সন্তান ইন্ডিয়াতে থাকার কারণে মায়ের সাথে শেষ দেখাটাও করতে পারলো না এটা খুবই কষ্টদায়ক।সারাদিনে অনেক আত্মীয় স্বজন আসেন তাকে শেষবারের মতো দেখতে কিন্তু তাঁর কলিজার টুকরো বড় সন্তান আসতে পারলো না।মা সন্তানের সম্পর্ক হলো নাড়ীর বাঁধন যা কখনোই ছিন্ন হয় না মা তো চিরদিনের জন্য চলেই গেলো কিন্তু তাঁর ছেলে কি করে নিজেকে শান্তনা দেবে, কি করে মায়ের কথা ভুলে যাবে?এগুলো ভেবেই বুকের ভিতর টা কেমন করছে।ঈশ্বর এররকম দিন যেনো কোনো সন্তানের জীবনে না আসে এই কষ্ট সহ্য করার মতো নয়।😥
কেয়া দিদি খুবই ভালো একজন মানুষ ছিলেন।তার সাথে অল্প সময়ের পরিচয় হলেও তাঁর মৃত্যু টা আজীবনের কষ্ট হয়ে থাকবে আমার অন্তরে।তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করা ছাড়া এই মুহূর্তে আর কিছুই করার নেই।যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন দিদি।🙏🙏😥😥
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জন্ম যার মৃত্যু ও তার এটাই সত্য। তবে আমার কাছে মনে হয় যেন একজন ভালো মানুষের মৃত্যু যেন খুব তাড়াতাড়ি হয় না আপনার পোস্টে পড়ে আসলে আপু অনেক বেশি খারাপ লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু ভালো মানুষ খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব খারাপ লাগছে আপনার কেয়া দিদির কথাটা শুনে। আসলে জীবন মৃত্যু এই দুটাই বিধাতার হাতে। কেউই এটা ধরে রাখতে পারবে না। তবে আফসোসের বিষয় হলো তার বড় সন্তান তাকে দেখতে পারলো না একটা বারের জন্য। তার হাজবেন্ডও অনেক চেষ্টা করেছে তাকে বাঁচানোর জন্য। কিন্তু বিধাতা সেটা চাননি। যাই হোক তার আত্মার শান্তি কামনা করছি,আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি আপু জন্ম মৃত্যু বিধাতার হাতে কারো সাধ্য নাই কাউকে ধরে রাখার।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবন-মৃত্যু সত্যিই বিধাতার হাতে, আর কিছু কিছু বিদায় মেনে নেওয়া ভীষণ কষ্টের হয়ে যায়। কেয়া দিদির চলে যাওয়া গভীর শোকের, বিশেষ করে যখন তার বড় সন্তান শেষ দেখা পর্যন্ত পেল না। তার স্বামীও শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন, কিন্তু ভাগ্যের লিখন মেনে নিতেই হলো। প্রার্থনা করি, তিনি শান্তিতে থাকুন, এবং তার পরিবার এই শোক কাটিয়ে শক্তি খুঁজে পাক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্বামীর অক্লান্ত পরিশ্রম ছিলো তাঁকে বাঁচানোর কিন্তু ভাগ্যে নির্মম পরিহাসের কাছে হেরে গেলো।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জন্ম,মৃত্যু আর বিয়ে এই তিনটি আল্লাহ নির্ধারণ করেন।কেয়া দিদির মৃত্যুর খবর শুনে খুব খারাপ লাগলো আপু।ভালো মানুষ বাঁচে খুব কম সময়।এই কম সময়ে অনেক বেশি ভালো স্মৃতি রেখে যায় সবার অন্তরে।স্বামী যে অনেক ভালো তা পড়ে বুঝলাম।বড় ছেলে মাকে শেষ দেখার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হলেন এটা আরো বেশি কষ্টের কথা।দিদি যেখানে থাকুক ভালো থাকুক এমনটা ই আশাকরি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু ভালো গুলো খুব অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীতে আসেন এটা খুবই কষ্টদায়ক।বড় ছেলের জন্য সত্যিই অনেক খারাপ লাগছে।ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আত্নার শান্তি কামনা করছি।এনাদের দাম্পত্য প্রেম কাহিনি আপনার কাছে বগুবার শুনেছি।ওনার বরের ওনার প্রতি ভালোবাসার কথা গুলো আপনার মুখে শুনে অবাক হতাম।অবশেষে ওনার জীবনের ও ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটলো মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।পোস্ট টি করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit