হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি,সুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আশাকরি আজকের ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগবে।
কয়দিন ধরে দেশের যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো তাতে করে জনজীবনে দুর্ভোগ এর কোনো শেষ ছিলো না।এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য খুবই ভয়ংকর ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।চারদিকে যুদ্ধ চলছে সারাদিন মোবাইলে লাইভ নিউজ দেখে দেখে বুকের ভিতরটা চাপ লেগে আসছিলো।১৯৭১ সালের যুদ্ধ আমরা দেখিনি কিন্তু এবার কিছুটা হলেও সেই ভয়ংকর দৃশ্য অনুভব করতে পেরেছি।কতো মানুষের প্রাণ গেছে তা আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা নেই তবে অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে অনেক মা বোনের আহাজারি দেখেছি যে দৃশ্য গুলো রাতের ঘুম কেঁড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।এই দৃশ্য গুলো আমার মতো সবার মনে কঠিন ভাবে প্রভাব ফেলেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।এই দিনগুলো কখনো ভুলবো না বা ভোলা সম্ভব নয়।
পরিস্থিতি খারাপের মধ্যেও কিছুটা হলেও সময় কাটছিলো মোবাইল দেখে দেখে কিন্তু সেটা আর খুব বেশি সময় স্থায়ী হলো না।প্রথমে মোবাই ডেটা বন্ধ করে দেওয়া হলো তারপর দুইদিন ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু থাকলো। আমাদের বাসায় ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালানো হয় বিধায় দুইদিন ভালোই সময় কাটছিলো।হুট করে এক সন্ধ্যায় সেটিও আর থাকলো না তখন টিভি হলো একমাত্র সঙ্গী।টিভি দেখার নেশা আমার খুব একটা নেই তাই টিভি দেখতে ভালো লাগে না।মেয়েরা সারাদিন টিভি দেখে সময় পার করছে কিন্তু আমি কি করি এটা ভেবে পাচ্ছিলাম না।তারপর হঠাৎ করে সেলাই মেশিনের কথা মনে পড়লো। তখন ভাবলাম মেশিন টা ঠিকঠাক করে নিয়ে টুকটাক কিছু সেলাই করলেও কিছুটা সময় কাটবে।
কবে থেকে মেশিনে হাত লাগাই না তার ঠিক নেই বের করে দেখি মেশিনের বেহাল অবস্থা।অনেকগুলো সময় মেশিন থেকে দূরে ছিলাম অথচ আগে এই মেশিনে সেলাই করেই অবসর সময় গুলো কাটাতাম এবং একটা সময় বেশকিছু টাকাও ইনকাম করেছি।আজ থেকে ১৫ বছর আগে এই সেলাই মেশিনটি আমার মেজদা @shapladatta এর হাসবেন্ড আমাকে কিনে দিয়েছিলো।সেলাই শেখার শখ আমার অনেক দিনের ছিলো।সেলাই শেখা শুরু করলাম তারপর মনে মনে ভাবছিলাম একটা সেলাই মেশিন কিনবো।
একদিন দুপুরবেলা আমি মেয়ের একটা জামা কেটে সুঁই সুতা দিয়ে হাতে সেলাই করছিলাম ঠিক সেই মুহূর্তে মেজদা আমার বাসায় আসে,তখন ও আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমি কি করছি!তখন বললাম মেয়ের জামা বানাচ্ছি শুনে আর কিছু বললো না।মেজদার তখন ঢাকা ক্যান্টমেন্টে পোস্টিং ছিলো আমিও ঢাকায় ছিলাম সেই সুবাদে প্রতি সপ্তাহে মেজদা আমার বাসায় আসতো।সেদিন হাতে সেলাই করা দেখে যাওয়ার পর পরের সপ্তাহে মেজদা বাটারফ্লাই সেলাই মেশিন কিনে নিয়ে আমার বাসায় এসে আমাকে সারপ্রাইজ দিলো।আমি তো ভাবতেই পারিনি যে মেজদা আমাকে না বলে সেলাই মেশিন কিনে আনবে।হঠাৎ করে শখের জিনিস পাওয়ার যে কি আনন্দ তা তো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
মেজদা সব বিষয়ে পারদর্শী ও সেলাই মেশিন ঠিকঠাক করে কিভাবে কি করতে হবে সবকিছু বুঝিয়ে দিলো।তারপর থেকে আমি মেয়ের জামাকাপড় বানানো শুরু করলাম।বড় মেয়কে যখন যা মন চাইতো ঠিক সেরকমই ডিজাইনের জামাকাপড় বানিয়ে পড়াতাম।আমি ছোট বাচ্চাদের জামাকাপড় খুব ভালো বানাতে পারতাম।মেয়েকে সুন্দর সুন্দর জামা পড়ানো আমার একটা নেশা ছিলো ছোট মেয়েকেও পড়িয়েছি তবে বড় মেয়ের মতো না।তার কারণ অসুস্থতা তারপর পা ভাঙ্গার কারণে সেলাই মেশিন আমার জীবন থেকে একেবারে বাদ হয়ে যাওয়ার মতো হয়েছিলো।
প্রায় চার বছর পর মেশিনে হাত লাগালাম।তেল দিলাম ভালোভাবে পরিস্কার করলাম।মনে হচ্ছিলো সেলাই হবে না কিন্তু না সেলাই একদম ঠিকঠাক আছে দেখে খুব ভালো লাগলো।যাক আর যাইহোক দোকানে নিয়ে ঠিক করাতে হবে না এটা ভেবে স্বস্তি পেলাম।১৬ বছরে একবারের জন্যও দোকানে নিতে হয়নি ছোটখাটো যে সমস্যা হয় তা আমি নিজেই ঠিক করে নিতে পারি।অনেক দিন পর শখের জিনিস টার যত্ন করতে পেরে খুবই ভালো লাগছিলো।আশাকরি খুব শীঘ্রই আমার কিছু কাজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit