ব্যস্তময় একটি দিনের গল্প

in hive-129948 •  7 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি সুস্থ আছি।

আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজ নতুন একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।আশাকরি আমার আজকের পোস্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে!

সংসার জীবন একটা নারীর জন্য যুদ্ধক্ষেত্রের সমান। যা হয়তো অনেক পুরুষ মানুষই বুঝতে পারেন না তাদের একটাই ধারণা আমরা বাসায় বসে কি করি সারাদি?আমার মনে হয় এই ডায়লগটি প্রতিটি নারী জীবনে একবার হলেও শুনেছেন!আমরা কাজ করে যতোটা না ক্লান্ত বোধ করি তার চেয়ে এই কথাটি শুনলে অনেক বেশি মর্মাহত হয়ে যাই!যখন কারো কাছ থেকে শুনতে হয় যে আমরা কিছুই করি না সারাদিন শুয়ে বসে ফোন চালাই।তখন খুব কষ্ট হয় কিন্তু কিছু করার নেই কারণ আমরা চাইলেও নিজের সংসার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবো না। এটা আমাদের ধর্ম এটা আমাদের কর্ম তাই যে যাই বলুক না কেনো আমাদের সংসার ধর্ম ঠিকঠাক মতো পালন করতে হবে।

InCollage_20250212_174705966.jpg

আজ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে গেছে।সকালের খাবার খেয়ে ঘর দুয়ার একটু পরিষ্কার করে গুছিয়ে ভাবলাম একটু রেস্ট করে রান্না ঘরে ঢুকবো।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বাড়িওয়ালির সাথে একটু কথা বলছিলাম সারাদিনে একবার তার সাথে একটু হলেও কথা বলি কারণ দিনশেষে আমাদের সবারই উচিত কারো না কারো সাথে মনের কথা হোক বা সাধারণ কথা হলেও শেয়ার করা দরকার।তাহলে কিছুটা হলেও মানসিকভাবে হালকা থাকা যায়।কথা বলার সময় আমার ফোনে বেশ কয়েকবার রিং এসেছে কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি পরে রুমে এসে দেখি আমার বড় মেয়ের কল ছিলো!সেতো রেগে মেগে আগুন কেনো আমি ফোন রিসিভ করলাম না!তার নাকি টেনশন হচ্ছিলো আমাকে নিয়ে।তখন ওপাশ থেকে মেয়ে বলল তুমি কি চাও না আমি পরীক্ষা দেই শুনেই তো আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম হঠাৎ করে মেয়ে এরকম কথা কেনো বললো!তারপর মেয়ে বললো আমি এখন পর্যন্ত বেতন দেইনি আর বেতন না দিলে আমাকে আজকে প্রবেশপত্র না আর প্রবেশপত্র না নিলেও পরীক্ষা দিতে না দেওযারই কথা।ওর কথা শুনে তখন মনে হলো যে হ্যা এই মাসে আমার বেতন দেয়া হয়নি ফোন রেখেই খুব দ্রুত রেডি হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম।প্রথমে এটিএম বুথ থেকে টাকা উঠালাম তারপর একটা রিক্সা নিয়ে সোজা চলে গেলাম সাউথইস্ট ব্যাংক এ ওখানে গিয়ে দেখি প্রচন্ড পরিমাণে ভিড় বেশ কিছুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলাম।অপেক্ষা করার পর অবশেষে বেতনের টাকা জমা দিতে পারলাম।তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আবার ছুটে এলাম মেয়ের কলেজে বেতনের রশিদ মেয়েকে দিয়ে আবার আসলাম বাজারে।টুকিটাকি কিছু কেনাকাটা করলাম তারপর সবজি কিনলাম।হালকা কিছু ফল কিনলাম সব কেনাকাটা শেষে বাসায় আসলাম।

IMG_20250212_174130.jpg

IMG_20250212_180750.jpg

IMG_20250212_174110.jpg

IMG_20250212_174408.jpg

বাসায় এসে মনে পড়লো সকালবেলা অনেকগুলো কাপড় ভিজিয়ে রেখেছিলাম কাপড় ছেড়ে সোজা বাথরুমে ঢুকে পড়লাম এবং কাপড়-চোপড় ধুয়ে একদম স্নান করে বের হলাম।কাপড় শুকাতে দিয়ে পূজার জন্য প্রস্তুতি নিলাম বেশিরভাগ দিন একটু পূজা দিতে আমার দেরি হয়ে যায় কারণ খুব সকালে উঠতে পারি না তবে আজকে একটু বেশি দেরি হয়ে গেলো।এটা আমি তেমন কিছু মনে করি না কারণ ঈশ্বর সব সময় আমাদেরকে দেখেন আমরা কখন কোন কাজে কি ব্যস্ত থাকি তাই আমাদের এই ছোটখাটো ভুলগুলোকে অবশ্যই তিনি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেন এটা আমার বিশ্বাস।আসলে আমরা মন থেকে যদি ভক্তি সহকারে ঈশ্বরের নাম স্মরণ করি তাতেই ঈশ্বর খুশি থাকেন

IMG_20250212_175216.jpg

এবার চলে এলাম রান্নাঘরে দুপুরের রান্নার প্রস্তুতি শুরু করলাম!আজ খুব বেশি আয়োজন করতে পারিনি কারণ বেশ বেলা হয়ে গেছে তাই খুব বেশি রান্না করা সম্ভব নয়।দৌঁড়াদৌঁড়িতে সকালের খাবার কখন হজম হয়ে পেটের ক্ষুধা মাথায় উঠে গেছে,তাই খুব বেশি রান্না করার মত ধৈর্য শক্তি আর নেই।তারপরও একেবারে যে খারাপ কিছু করেছি তাও নয়!বাঁধাকপি ভাজি মাছ ভর্তা সিম ভর্তা ও সালাদ এ ছিলো আজকের দুপুরের খাবার।খাবার খেতে খেতে প্রায় চারটে বেজে গেল,খাবার খাওয়ার পর শরীরর চলছে না তাই তাড়াতাড়ি করে বিছানায় আসলাম কিছুক্ষণ ধরে শুয়ে ছিলাম কিন্তু ঘুম আসছিলো না!দুই মেয়ে বাহিরে থাকলে খুব টেনশন হয় চোখে ঘুম থাকলেও ঘুমাতে পারিনা এটা আমার এক ধরনের বাজে অভ্যাস।খুব চেষ্টা করি কিন্তু ভিতরে একটা অস্থিরতা কাজ করে আমি জানি ওরা কখন আসবে তারপরে ও নিজের মনকে বোঝাতে পারি না,আসলে মায়ের মন বলে কথা।এটা শুধু আমি না আমার মনে হয় পৃথিবীর সকল মায়েদেরই এমন হয়।

IMG_20250212_174013.jpg

ঘুম যেহেতু আসছিলো না তাই ভাবলাম শুয়ে শুয়ে আজ সারা দিনের ব্যস্ততার গল্পগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি,তাই পোস্ট লিখতে বসলাম আর আমার ব্যস্তময় দিনের গল্প গুলো ঝটপট লিখে ফেললাম।আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে! আমার মতো সবাই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকেন প্রত্যেকরেই ব্যস্তময় জীবন। এতো ব্যস্তাতার মাঝেও ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমরা যেনো সবাই ভালো থাকি,সুস্থ থাকি এবং আরও যেনো নিজের জীবনকে ব্যস্তময় করে তুলতে পারি!তার কারণ হলো অলস মস্তিষ্ক শয়তানের আড্ডা যে যতো বেশি ব্যস্ত তার জীবন ততো সুন্দর।সবার সুস্থতা প্রত্যাশা করে আজ এখানেই শেষ করছি।

IMG_20230307_020842.png

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY6ryCgnizd4SmozHPACxnHF8Lc4cYHYazhMMYtnXHUFLoeHg6pvGz8XiqU4kJ9G4Wwh7s6WvRRrwCpUijw4cW.jpeg

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

Break3.jpg
Banner User.png
Break3.jpg

আমি অতসী চাকী (বৃষ্টি) । নতুন নতুন রেসিপি বানিয়ে সবাইকে খাওয়াতে আমার ভাল লাগে। আর ভাল লাগে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে। আমি "ভাল কাজের, ভাল ফল কথাটাতে" মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং মেনে চলার চেষ্টা করি।

Break3.jpg

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovfEfMUsxphK2C94MUmPesRzxucV6L5C5WztC1e4L1hqcx2mH3BcV9oEFqiwTsErcMQNvVa4puc9hxr4N1FcnerVs (1).gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ঘুম না এসে বেশ ভালো হয়েছে আপু আপনার সারাদিনের ব্যস্ত সময় টা আমাদের মাঝে শেয়ার করে ফেললেন। মাঝে মাঝে কয়েকটা দিন এমন আসে মনে হয় ব্যস্ততা যেন শেষই হয় না। আমারও আর চার পাঁচ দিন বা অসুস্থ থাকায় সারাদিন যে কিভাবে যাই বুঝতেই পারি না। আপনার মেয়ে এবং আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপু। সবাই সব সময় ভালো ও সুস্থ থাকবেন এই কামনাই করি।

হ্যাঁ আপু ঘুমিয়ে পড়লে তো আজকে আর গল্প গুলো শেয়ার করা হতো না।আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি আপু।ধন্যবাদ।

আসলে আপু আপনি কেন আমার মনে হয় প্রতিটি মায়ের বাচ্চারা বাইরে থাকলে ঘুম আসে না। আর বর্তমান স্কুল কলেজে বেতন বাকি থাকলে প্রবেশপত্র দেয় না। যাইহোক আমরা মেয়েরা সারাদিন ব্যস্ত থাকি। ধন্যবাদ আপু গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

জ্বি আপু বাচ্চারা বাহিরে থাকলে অস্থিরতা কাজ করে।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপু।