হ্যালো বন্ধুরা
সবাইকে আমার নমস্কার,আদাব।আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।
আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।আজ তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আবারও নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করছি আশাকরি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
কয়েকদিন আগে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।মাঝে অসুস্থ থাকার কারনে বাকি অংশটুকু শেয়ার করতে পারিনি তাই আজ বাকি অংশটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
প্রথম পর্বের লিংক
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম মেয়েকে উদ্ভাস কোচিং এ তিন মাসের পরীক্ষার জন্য ভর্তি করাবো।আর তাই বগুড়ায় গিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক মতো ৮ হাজা টাকা দিয়ে অনলাইন ব্যাচে ভর্তি করানো হলো। বগুড়া আমার এখান থেকে ৩০ কিলোমিটারের দুরত্ব তাই একদিন পর পর ওখানে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়াটা খুবই কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।তাই অনলাইন ব্যাচ টাই আমার কাছে সুবিধাজনক মনে হয়েছে।ভর্তি করানোর পর ওখান থেকে ১২ টি প্রশ্নব্যাংক বই দেওয়া হয়।সবকিছু ফর্মালিটি শেষ করে ওখান থেকে বেড়িয়ে আসি।বই গুলো আমার হাতে ছিলো রিক্সায় উঠার সময় আমার হাসবেন্ড বললো এতোগুলা বই তুমি নিতে পারবা না আমাকে দাও।আমি তার হাতে বইগুলো দিয়ে রিক্সায় উঠে বসি তারপর আমরা গন্তব্যে পৌঁছায় বাসে উঠার জন্য।
আমি প্রথমে রিক্সা থেকে নেমে পড়ি তারপর আমার হাসবেন্ড রিক্সার উপরে বইগুলো রেখে ভাড়া মিটাচ্ছিলো,ঠিক সেই মুহূর্তে একটি বাস এসে হাজির। আর তখন আমার হাসবেন্ড বললো তুমি বাসে গিয়ে উঠে বসো আমি আসছি।আমি উঠে সিট নিয়ে বসে পড়লাম আর তার মধ্যেই আমার হাসবেন্ড এসে পড়লেন এবং পাশে বসলেন।বাস সাথে সাথেই ছেড়ে দিয়েছে তখন আমার হঠাৎ করে বই এর কথা মনে হলো তখন আমি তাকে বই এর কথা জিজ্ঞেস করলাম আর সে হতভম্ব হয়ে বললেন যে বই তো আনি নাই!এই কথা বলে সাথে সাথে বাস থামিয়ে আমরা নেমে পড়ি এবং একটা রিক্সা নিয়ে সাথে সাথে বাসস্ট্যান্ডে চলে যাই গিয়ে সেই রিক্সাওয়ালাকে খুঁজতে থাকি।কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো মাত্র ৩-৪ মিনিটের ব্যবধানে রিক্সাওয়ালা ওখান থেকে চলে গেছেন কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া গেলো না।তারপর একজন পরামর্শ দিলেন যে পাশে দেখেন মাইক আছে ওনাকে গিয়ে বিষয় টি জানান তাহলে উনি মাইকে বললে যদি রিক্সাওয়ালা আশেপাশে থাকে তাহলে অবশ্যই দিয়ে যাবে।আমরা ওনার কথামতো তাই করলাম কিন্তু কেউ আসলো না।তারপর বাসস্ট্যান্ডে আরও এক ঘন্টার মতো অপেক্ষা করলাম যদি ফিরে আসে!কোনোকিছুতেই কিছু হলো না।আমি তো সেই কান্না করছিলাম বইগুলো বাইরের না উদ্ভাস কোচিং এর নিজস্ব তৈরি তাই কিনতেও পারবো না।যত ভাবছি আর ততই কান্না পাচ্ছে আর এগুলো দেখে আমার হাসবেন্ড খুবই মর্মাহত হলেন।
কি আর করা বাসায় এসে কোচিং সেন্টারে বিষয় টি জানানো হলো। ওনারা বললেন এই বই তো আর দেওয়া সম্ভব না তার৷ কারন একজন শিক্ষার্থীর জন্য একসেট বই বরাদ্দ কথাটা শুনে আমার হাসবেন্ড বললেন টাকা যত লাগে লাগুক তাও একসেট বই ব্যবস্থা করে দিন।ওরা টাকার বিনিময়ে দিতে রাজি নন তবে আশ্বস্ত করলেন যে বই বেশি হলে আমরা এমনিতেই দিয়ে দিবো।কয়েকদিন পর আমি বগুড়ায় গেলাম বই এর খোঁজে তখন তারা কোনোভাবেই দিতে রাজি নন বলে এখনো ঢাকা থেকে বই আসেনি আসলে পাবেন।আবারও খালি হাতে ফিরে আসলাম।এভাবেই মেয়ে কয়েকটা পরীক্ষা দিলো মোটামুটি ভালোই করেছে প্রতিটি পরীক্ষায় তখন শুধু মনে হতো যদি বই গুলো পড়তো তাহলে হয়তো আরও অনেক ভালো করতো!আবার ওদের সাথে কথা বলে বগুড়ায় গেলাম ওমা যাওয়ার পর সেই একই কথা!শুনে খুব রাগ হলো তখন আমার একজন আত্মীয় পুলিশ ইন্সপেক্টর ওখানে কর্মরত আছেন তাকে ফোন দিয়ে বললাম দাদা এই এই বৃত্তান্ত আপনি কি আমাকে হেল্প করতে পারবেন!তখন উনি বললো তুমি ওখানেই থাকো আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি।আমি খুবই অসহায় এর মতো বাইরে ওয়েটিং রুমে বসে আছি।কিছুক্ষণের মধ্যে অসীম দা আসলেন তারপর আমরা দুজনে মিলে উপরে গেলাম।উপরে গিয়ে অসীম দা বিষয় টি বললেন যে আপনারা যদি বই না দেন সেটা একেবারে সাফ জানিয়ে দিন আর যদি দেন তাহলে এরকম করছেন কেনো?উনি ডিউটিরত অবস্থায় এসেছেন তাই ইউনিফর্ম পড়া ছিলো ওনাকে দেখে তখন আর কারো মুখে কোনো কথা নাই।
তারপর অসীম দা কে একটা ফোন নাম্বার দিয়ে বললেন স্যার আপনি একটু এই নাম্বারে কথা বলেন।অসীম দা কথা বললেন তারপর ফোনটা অফিসের লোক টাকে দিলেন উনি কথা বললো আর সাথে সাথে আমাকে একসেট বই দিয়ে দিলেন।বই পেয়ে আমি তো সেই খুশি কারন আমি খুবই চিন্তার মধ্যে ছিলাম অনেক দিন ধরে সেই চিন্তা আমার এক নিমেষেই দূর হয়ে গেলো।বই নিয়ে ওখান থেকে আমরা বেড়িয়ে আসলাম আর অসীম দা আমাকে বললেন এটা আমাকে আরও আগে জানাওনি কেনো তাহলে তো তোমাকে এত্তো হয়রানি হতে হতো না,আমি বই নিয়ে পাঠিয়ে দিতাম।যাইহোক পরে উনি আমাকে বাসে উঠিয়ে দিলেন আমি খুশি মনে বাসায় চলে আসলাম।
আমার জীবনে এরকম কোনো ঘটনার সম্মুখীন হইনি এটাই ছিলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় একটা তিক্ত ঘটনা।সবমিলিয়ে খুবই বাজে একটা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো।আমি কখনোই এই ঘটনাটি ভুলবো না।
ধন্যবাদ সবাইকে।
বেশ কয়েকদিন আগেই তোমার তিক্ত অভিজ্ঞতার ১ম পর্ব পড়ে অপেক্ষায় ছিলাম ২য় পর্বের জন্য। পরে কী হলো সেটা জানার জন্য বেশ অধীর আগ্রহে ছিলাম। আসলে তুমি তো এমনিই মেয়েদের পড়াশোনার বিষয় এ খুব সিরিয়াস। আর আসলেই সব জায়গায় ই ক্ষমতা থাকলেই অনেক কিছু করা সম্ভব। সাধারণ মানুষের জায়গায় খালি ভোগান্তি আর ভোগান্তি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই পোস্টের প্রথম পর্ব যখন পড়েছিলাম, তখন থেকেই ভাবছিলাম উদ্ভাস কোচিং তো বেশ জনপ্রিয় আমাদের দেশে, তবে তিক্ত অভিজ্ঞতা কিসের সেটাই ভাবছিলাম। তো এই পর্ব পড়ে বিস্তারিত জানতে পারলাম। আসলে আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনিক লোক ছাড়া, সাধারণ মানুষদের কথা দাম দেয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। ভাগ্যিস আপনার আত্নীয় পুলিশ ইন্সপেক্টর, নয়তো বই আর পাওয়া হতো না। আপনি সবসময়ই খুব সিরিয়াস আপনার মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে,এই জিনিসটা খুব ভালো লাগে আমার কাছে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit