রংপুর, তাজহাট জমিদার বাড়িতে কাটানো কিছু মুহূর্ত।

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

হ্যালো

আমার বাংলা ব্লগ বাসী, সবাইকে আমার নমস্কার, আদাব। আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন? ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও ভালো আছি।

বাংলাদেশের রংপুর শহরের পুরান রংপুর তাজহাটে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ আছে যা এখন যাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাজবাড়িটি রংপুর শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাজহাট জমিদার বাড়িটি মূলত গোবিন্দ লালের পুত্র গোপাল লাল(জি এল রায়)
এর সাথে সম্পর্কযুক্ত যা স্থানীয়ভাবে তাজহাট জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। এ বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা মান্না লাল রায়। তিনি সুদুর পাঞ্জাব হতে রংপুরে বিশিষ্ট সমৃদ্ধ স্থান মাহিগঞ্জে স্বর্ন ব্যবসা করার জন্য এসেছিলেন।
IMG_20220918_190737.jpg

বেশকিছু দিন থেকেই ভাবছিলাম কোথাও থেকে ঘুরে আসি,কিন্তু কোথায় যাবো বুঝতে পারছিলাম না প্রথমে ভেবেছিলাম ঢাকায় ঘুরতে যাবো কিন্তু পরে মনে হলো ঢাকার মতো যান্ত্রিক শহরে ঘুরতে যাওয়ার চেয়ে ধারে কাছে কোথাও সুন্দর পরিবেশ থেকে ঘুরি আসি, তাই আর দেরি না করে রংপুর এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। আমার বড় কাকার বাসা রংপুর শহরে তাই থাকার কোন অসুবিধে নেই, কাকার বাসায় গিয়ে উঠলাম।

প্রথমদিন কোথাও ঘুরতে গেলাম না খাওয়া দাওয়া সেরে একটু বিশ্রাম নিলাম। রাত থেকে শুরু হয়ে গেলো বৃষ্টি তখন মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো,কোথাও মনে হয় আর ঘোরা হবেনা যদি আকাশের পরিস্থিতি এরকম থাকে এই ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম, ঈশ্বর মনে হয় আমার মনের কথাগুলো শুনতে পেয়েছেন তাই সকালে উঠে দেখি আকাশ মোটামুটি ভালোই আছে কোন বৃষ্টি নেই।

সকালের খাবার খেয়ে রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। প্রথম এ রিক্সায় করে পায়রা চত্বরে গেলাম, ওখান থেকে একটি অটোরিকশা ভাড়া করলাম ৬০ টাকা দিয়ে তারপর চলে গেলাম তাজহাট জমিদার বাড়ির সামনে। গিয়ে প্রথমে টিকিট কাউন্টারে আমার ছোট ভাই গিয়ে চার টা টিকিট সংগ্রহ করলো প্রতি টিকিট এর প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা করে তিনটা আর আমার ছোট মেয়ের ৫ টাকা দিয়ে একটা মোটা চারটা টিকিট কাটা হলো।
photoCollageMaker_20220918_212458882.jpg

টিকিট নিয়ে আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম মেইন গেটের সামনে থেকে রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধ ভাবে গাছ লাগানো রয়েছে, আস্তে আস্তে আমরা জমিদার বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে লাগলাম যেদিকে তাকাচ্ছি সেদিকেই শুধু সবুজ গাছ পালার সমারোহ দেখে জুড়িয়ে গেলো। একসময় আমরা জমিদার বাড়ির মূল আকর্ষণ যে সিঁড়ি তার সামনে এসে হাজির হলাম।
photoCollageMaker_20220918_212614414.jpg

শ্বেত পাথরে মোড়ানো সিঁড়ি গুলো দেখতে খুবই চমৎকার লাগছিল।সিঁড়িতে বসে নিজের একটা সেলফি তুলে নিলাম।
IMG_20220918_222843.jpg

তারপর জমিদার বাড়ির উঠোন বাড়ির দিকে প্রবেশ করলাম। সিঁড়ির নিচ দিয়ে প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করলাম এখন যাদুঘর বন্ধ আছে তাই প্রতিটি রুমে তালা দেওয়া আছে, আগামী ২৪ তারিখে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রাসাদের উঠোনে গেলাম কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম।
photoCollageMaker_20220918_225414304.jpg

তারপর চারদিক টা খুব ঘুরে ঘুরে দেখলাম, প্রাসাদ থেকে বের হয়ে এসে পুকুর পাড়ে গেলাম। পুকুরে খুব বেশি জল নেই মাঝে খানে কিছুটা জল আছে আর পুরো পুকুর জুড়ে লাল শাপলা পাতা ফুলের কলি দিয়ে ভরা ছিল।
IMG_20220918_231658.jpg

এরপর বের হয়ে ফুল বাগানে চলে আসলাম, নানা রঙের ফুল গাছ দিয়ে ভরা এক অপরূপ সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা পুরো বাগান।
photoCollageMaker_20220918_231837983.jpg

photoCollageMaker_20220918_225336234.jpg

সবমিলিয়ে অসাধারণ একটা দিন পার করেছিলাম জমিদার বাড়িতে। এরকম পরিবেশে গেলে শরীর মন নিমেষেই ভালো হয়ে যায়।আমার তো খুবই ভালো লেগেছে, মেয়েরাও খুব মজা পেয়েছে। আশাকরি আগামীতে আরও একবার ঘুরতে যাবো তাজহাট জমিদার বাড়িতে।
IMG_20220918_190737.jpg

আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে অন্য কোন সময়ে অন্য কোন বিষয় নিয়ে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা করি।

ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার@bristychaki
ডিভাইসVivo Y30
লোকেশনতাজহাটজমিদার বাড়ি রংপুর

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি শুরুতে জমিদার বাড়ি সম্পর্কে অনেক কিছু লিখেছেন যা জানা ছিল না, আজকে জেনে নিলাম। এই জমিদার বাড়িতে আমি রংপুরে থাকাকালীন সময়ে একবার গিয়েছিলাম। আসলে জায়গাটা খুব সুন্দর। কারণ এত সবুজ গাছপালা লাগানো যে নিমিষেই মন প্রাণ ভালো হয়ে যায় । জমিদার বাড়ির এই আকর্ষণীয় সিঁড়িটার সামনে গেলে সবাই ছবি তুলে। তাছাড়া আমি যখন গিয়েছিলাম তখন জাদুঘর খোলা ছিল । আমি অবশ্য ভিতরে উঠানে যায়নি। আপনার ছবির মাধ্যমে উঠানটাও দেখা হয়ে গেল। এরপর রংপুরে গেলে আবারো এই জমিদার বাড়িতে যাব ভাবছি। আপনার ছবিগুলো দেখে আবার যাওয়ার ইচ্ছা জেগে উঠলো।

জমিদার বাড়িতে আপনার কাটানোর সময়টুকু অনেক ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটানোর পাশাপাশি ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আসলেই অনেক ভালো সময় পার করেছি।

আসলেই জায়গাটি অসাধারণ।প্রথমত জমিদার বাড়ির শ্বেত শুভ্র সৌন্দর্য, তারপর আশেপাশের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য।আর জাদুঘরে থাকা প্রাচীণ জিনিস গুলো তো অসাধারণ।ধন্যবাদ কাকিমা এত সুন্দর একটি জায়গা আমাদেত মাঝে তুলে ধরার জন্য।

একদম ঠিক বলেছো, ওখানার মনরোম প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই অসাধারণ। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আসলে জমিদার বাড়ির জায়গাটা দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। পুকুরে লাল শাপলা পাতা ফুলের কলি দিয়ে ভরা ও নানা রঙের ফুল গাছ দিয়ে ভরা এক অপরূপ সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা পুরো বাগান, যা দেখতে অনেক চমৎকার লাগছে। আপনি ঠিক বলেছেন এরকম পরিবেশে গেলে শরীর মন নিমেষেই ভালো হয়ে যায়।সব মিলে অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন জমিদার বাড়িতে।

জ্বি আপু এরকম পরিবেশে গেলে সত্যি শরীর মন ভালো হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

জমিদার বাড়ি বলে কথা, সত্যিই খুব সুন্দর জায়গা। প্রকৃতি, ফুল যেখানে আছে, তা সুন্দর না হয়ে কি পারে 🥰 অনেক ভাল লাগলো আপু দেখে। আপনাকেও তার পাশে সতেজ লাগছে 😍অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য। গাছপালা সুন্দর মনোরম পরিবেশে গিয়েছি তাই এত ফ্রেশ লাগছে আমাকে। 🙂

একদম ঠিক বলেছেন যান্ত্রিক শহরে আসলে কি বা দেখতে আর ভালো লাগে। সবকিছু যেমন ইট পাথর এর গড়া। মানুষের মনটাও সেরকম হয়ে যাচ্ছিল। যাই হোক আপনি সুন্দর একটি পরিবেশে ঘুরে এসেছেন, এটাই আসলে মনের তৃপ্ততা। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য।

এই জমিদার বাড়িতে আমি অনেক আগে একবার গিয়েছিলাম ।আর আপনি জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা মান্না লাল রায় সেটিও উল্লেখ করেছেন অনেক কিছু জেনেছেন জমিদার বাড়ি সম্পর্কে। রংপুরে আপনার চাচার বাড়ি দেখে আপনি হুট করে চলে যেতে পেরেছেন। এখনকার আবহাওয়ার যে অবস্থা হুটহাট বৃষ্টি নেমে আসে এই সময় ঘুরতে যাওয়াটা আসলেই একটু টেনশনের ব্যাপার। ঠিকই বলেছেন এই জমিদার বাড়ির মূল আকর্ষণটা সিঁড়ি ।সিঁড়িটা অনেক বড় সিঁড়ির উপর বসে আমিও বেশ কিছু ছবি তুলেছিলাম আজকে আবার অনেকদিন পরে দেখতে পেলাম ভালো লাগলো। আপনি সাথে বেশ কিছু ফুলের ছবি ও দারুন দারুন ফটোগ্রাফি শেয়ার করছেন খুবই ভালো হয়েছে।

জ্বি আপু আবহাওয়া টা অনেক খারাপ ছিল মনে হয় কখন না বৃষ্টি চলে আসে, তারপরও বেশ ভালো সময় কাটিয়েছি। ধন্যবাদ আপু।

ঠিকই বলেছেন আপু ঢাকার মতো যান্ত্রিক শহরে ঘুরতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। রংপুরের রাজবাড়ী বাহ বেশ দারুণ তো। আপনার পোস্ট থেকে জানতে পারলাম অনেক কিছু। টিকিটের মূল‍্য টাও বেশি না এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ টাও বেশ চমৎকার। অনেক সুন্দর পোস্ট ছিল আপু। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

রংপুর গিয়ে ভ্রমণ করে আমাদের মাঝে তাজহাট জমিদার বাড়ির রঙের মেলা ছড়িয়ে দিয়েছেন।। খুবই ভালো লেগেছে আপনার কাছে আপনার ফটোগ্রাফি গুলা এবং জমিদার বাড়ি সম্পর্কে আপনার তথ্যবহুল আলোচনা।। যদিও আমি বেশ কিছুদিন আগে রংপুরে গিয়েছিলাম তবে এত সুন্দর একটি দর্শনীয় জায়গা রয়েছে সেটা আমি জানতাম না।। জানলে অবশ্যই ভ্রমণ করে আসতাম।। ধন্যবাদ আপু জমিদার বাড়ির ফটোগ্রাফি এবং তথ্যবহুল আলোচনা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।।

হ্যাঁ ভাইয়া, রংপুর এ তাজহাট জমিদার বাড়ি অনেক সুন্দর একটি জায়গা আছে, এর পরের বার রংপুর এ গেলে ঘূ্রে আসবেন, আশাকরি অনেক ভালো লাগবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।

ঘোরাঘুরি করতে কেনা পছন্দ করে আপনি একটি কথা ঠিকই বলেছেন ঢাকা ঘোরাঘুরি করার চেয়ে অন্যান্য জেলাতে দর্শনীয় জায়গা গুলোতে যাওয়াই পারফেক্ট কারণ ঢাকার যান্ত্রিক শহরে নিজের জীবনটাই অমূল্য হয়ে দাঁড়ায়। রংপুর তাজহাট জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক দৃশ্য দেখে অনেক ভালো লাগলো আপু।

তাজহাট জমিদার বাড়ির খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য প্রদান করেছেন আপনি। পাশাপাশি তাজহাট জমিদার বাড়ি ভ্রমণের অনেক সুন্দর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। জমিদার বাড়িটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। তাছাড়া বিভিন্ন ফুলের ফটোগ্রাফি গুলো প্রতি চমৎকার হয়েছে। তাজহাট জমিদার বাড়ির শ্বেত পাথরে মোড়ানো সিঁড়ি গুলোর ফটোগ্রাফি আরো একটি স্পষ্ট করে তুললে দেখতে আরো বেশি ভালো লাগতো।

সিঁড়িতে বসে কিছু ছবি তোলা হয়েছিল কিন্তু এককভাবে সিঁড়ির ছবি তোলা হয়নি ভাইয়া। এখন তো বিভিন্ন রকমের টাইলস দিয়ে বাড়ি বা সিঁড়ির সৌন্দর্য করা হয় কিন্তু এত পুরোনো একটা বাড়ির সিঁড়ি যে এত সুন্দর হতে পারে আমি সত্যি বেশ অবাক হয়ে গেছি। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

দিদি আমাদের রংপুর বিভাগ যেন এক সৌন্দর্যে ভরা ৷এটি বাংলাদেশর শেষ উত্তরে অবস্থিত ৷যদিও দেশ স্বাধীনের আগে রংপুর তাজহাট জমিদার বাড়ি ৷তখন ছিল জমিদার আমলের ঘটনা ৷কিন্তু দেশে যুদ্ধ হওয়াতে সবকিছু আজ ধংশ হয়েছে ৷যদি ও এখন সেগুলো সৃতি হয়ে আছে ৷তবে এখন কিছু কাজ করেছ দর্শনীয় স্থান বানিয়েছে ৷যদিও আমি অনেক দিন আগে গিয়েছিলাম ৷
রংপুর হলো বিভাগ
যাই হোক আপনি ঢাকা না যেয়ে এই সুন্দর একটি পরিবেশে এসেছেন ৷যেখান থেকে কিছু পুরনো দিনের ঐতিহের কিছুটা হলেও আন্দাজ পাওয়া যাবে৷ভালো করেছেন দিদি