মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি তবে শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ আছি।
আমি @bristychaki "আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি আশাকরি আজকের পোস্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে।
বিপদ-আপদ মানুষের নিত্যসঙ্গী। বিপদ বলে-কয়ে আসে না। কখন কার ওপর সমস্যা, দুর্বিপাক নেমে আসে তা কেউ জানে না।মানুষের জীবনে বিভিন্ন ধরনের বিপদ এসে থাকে। এটি সকল মানুষের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে বিপদ কখনো না কখনো এসে থাকে মানুষের জীবনে, বিপদ আশা টাই স্বাভাবিক। আমাদের সব সময় এক রকম যাবে এটার কোনো মানে হয় না । আমরা কখনো অনেক ভালো থাকি আবার কখনো বিপদে থাকি।
সেদিনের ঘটনা দুপুরবেলা খেয়েদেয়ে একটু রেস্ট করছিলাম। @shapladatta বৌদি বললো সে বাজার করতে আমাদের উপজেলা শহর শাদুল্লাপুরে যাবে এই কথা শুনে কেনো জানি আমারও যেতে ইচ্ছে করলো,সেই কবে সাদুল্লাপুরে গিয়েছিলাম তা আমার মনে নেই!বাড়িতে গেলে খুব একটা বেড়ানো হয় না,বছরে যাই দুই একবার ও খুবই সামান্য সময় নিয়ে আর সেই দুই দিনের জন্য গিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবো সেরকম সময় সুযোগ হয়েই ওঠে না।এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরতেই দুদিন চলে যায় মাঝে দুই এক দিন রেস্ট করে আবার নিজের গন্তব্যে ফিরে আসি।তাই আলাদা করে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মতো সময় হয় না।এবার অনেকদিন পর বেশ কিছুটা ছুটি হাতে নিয়েই বাড়িতে গিয়েছিলাম যাতে কয়েকদিন শান্তিতে থাকতে পারি এবং চিরচেনা জায়গাগুলো একটু ঘুরতে পারি।আর তাই শাপলা বৌদিকে বললাম আমিও তোমার সঙ্গে যাবো!
বিকেল বিকেল দুজনেই বেরিয়ে পড়লাম আন্ডা বাচ্চা গুলোকে বাড়িতে রেখে আমরা দুজনেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও গেলে তাদের বাহানা মেটাতেই জীবন শেষ হয়ে যায়!আর আমাদের বাচ্চাগুলো এখন বেশ বড় হয়ে গেছে তাই ওদেরকে সাথে না নিলেও চলে,শুধু আসার সময় লোভনীয় কিছু হাতে করে আনতে হয়।যদি একটু ভুল হয় তাহলেই বিপদ!প্রথমে আমরা একটা ভ্যানে উঠি সেখান থেকে আমাদের বাজারে গিয়ে নামি,সেখানে হালকা কিছু কাজ ছিলো সেগুলো সেরে আমরা দুজন মিলে অটোরিক্সায় উঠি।বাজার থেকে সাদুল্লাপুরের ভাড়া জন প্রতি ১০ টাকা সেদিন আমাদের কপাল মনে হয় ভালো ছিলো অটোরিক্সায় আমরা দুজন ছাড়া আবার কোনো যাত্রী ছিলো না।তাই আমরা মনের সুখে হাত পা ছড়িয়ে সারা রাস্তায় গল্প করতে করতে ছবি ভিডিও ধারণ করেছিলাম।
মিনিট ১৫ এর মধ্যেই আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে যাই।অটোরিক্সা থেকে নেমেই দেখি ভাঁপা পিঠা তৈরীর প্রস্তুতি চলছে!মাটির চুলা পিঠার পাতিল আশেপাশের বাসনপত্র সবকিছুই খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি ছিলো,এরকম সুন্দর একটি পরিবেশ দেখে খুবই মন চাচ্ছিলো ভাঁপা পিঠা খেতে।লোভ সামলাতে না পেরে আমরা দুজন বসেই পড়লাম।তখনও পিঠা তৈরি হয়নি তবে প্রস্তুতি শেষের দিকে তাই খুব একটা অপেক্ষা করতে হয়নি।আমরা দুজন বসেই ছিলাম, মাটির চুলায় যখন পাতিলে জল ফুটছিলো পাতিলের ঢাকনার ছিদ্র থেকে জলের বাষ্প গুলো উপর দিকে উঠে আসছিলো।নিচে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে আর উপর থেকে বাষ্প উঠছে এই দৃশ্য টি দেখতে খুবই ভালো লাগছিলো।আমি বসা থেকে উঠে চুলার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করতে যাচ্ছিলাম ক্যামেরার দিকে তাকাতে কখন যে চুলার একদম সংস্পর্শে চলে এসেছি সেটা বুঝতে পারিনি।আমি আমার মতো করে ছবি তোলার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলাম।হঠাৎ করেই পাশে আর একজন ভদ্রমহিলা বসা ছিলেন উনি চিৎকার করে উঠলেন!আর বলতে লাগলেন দূরে সরে আসুন আপনার জামায় আগুন লেগে যাবে,হ্যাঁ সত্যিই আমি তাকিয়ে দেখি আগুনের ছ্যাকা লেগে জামা বেশ খানিকটা কুঁকড়ে গেছে।আমি তো দেখার সাথে সাথেই ভয় পেয়ে দূরে সরে এসেছি!জামার দিকে তাকিয়ে আমার শরীর হাত পা কাঁপতে লাগছিলো।এটা ভেবে যে আমার পড়া জামা কাপড় সিনথেটিক কাপড় ছিলো আর এই কাপড়ে একবার আগুন লেগে গেলে খুব দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যায়।আর শীতের দিন তার মধ্যে গায়ে অনেক শীতের পোশাক পড়া ছিলো।যদি কোনোক্রমে একবার আগুন লেগে যেতো তাহলে খুবই ভয়ংকর রকমের পরিস্থিতি তৈরি হতো সেটা ভেবেই আমার শরীর কাঁপছিলো।তারপর কোনোরকমে বসে পড়লাম আর বারবার এটাই মনে হচ্ছিলো যদি আগুন লেগে যেতো তাহলে আমার কি অবস্থা হতো এখানেই মৃত্যু নিশ্চিত!
এগুলো ভাবতে ভাবতেই ভাঁপা পিঠা তৈরি হয়ে গেলো আমি এবং শাপলা বৌদি দুজনে দুটো পিঠা নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।খাওয়া শেষে একটা চিতই পিঠা ও ভর্তা নিলাম খেতে বেশ সুস্বাদু ছিলো।সবকিছুই অনেক ভালো ছিলো কিন্তু আগুন লাগার ঘটনাটি কোনোভাবে মন থেকে দূর করতে পারছিলাম না তাই খাবারের তৃপ্তি টা সেভাবে অনুভব করতে পারিনি মনের মধ্যে একটা অজানা ভয় কাজ করছিলো বারবার শুধু এটাই মনে হচ্ছিলো অনেক বড় ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে গেছি।আগুনে পোড়ার কি যে জ্বালা সেটা তো আমরা সকলেই কমবেশি জানি।ভাবলেও বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে এখনো!হয়তোবা সেদিন ঈশ্বর সহায় ছিলো বলেই অল্পের জন্য পুড়তে পুড়তে বেঁচে গেছি।আসলে আমাদের জীবনে কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটবে আমরা কেউ জানিনা তার জন্য প্রস্তুত থাকি না অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই আমাদের জীবনে ঘটে যায় অনেক ধরনের দুর্ঘটনা।কখনো ঈশ্বর সহায় থাকে বলে আমরা বেঁচে যাই আবার কখনো বা দুর্ঘটনার স্বীকার হই।তাই আমাদের সকলের উচিত জীবনের প্রতিটি দিন প্রতিটি মুহূর্ত ঈশ্বরের নাম স্মরণ করা এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।🙏সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এবং নিরাপদে থাকবেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বেশ অনেক কিছু শেয়ার করেছেন এই পোস্টে। ভালো লাগলো একটা কথা "আন্ডার বাচ্চা" শব্দটা। একটা ভালো লাগার কথা ছিল স্থানটার নাম। যাই হোক সেখানে গিয়েছেন কবে সেটা মনে নেই, আবারো যাওয়ার সুযোগ করেছেন এটা ভালো। এদিকে আগুনের বিষয়টা সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। আমিও প্রতিনিয়ত রান্নাঘরে চুলায় রান্না করে থাকি। তাই এই বিষয়ে অনেক সজাগ থাকতে হয় আমার। যাহোক শীতের সময় কিন্তু পিঠা খাওয়ার সময়। আমিও ভুল করি নাই, বেশ কয়েকবার পিঠা তৈরি করেছি। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। সুন্দর ভাবে পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন বিপদের সময় মাঝে মাঝে এসে উপস্থিত হয়। তাই জন্য রাস্তাঘাটে একদম দেখেশুনে চলাফেরা করবে। যাতে চট করে কোন রকম বিপদ এসে স্পর্শ করতে না পারে। কারণ এই ধরনের বিপদ হঠাৎ হাজির হলে তা দীর্ঘমেয়াদী একটি ক্ষতিসাধন করে যেতে পারে। কিন্তু তখন আর সেই মুহূর্তটা ফিরে পাওয়া যাবে না। তাই জল আগুন এইসব জিনিসের থেকে দূরে থাকবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেদিনের কথা মনে হলে গা শিউরে ওঠে।খুবই ভয়ংকরী অবস্থা হতে পারতো।ভাগ্যিস ভদ্রমহিলা দেখেছিলো কারণ আমরা দুজনে ফটোগ্রাফি করতে ব্যাস্ত ছিলাম।বেশ সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি। গরম গরম পিঠা খেতে দারুণ লেগেছে। ধন্যবাদ সুন্দর সময় কাটানোর মূহুর্ত আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সময় এরকম হয়ে থাকে আপু আগুনের পাশে দাঁড়ালে আগুনের তাপ জামা এসে লাগলে জামা পুড়ে যায় ।যাই হোক আপনার কিছু বড় সমস্যা হয়নি এটাই ভালো ।ধন্যবাদ আপু শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টুইটার লিংক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এইটা একদম ঠিক দুর্ঘটনা কখনো বলে কয়ে আসেনা। যাক অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তবে অবশ্যই সবদিক দেখেশুনে চলাফেরা করার চেষ্টা করবেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit