নমস্কার
পোস্টের নাম | ব্যবসার অভিজ্ঞতা |
ডিভাইস | Realme 5 |
স্থান | কলকাতা |
পোস্টদাতা | @bull1 |
এর আগে দুটো পর্বে আমি আপনাদের জানিয়েছিলাম আমার মসলার ব্যবসার তিনটি অভিজ্ঞতার কথা।
এইগুলো আমি এই আশায় সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছি যে‚ আমার অভিজ্ঞতাগুলো হয়তো নতুন কাউকে তার নিজের স্বাধীন ব্যবসায় আনকোরা অবস্থায় সাহায্য করবে। যদি আমার কারনে একজনও কোনো সুবিধা পায়‚ যদি আমার জন্য একজনেরও সামান্যতম ভালো হয়‚ তবে তার থেকে ভালো জিনিস বা ভালো পাওনা বোধহয় আর কিছুই থাকতে পারে না।
আমি ব্যবসায় চতুর্থ যে অভিজ্ঞতার কথা বলব তাহলো পরিশ্রমের মূল্য। ব্যবসা করতে গেলে যে জিনিসগুলো মূল উপাদান হিসেবে ধরা যউচিত‚ তার মধ্যে একটি হল অবশ্যই পরিশ্রম। আমি যেখানে গুঁড়ো মসলা ভাঙাতে যাই সেখানে পাশাপাশি দুটো দোকান আছে। দুটোতেই বিভিন্ন মসলা পাইকারি কেনা যায়‚ দুটোতে ভাঙানোর কল আছে‚ দুটোতেই লোকজন মসলা কিনে ভাঙিয়ে নিয়ে চলে যায়।
দোকান দুটোর মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। যেমন একটা দোকান খুব সাজানো গোছানো‚ পরিষ্কার ঝকঝকে আর অন্যটা গোডাউন ধরণের। ঝকঝকে দোকানটা অনেক বড় আর অন্য দোকানটা ছোট। ভাঙানো মেশিনটা রাখার পর আর বস্তাগুলো রাখার পর সেই দোকানে দুহাত ছড়িয়ে দাড়ানোরও জায়গা থাকে না। কোনো পাখা পর্যন্ত নেই। গরম লাগলে দোকানদারেরা বাইরে এসে প্রাকৃতিক হাওয়া খায়। কারণ ভেতরে পাখা লাগানোর জায়গা নেই। এছাড়া যা জিনিস বিক্রি হয় তার
কোয়ালিটিও দুটো দোকানে একই রকম কারণ একই কোম্পানি থেকে দুটো দোকানে মাল নামিয়ে দিয়ে যাওয়া হবে।
কিন্তু আমি যখন প্রথম সেই পাইকারি মার্কেটে গেলাম দেখলাম গোডাউন ধরনের দোকানে মারাত্মক ভীড়‚ লোকজন ঢুকতে পারছে না। কিন্তু বড় দোকানটা মোটামুটি ফাঁকা। আমি বুঝতাম না যে ওখানে এত ভীড় কেন হয়। কী পার্থক্য? তবে কিনা ড্রাইফ্রুটস কেনার অভিজ্ঞতা থেকে আমি দেখেছি যে দোকানে বেশি ভীড় হয় সেটা অবশ্যই ভালো হয়। কারণ মানুষ বোকা না। তারা সব সময় ভালো জিনিসেরই খোঁজ করে। তাই আমিও সেই ভীড় দোকানটাতেই যেতাম। রীতিমতো লাইন দিয়ে‚ অনেক সময় নষ্ট করে ভাঙ্গিয়ে আনতাম। দু-একবার পাশের দোকানেও গেছি কিন্তু প্রধানত সেই ছোট দোকানেই যেতাম। কিন্তু কিছুতেই বুঝতাম না দুটো দোকানে ক্রেতার এত পার্থক্য কেন। কিছুদিন আগে সেটা বুঝলাম।
কিছুদিন আগে একদিন আমি গেছিলাম ভোরবেলা সাড়ে পাঁচটার সময়। কারণ দুপুর বেলা একটা আর্জেন্ট ডেলিভারী ছিল আর আমাদের কাছে মসলা ছিল ন। আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে অত সকালে কোনো দোকান খোলা থাকবে কিনা। কিন্তু গিয়ে দেখলাম যে আর সব দোকান বন্ধ কিন্তু একটা দোকান খোলা রয়েছে। আর সেটা হল সেই ছোট দোকানটা। ওই ভোরবেলা যখন রাস্তায় মানুষজন নেই বললেই চলে‚ কুকুরগুলো পর্যন্ত ঘুম থেকে ওঠেনি‚ তখন ওই দোকান খুলে ফেলেছে।
এমনকি একদিন যখন সবকিছু বন্ধ তখনও আমি আর্জেন্ট প্রয়োজনে ওই দোকানে চলে গেছি এই ভরসায় যে দোকানটা সবসময় খোলা থাকে। আর আমি গিয়ে দেখেছি সেদিন জাতীয় ছুটির দিনে সবকিছু বন্ধ হওয়ার পরেও ওই দোকানটা খোলা আছে মানে লোকজন চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারে যে ওই দোকানটা যে কোন পরিস্থিতিতেই খোলা পাওয়া যাবে! কারণ ওই দোকানের মালিকরা নিজেদের সাধ্যমত পরিশ্রম করতে জানে। আর তাই তাদের বিক্রিও বেশী হয়। ব্যবসায় উন্নতি বেশী হয়।
পরিশ্রম - ব্যবসায় সফল হওয়ার অন্যতম বড় চাবিকাঠি!
(চলবে)
আমার কথা -
আমি @bull1 পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় থাকি। বয়স ২৮ বছর। ছাত্রজীবনে ইতিহাসে আর অঙ্কে গ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করেছি। এখন শিক্ষকতা করি। আর টুকটাক লেখালেখি করার অভ্যাস আছে। |
---|
আসলে পরিশ্রম করলে আর ভাগ্যে থাকলে সব কিছুই সম্ভব। আপনার পোস্টে দুই দোকানের মধ্যে পার্থক্য পড়লাম বেশ ভালো লাগলো। দেখলাম একজনের দোকান বড়সড়ো এবং পরিষ্কার কিন্তু তার দোকানে ভিড় হয় না। কিন্তু যার ছোট দোকান গোডাউন টাইপের তার দোকানে বেশি ভিড় হয়। এটার মূল কারণ আপনি বললেন উনি সব সময় দোকান খোলা রাখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে মানুষ নিশ্চয়তা চায়। ওটা যেখানে পাবে সেখানেই ভীড় করবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ব্যবসার অভিজ্ঞতা আজকের পর্ব টি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আপনি খুব সুন্দর করে গল্পটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে আমাদের কাজের উপর সব কিছু নির্ভর করে। যেটুকু পরিশ্রম করবে সে ততটুকু ফল পাবে এটাই প্রকৃতি নিয়ম। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ঠিক তাই। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit