বার্ধক্যে একাকিত্বের কষ্ট (পঞ্চম পর্ব)

in hive-129948 •  5 days ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


এই অসময়ে সুলতান মিয়াকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে শফিক তাকে ডাকতে থাকে। কিন্তু কয়েকবার ডাকার পরও যখন সুলতান মিয়া যখন সাড়া দেয় না তখন শফিক তার গায়ে হাত দিয়ে ডাকতে গেলে দেখে। গা একেবারে বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে। শফিক বুঝতে পারে যে সুলতান মিয়া মারা গিয়েছে। সে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করতে থাকে। তার কান্নাকাটি শুনে তার স্ত্রী এবং তার আশেপাশের কয়েক বাড়ি থেকে লোকজন ছুটে আসে। সেখানে প্রতিবেশীরা এসে দেখে সুলতান মিয়া আসলেই মারা গিয়েছে। সবাই শফিককে সান্তনা দিতে থাকে।

1000001322.png

সবাই শফিককে বলতে থাকে তুমি তার রক্তের সম্পর্কে কিছু না হয়েও তুমি তার জন্য যা করেছ এটা আজকাল কজনা করে। যাই হোক একটু শান্ত হওয়ার পরে শফিক এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে সুলতান মিয়ার দাফন-কাফনের আয়োজন করতে থাকে। এদিকে সে সুলতান মিয়ার সন্তানদের কাছেও খবর পাঠায়। কিন্তু রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও যখন তারা কেউ আসে না তখন এলাকার মসজিদের ইমাম পরামর্শ দেয় আর দেরি না করে লাশ কবর দিয়ে দেয়া উচিত। কারণ গরমের দিনে আর বেশিক্ষণ লাশ বাইরে রাখলে তাতে পচন ধরবে।

শেষ পর্যন্ত এলাকার সবাই ইমাম সাহেবের কথার সাথে একমত হয়। শফিক সবাইকে সাথে নিয়ে সুলতান মিয়ার দাফন কাফন সম্পন্ন করেন। সমস্ত কিছু শেষ করে যখন শফিক বাড়িতে ফেরে। তখন বাড়িটা তার কাছে একেবারে খালি খালি লাগতে থাকে। সুলতান মিয়া যে কটা দিন ছিলেন। সেই কটা দিন শফিক তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরতো। তারপর সন্ধ্যার পরে দুই চাচা ভাতিজা মিলে অনেক গল্প করতো। আজ বাড়িতে সুলতান মিয়া বাড়িতে নেই এ কথা চিন্তা করেই শফিকের বুক ফেটে কান্না আসছিলো। বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পরেই শফিকের স্ত্রী তার হাতে সেই কাগজের প্যাকেটটা এনে দিয়ে বলে। চাচা এটা আমার কাছে দিয়েছিল তোমাকে দেয়ার জন্য। তবে আমাকে বলেছিল যেন সে মারা গেলে তখন তোমার কাছে এই প্যাকেটটা দেই। শফিক অবাক হয়ে তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে। প্যাকেটটা হাতে নিয়ে খুলে শফিক দেখে তার ভেতরে একটা দলিল। দলিলটা পড়ে দেখে সুলতান মিয়া মারা যাওয়ার আগে তার সমস্ত সম্পত্তি শফিকের নামে লিখে দিয়ে গিয়েছে। শফিক জমির দলিলটা তার স্ত্রীর হাতে দিয়ে আবার কান্নাকাটি শুরু করে। শফিকের স্ত্রী ও জমির দলিলটা দেখে অবাক হয়ে যায়।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


PUSS_Banner2.png



ধন্যবাদ

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সুলতান মিয়ার জন্য খুব খারাপ লাগলো। কিন্তু সুলতান মিয়ার ছেলে মেয়েরা কতোটা হারামি সেটাই ভাবছি। বাবার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরেও কিভাবে তারা শেষবারের মতো সুলতান মিয়াকে দেখতে গেলো না। সুলতান মিয়ার ছেলেমেয়েরা সন্তান নামের কলঙ্ক। তবে শফিকের কোনো তুলনা হয় না।