মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জীবনী
জন্ম ও শৈশব
মুহাম্মাদ (সাঃ) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল্লাহ তার জন্মের পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন এবং তার মাতা আমিনা তার শৈশবকালেই মারা যান। তাকে তার দাদা আবদুল মুত্তালিব এবং পরে তার চাচা আবু তালিব লালন-পালন করেন।
যৌবনকাল ও বাণিজ্য
মুহাম্মাদ (সাঃ) তার সততার জন্য পরিচিত ছিলেন এবং তরুণ বয়সেই তিনি আল-আমিন (বিশ্বাসযোগ্য) নামে পরিচিত হন। তিনি বাণিজ্যে প্রবেশ করেন এবং খাদিজা (রাঃ) নামক একজন ধনী বিধবার জন্য কাজ করতে শুরু করেন। তার সততা ও দক্ষতা দেখে খাদিজা (রাঃ) তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন এবং তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
নবুয়তপ্রাপ্তি
৪০ বছর বয়সে, মুহাম্মাদ (সাঃ) হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকাকালে প্রথম ওহী (আল্লাহর বাণী) পান। জিব্রাইল (আঃ) তার কাছে এসে আল্লাহর বাণী পৌছে দেন। এভাবেই তিনি আল্লাহর নবী হিসেবে মনোনীত হন।
প্রাথমিক প্রচার
মুহাম্মাদ (সাঃ) গোপনে আল্লাহর বার্তা প্রচার করতে শুরু করেন। প্রথমে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে ইসলাম প্রচার করেন। ধীরে ধীরে তার অনুসারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তবে মক্কার নেতৃবৃন্দ তার প্রচারে বিরোধিতা শুরু করেন।
মক্কায় নির্যাতন ও হিজরত
মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তার অনুসারীরা মক্কায় নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নির্দেশে তারা মদিনায় হিজরত (অভিবাসন) করেন। মদিনায় তারা উষ্ণ অভ্যর্থনা পান এবং ইসলামের প্রচার আরও বিস্তৃত হয়।
মদিনায় জীবন
মদিনায় পৌঁছে মুহাম্মাদ (সাঃ) একটি নতুন সমাজব্যবস্থা স্থাপন করেন, যেখানে সব মানুষ সমান এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল। তিনি মদিনার সঙ্গে মক্কার কুরাইশদের মধ্যে একটি চুক্তি করেন, যা হুদাইবিয়া চুক্তি নামে পরিচিত।
বিজয় ও মক্কার পুনর্গঠন
মক্কার কুরাইশরা চুক্তি ভঙ্গ করলে, মুহাম্মাদ (সাঃ) মক্কা অভিযানে যান এবং কোনো রক্তপাত ছাড়াই মক্কা বিজয় করেন। মক্কায় প্রবেশ করে তিনি কাবা ঘরকে মূর্তিপূজা থেকে মুক্ত করেন এবং ইসলামের বার্তা সর্বত্র প্রচার করেন।
শেষ বিদায়
৬৩২ খ্রিস্টাব্দে, মুহাম্মাদ (সাঃ) শেষ হজ পালন করেন, যা বিদায় হজ নামে পরিচিত। তিনি বিদায় হজের ভাষণে মানবাধিকার, নারীর অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের কথা বলেন। একই বছরে, তিনি ইন্তেকাল করেন এবং মদিনায় চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জীবনী আমাদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনধারা ও আল্লাহর পথে চলার মডেল হিসেবে রয়েছে। তার শিক্ষা ও আদর্শ আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।