প্রয়াণ দিবসে আপনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ( জীবনানন্দ দাশ)।

in hive-129948 •  4 months ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ মঙ্গলবার, ২২ ই অক্টোবর, ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000563684.jpg


প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়,হয় নাকি?’

এটা একজন বিখ‍‍্যাত কবির বিখ‍্যাত কবিতার জনপ্রিয় লাইন । ব‍্যক্তিগতভাবে এই লাইনটা আমার খুবই পছন্দের। তবে সবচাইতে ভালো লাগার ব‍্যাপার টা হচ্ছে এটার দর্শন। নক্ষত্রের হয়তো একদিন ঠিকই মৃত্যু হয়। কিন্তু প্রেম কখনোই মুছে যায় না। এটা আমার ধারণা। এটা জীবনানন্দ দাশ এর দুজনে কবিতার একটা লাইন। বাংলা সাহিত্যে রয়েছে হাজার হাজার কবি। তবে তাদের মধ্যে থেকে আমার সবচাইতে পছন্দের কবি হলেন জীবনানন্দ দাশ। জীবনানন্দ দাশকে বলা হয় প্রকৃতির কবি। তবে প্রকৃতি বাদেও তিনি প্রেম ভালোবাসা সহ অন্য বিষয় নিয়েও কবিতা লিখেছেন। তার কবিতা আমার ভালো লাগার সবচাইতে বড় কারণ তার লেখার মধ্যে যে ফিলোসফি এবং দর্শন আছে সেটা। এটা আমাকে বরাবরই আকৃষ্ট করে।

১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর এই মহান কবি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তবে কবির মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। ১৯৫৪ সালের ১৪ অক্টোবর তিনি ট্রাম দূর্ঘটনার স্বীকার হন। ট্রাম খুবই আস্তে চলে। এক্ষেত্রে ট্রাম এর সাথে এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে এক্ষেত্রে অনেকের ধারণা জীবনানন্দ দাশ আত্মহত‍্যার উদ্দেশ্যেই গিয়েছিলেন ট্রাম লাইনে। তবে তক্ষণাৎ কিছু না হলেও ট্রাম দূর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ দিন পর ২২ ই অক্টোবর অর্থাৎ আজকের দিনে উনি মৃত্যুবরণ করেন। ব‍্যক্তিগত জীবনে শেষের দিকে নাকী কবি অনেক একাকিত্বে ছিলেন। এবং সেখান থেকে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলা যায়।


1000563672.jpg


আজ সকালেই একটা বইয়ের গ্রুপে কবির মৃত্যুদিন দেখে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ তাকে নিয়েই লিখব। জীবনানন্দ দাশের প্রথম কবিতা আমি পড়েছিলাম আবার আসিব ফিরে। যেখানে তিনি মৃত্যুর পরে আবার এই বাংলায় ফিরে আসতে চেয়েছেন। ফিরে আসতে চেয়েছেন সেই ধানসিঁড়ি নদীর পাড়ে। ফিরতে চেয়েছেন কিশোরীর ঘুঙুর হয়ে। তার লেখা বনলতা সেন কে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের সেরা প্রেমের কবিতা। আজ পযর্ন্ত যত কবি প্রেম নিয়ে প্রমিকা নিয়ে কবিতা লিখেছেন কেউই জীবনানন্দ দাশ এর বনলতা সেন কবিতার আশেপাশেও যেতে পারেনি। এটা আমার কথা না। জীবনানন্দ দাশের প্রথম কাব‍্যগ্রন্থ ছিল ঝরা পালক। পরবর্তীতে ধূসর পান্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা কাব‍্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এবং তার মৃত্যুর পর রুপসী বাংলা কাব‍্যগ্রন্থ টা প্রকাশিত হয়।

কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা কবিতার আসল সংখ‍্যা সঠিক কারো জানা নেই। তবে বিভিন্ন জার্নাল এবং ম‍্যাগাজিনে তার ২৬৯ টা কবিতা প্রকাশিত হয়। এবং তার সবগুলো কাব‍্যগ্রন্থে ১৬৯ টা কবিতা স্থান পেয়েছে। জীবনানন্দ দাশ এর কবিতা আমি যতই পড়ি ততই অবাক ততই আমি ভাবতে শুরু করি।

ফিরে এসো সুরঞ্জনা:
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে

এই লাইনটার কথা ভাবুন। ঐসময়ে দাঁড়িয়ে এমন চিন্তা খুব কম সংখ‍্যক কবিই চিন্তা করতে পারতেন। নক্ষত্রের আগুন ভরা রাতে কী অসাধারণ একটা লাইন। দেখে মনে হবে এটা হয়তো গতকাল কোন একজন লেখক লিখেছে। আমাদের সবার প্রিয় বাংলা ভাষায় প্রথম মিউজিক ব্রান্ড "মহীনের ঘোড়াগুলা" নামটা নেওয়া হয়েছে কিন্তু জীবনানন্দ দাশ এর কবিতা থেকে। উনাকে নিয়ে লিখে শেষ করা যাবে না। আজ ২২ ই অক্টোবর কবির প্রয়ান দিবসে তাকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি। এবং শেষে বলতে চাই

আবার ফিরে আসুন কবি, এই বাংলায়
শঙ্খচিল বা শালিকের বেশে।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সকাল বেলা প্রত্রিকা পড়তে গিয়ে চোখে পড়লো আজকে জীবনানন্দ দাশের প্রয়াণ দিবস। ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর এই কবি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। তার বিভিন্ন কবিতার রেফারেন্স টেনে দারুন অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। ধন্যবাদ।

জীবনানন্দ দাশ সেই মানুষ বা সেই কবি যিনি জেদ করে বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত কবিতা তিনি লিখবেন না। আলাদা ঘরনার কবিতা লিখেছিলেন এবং প্রথম চিরাচরিত প্রথা ভেঙেছিলেন। জীবনানন্দ দাশের সেই জেদ ছিল, অধ্যাবসাই ছিল এমনকি ক্ষমতাও ছিল। শুরুর দিকে বেশ কিছু বই তিনি রবি ঠাকুরকে দিয়েছিলেন পড়তে। রবি ঠাকুর জীবনানন্দ দাশ কে বলেছিলেন লিখে যেতে তার লেখার হাত খুবই ভালো। প্রথা যে বদল করতে হয় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে জীবনানন্দ দাশের হাত ধরে এই সাহিত্য চিনেছে। এবং জনপ্রিয় হয়েছে।

প্রিয় জীবনানন্দ দাশ। সব থেকেও কিছু না পাওয়া কবি। আজ প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই।

হ‍্যা এটা আমিও শুনেছি। রবীন্দ্রনাথের সময়ে রবীন্দ্রনাথের বাইরে গিয়ে নিজের মতো করে লেখার সাহস তখন অন্য কোন কবি করতে পারেনি। পেরেছিলেন মাএ জীবনানন্দ দাশ।

হ্যাঁ৷ এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম। হারিয়ে গেছে না আছে জানি না৷ অনেক আগে লিখেছিলাম তো। মনে নেই কোথায় রেখেছি।

কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলার অনুভবের কবি। রবীন্দ্র পরবর্তী কবিতা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা সর্বাধিক। কলকাতায় কল্লোল আন্দোলনে জীবনানন্দ দাশ একসময় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সামনে থেকে। রবীন্দ্রনাথের ধারাকে ভেঙে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন ধারার জন্ম দেন সেই যুগে। যদিও কবি জীবিত অবস্থায় তাঁর যোগ্য সম্মান পাননি। কবিকে বুঝতে বাঙালি অনেক সময় লাগিয়ে ফেলেছিল। কবি জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে আপনার এই পোস্ট আমার ভীষণ ভালো লাগলো। কলকাতায় তাঁর ট্রাম এক্সিডেন্ট আজও মুখে মুখে আলোচিত একটি বিষয়। আজকাল তো আমরা বাংলা ও বাঙালির রুটগুলোকে ভুলতেই বসেছি। তাই আজ কবির জন্মদিনে আপনার এই পোস্ট ভীষণ প্রাসঙ্গিক।