আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
জানুয়ারি ২০২০। অস্ট্রেলিয়ার একটি অঞ্চলে তখন দাবানলের কবলে। প্রায় ২৫ মিলিয়ন একর বনাঞ্চল দাবানলে পুড়ে গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে বনাঞ্চল এবং জনপদ। মানুষের পাশাপাশি মারা গেছে অসংখ্য জীবজন্তু। একটা থমথমে অবস্থা তখন। সেই সময়ে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন। তিনি তার ক্যাপ নিলামে তুললেন। ঘোষণা দিলেন নিলামে তার ক্যাপ যত টাকায় বিক্রি হবে তিনি সেটা দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের দান করে দেবেন। পরবর্তীতে ক্যাপটা প্রায় ৫ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, প্রায় ৩ কোটি বাংলাদেশী টাকায় (সেই সময় অনুসারে ) বিক্রি হয় শেন ওয়ার্নের সেই ক্যাপটা। এবং তিনি সেটা দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দান করে দেন। ২০২০ সালের কথা। পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা মহামারী। বিভিন্ন উন্নত দেশসমূহ করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থ। সেখানে বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশের অবস্থা কতটা করুন ছিল সেটা দেখাই গিয়েছে। প্রথম অবস্থায় তো করোনা পরীক্ষার কিট, পিপিই এর সংকট ছিল। আর জনসাধারণের বাইরে বের হওয়া নিষেধ সেজন্য সাধারন মানুষের খাদ্যঅভাব দেখা দিয়েছিল।
ঐ সময়ে অনেকে অনেক ভাবে সাহায্য করলেও আমি বিশেষ দুজনের কথা বলব। বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটিল মাস্টার, মিস্টার ডিপেনডেবল মুশফিকুর রহিম তার স্বাক্ষর করা এস এস ব্যাট টা বিক্রির জন্য নিলামে তুলেন। সেটা নিয়ে সৃষ্টি হয় বিতর্ক যখন অভিনেত্রী সানি লিওন সেটা কিনতে চাই। কিন্তু পরবর্তীতে পাকিস্তানের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শাহেদ আফ্রিদী সেই ব্যাট টা কিনে নেই ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে। এবং মুশফিকুর রহিম সেই সেই টাকা সম্পূর্ণ দান করে দেন করোনার সময়ে সাধারন মানুষের উপকারের জন্য। ঐ একই সময় একই কারণে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তার অনেক পছন্দের ব্রেসলেটে টা নিলামে তুলেন। পরবর্তীতে এক বাংলাদেশী প্রবাসী ব্যবসায়ী সেটা ক্রয় করে নেয়। এবং পরে সেটা আবার মাশরাফিকে উপহার দেয়। এবং মাশরাফি সেই টাকা টা করোনার সময় সাধারন মানুষের সাহায্যের জন্য দান করে দেয়।
ওজিলের টুইটার একাউন্ট থেকে ছবিগুলোর স্কিনশর্ট নেওয়া হয়েছে।
এবার বতর্মানে আসি। বতর্মান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে সিরিয়া ও তুরস্কের ভূমিকম্প। অসংখ্য মানুষ মারা গেছে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল গিয়েছে। এবং তুরস্কের সরকার প্রতিটা দেশের থেকে সাহায্য চেয়েছেন। সব উন্নত দেশ সাহায্য করেছে সেখানে। তবে আমি কথা বলব খেলোয়ারদের নিয়ে। তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সবার আগে এগিয়ে আসে পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তুরস্কের ফুটবলার মেরি ডেমিরাল রোনালদোর কাছে সাহায্য চাইলে রোনালদো আশ্বাস দিয়ে বলে এই বিপর্যয়ে নিজের সবটা দিয়ে পাশে থাকবে। এবং মেরি ডেমিরালের কাছে থাকা রোনালদোর সাইন করা জার্সিটা সে নিলামে তোলে। ডেমিরালের পর ইতালীয় ফুটবলার লিওনার্দো বোনুর্চি এগিয়ে আসেন। তিনি তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্তদের দিকে সাহায্য হাত বাড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে ফুটবল বিশ্বের আরেক সুপারস্টার লিওনেল মেসিও এগিয়ে আসেন।
অন্যদিকে জার্মানির সাবেক বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার মেসুত ওজিল তো নিজেই সাহায্য চেয়ে টুইট করেন। এবং তাতে বেশ ভালো সাড়া পান তিনি। খেলোয়ার রা শুধু মাঠেই হিরো না। এভাবে তারা বার বার বিভিন্ন দূর্যোগে মানুষের পাশে এগিয়ে আসে। তারা আসলেই সুপার স্টার। তাদের কাছে এখানে সবচেয়ে বড় হয়ে উঠে মানবিক দিক টা। একটা মানুষ তখনই পুরোপুরি মানুষ হয়ে উঠে যখন সে মানবিক। এইসব খেলোয়াররা সবসময়ই অনুপ্রেরণা হয়ে থেকে যায় আমাদের কাছে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
ঠিক বলেছি ভাইয়া খেলোয়ারা শুধু মাঠে হিরো না। তারা বাস্তবতায় মানুষকে সাহায্য করার বেশ বড় এক হিরো। আপনার পোস্টটি পড়ে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা সম্মান ভালোবাসা সব বেড়ে গেল। তারা আসলেই সব সময় বিপদ-আপদে এগিয়ে যাচ্ছে এবং নিজেদের পছন্দের জিনিসগুলো বিক্রির জন্য, নিলাম করে দিচ্ছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit