নিকোলা টেসলা জীবনকাহিনী.
জন্ম: নিকোলা টেসলার জন্মই ছিল রহস্যময়। প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টির রাতে প্রতিকূল আবওহাওয়ার মধ্যে ১৮৫৬ সালের ৯ ও ১০ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে ঠিক রাত ১২:০০ টার সময় ক্রোয়েশিয়াতে তার জন্ম হয়। তবে উইকিপিডিয়াতে বিভ্রান্তি এড়াতে তার জন্ম তারিখ ১০ জুলাই ধরা হয়। খারাপ ও ভয়ংকর আবওহাওয়াই তার জন্ম হয় বলে মানুষ তাকে "Child of Darkness " বলত। কিন্তু তার মা বলেছিলেন এই ছেলেই একদিন পৃথিবীকে আলোকিত করবে। সেজন্য তার মা তাকে "child of light " বলতেন। টেসতার পিতা তাকে ধর্মযাজক বানাতে চেয়েছিলেন এবং পাঠিয়েও দিয়েছিলেন সেখানে। কিন্তু সেখান থেকে সে কঠিন কলেরায় আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর পথ থেকে ফিরে আসেন এবং বাড়ি চলে আসে। এরপর টেসলার পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় তাকে ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করব। হয়ত সৃষ্টিকর্তা সেদিন চাইনি যে টেসলা ধর্মযাজক হয়ে একটি নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ থাকুক।
শিক্ষাজীবন
এরপর তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। টেসলা স্কুল কলেজে বিস্ময় সৃষ্টি করতে থাকে। বড় বড় এিকোনমিতি ক্যালকুলাস টেসলা খাতা কলম ছাড়া ব্রেন দিয়ে চিন্তা করে সমাধান করে দিতে পারতেন। তার প্রতিভাই মুগ্ধ হয়ে কলেজের শিক্ষকরা তার পিতার কাছে চিঠি দিতেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় একটি বিষয় নিয়ে তিনি শিক্ষকের সাথে দ্বিমত পোষন করেন। এরপর প্রতিদিন তিনি ১৮ ঘন্টা ল্যাবে কাজ করে সেটা প্রমাণ করে দেন। এতে সম্পূর্ণ কলেজে তিনি বিস্ময়কর ছাএ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। যদিও তখনও তার বিস্ময়কর আবিস্কার শুরু হয়নি।
১৮৮০ সালে পকেটে মাএ চার পেনি( পেনি- তৎকালীন মুদ্রা ) এবং চারটা কাপড় এবং একটি বিমানের ব্লকপ্রিন্ট নিয়ে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমান। এবং একজন একটি চিঠি দিয়ে বলেন এডিসনের সাথে দেখা করতে। টেসলা মহান বিজ্ঞানী এডিসনের সাথে দেখা করে এবং চিঠিটা দেয়। এবং চিঠিতে ওই ব্যাক্তি লিখেছিল আমি বিশ্বে দুজন জ্ঞানী লোককে চিনি। একজন টমাস আলভা এডিসন এবং অন্যজন তোমার সামনে দাঁড়ানো নিকোলা টেসলা। এডিসন তার কোম্পানিতে টেসলিকে নিয়োগ দেয় এবং ডিসি জেনারেটর পূণরায় ডিজাইন করার জন্য তাকে $50000 দেবেন বলে ঘোষণা দেন। টেসলা দিনরাত পরিশ্রম করে সফল হন। কিন্তু এডিসন টেসলাকে কোন টাকাই দেন না। এরই মধ্যে টেসলা আবিস্কার করেন সবচেয়ে বিস্ময়কর আবিস্কার পৃথিবী বদলে দেওয়া এসি বিদ্যুৎ। এডিসন ডিসি বিদ্যুৎ দিয়ে শুধু আলো পাবার চিন্তা করেন কিন্তু টেসলার এসি বিদ্যুৎ যে সকল কাজ করতে সক্ষম তা মানুষ বুঝতে পারেন। এরপর টেসলা এডিসনকে ডিসি এর পরিবর্তে এসি ব্যবহার করতে বলেন। এতে এডিসন খুব ক্ষিপ্ত হন এবং টেসলাকে তার কোম্পানি থেকে বের করে দেন। এরপর টেসলা নিজেই ইলেকট্রিক কোম্পানি তার একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। কিছুদিনের মধ্যেই এসি বিদ্যুৎ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কারণ এসি বিদ্যুৎ কম খরচে পাওয়া যেত এবং শিল্প কারখানার ব্যবহার উপযোগী।
আবিস্কার সমূহ
নিকোলা টেসলার ৩০০ এর বেশি আবিস্কারের প্যার্টান ছিল। এছাড়া অনেক আবিস্কারের প্যার্টান গ্রহণ করেননি। এছাড়াও অনেক বিজ্ঞানী তার প্যার্টান চুরি করে নিজের বলে চালিয়ে দিয়েছেন। নিকোলা টেসলা একমাএ বিজ্ঞানী ছিলেন তিনি যা চিন্তা করতেন তাই আবিস্কার করতে পারতেন। আবিস্কার ছিল তার নেশা।
∆ এসি বিদ্যুৎ ∆: এই সম্পর্কে আগেই আলোচনা করা হয়েছে। এসি আবিস্কার না হলে পৃথিবী এত আগ্রসর হতে পারত না। এবং পৃথিবীতে এত শিল্পবিপ্লব হত না।
∆ রেডিও ∆: মার্কোনি রেডিও আবিস্কার করার কয়েক বছর পূর্বেই টেসলা রেডিও আবিস্কার করেছিলেন। এবং তিনি এই রেডিও তরঙ্গ গবেষণার কাজেও ব্যবহার করেন। ১৯৪৩ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট সত্যটা জানতে পেরে মার্কোনির রেডিও আবিস্কার প্যার্টান বাতিল করেন এবং টেসলাকে রেডিও এর আবিস্কারক ঘোষণা করেন। কিন্তু এর কয়েক বছর পর মার্কোনি প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় রেডিও আবিস্কারের প্যার্টানটি আবার নিজের নামে করতে সক্ষম হন।
∆ রিমোট, রোবট, গাইডেড মিসাইল ∆ : নিকোলা টেসলা রিমোট আবিস্কারের জনক ছিল। তিনি একটি খেলনা নৌকাকে দূরে নিয়ন্ত্রিত ভাবে চালানোর জন্য তিনটি জিনিস আবিষ্কার করে ফেলেন।
√ সর্বপ্রথম রিমোট আবিস্কার
√ সর্বপ্রথম রোবট আবিস্কার
√সর্বপ্রথম গাইডেড মিসাইল আবিস্কার
∆ ইন্ডাকশন মোটর ∆ : শিল্পক্ষেএে ইন্ডাকশন মোটরের গুরুত্ব কতটা সেটা নতুন করে বলার কিছু নেই।
বতর্মান যুগের WIFI technology মূলত টেসলার এসব আবিস্কারের ফসল। তার আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য আবিস্কার রয়েছে এগুলো হলো:
√ ভায়োলেট রে
√ নিয়ন ল্যাম্প
√ ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফি
√ টেসলা বাল্ব
√ টেসলা টারবইন
√ ফ্রী এনার্জি
√ রেডিও কন্ট্রোল
√ ক্যাপাসিটর
√ রাডার
√রেডিও বাটন ল্যাম্প ইত্যাদি।
এসব জগৎবিখ্যাত আবিস্কারের জন্য টেসলা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সবাই ভালো থাকবেন।
টেসলা সম্বন্ধে যদিও আমার আগে থাকতে ধারণা ছিল তবুও আপনার পোষ্টটি পড়ে নতুন করে অনেক কিছু জানলাম, ধন্যবাদ।
ভাল লিখছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সম্পূর্ণ পোস্ট টা পড়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক জানা অজানা তথ্যবহুল পোস্ট। গল্প আকারে লিখলে পড়তে ভাল লাগে বেশি। তোমার জন্য শুভ কামনা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
টেসলা হলো আমার অন্যতম প্রিয় একজন ইনভেন্টর , ধন্যবাদ টেসলা কে নিয়ে লেখার জন্য ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ 💖💖।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit