সুন্দরবন ভ্রমণ (ষষ্ঠ পর্ব)।

in hive-129948 •  2 years ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শুক্রবার,১৬ ই, সেপ্টেম্বর,২০২২।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



park-gb64fa5226_1920.jpg

Source



পঞ্চম পর্বের পর



এরপর আমরা নতুন একটা জায়গা দেখলাম। মূলত ওখানে জঙ্গলের ৭-৮ ফুট উপরে ছিল কাঠের তৈরি একটা মাঁচার মতো। অনেকটা পথ জুড়ে ঐ পথ তৈরি করা। ঐ পথ দিয়ে সুন্দরবনের ঐ অংশে ঘুরতে হয়। তো আমরা ঐ পথ দিয়ে যেতে শুরু করলাম। কিছুদূর গিয়েই দেখতে পেলাম চারিদিকে সেই সুন্দরী গাছ। বলা হয় এই সুন্দরী গাছের নাম থেকে সুন্দরবন হয়েছে এর নাম। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার গাছ। এবং নিচে তাকিয়ে দেখি কাঁদা। কিন্তু কারণ বুঝতে পারিনা। পরে একজন সেচ্ছাসেবক বলল যখন জোয়ার আসে তখন নাকী এখানে পানি চলে আসে বেশ অনেক পানি হয়ে যায় । এবং জোয়ার চলে গেলে এইরকম হয় যায় কাঁদা কাঁদা। আমি বললাম বাহ দারুণ তো। এরপর এগিয়ে গিয়ে দেখি বাম দিক দিয়ে একটা রাস্তা চলে গেছে কেউ যাচ্ছে কেউ যাচ্ছে না। আমি এবং সোহান চলেই গেলাম। গিয়ে দেখি বিশাল একটা বাড়ি এবং টাওয়ার এর মতো। মূলত জঙ্গলটা উঁচু থেকে দেখার জন্য যে স্থানটা তৈরি করা হয় সেটা আর কী।

তো উঠলাম উপরে। বেশ সুন্দরভাবে উপর থেকে অনেকটা দেখা গেল সুন্দরবনের। এরপর নিচে নেমে দেখি পাশেই একটা জায়গাই দুই থেকে তিনটা কচ্ছপ রয়েছে। সত্যি বলতে এর আগে এতোবড় কচ্ছপ আমি কখনো দেখিনি। এবং কচ্ছপ গুলোর বয়স নাকী ১০০ বছরের উপর।এরপর আমরা আবার ঐ উঁচু পথ দিয়ে এগিয়ে গেলাম। কিছুটা গিয়ে দেখি একেবারে সরাসরি বানর। মানে সুন্দরী গাছে বানর জুলছে তাও বেশ কয়েকটা। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বানরের বাঁদরামি দেখলাম। আমার ব‍্যাগে খাওয়ার জন্য বিস্কুট ছিল মা দিয়ে দিয়েছিল কিন্তু খাইনি। বের করে একটা বানরের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিলাম প্রথমে ধরতে পারছিল না। পরে আবার ছুড়ে মারি একটা এবার ধরতে পারে। বিস্কুট টা খেয়ে বানরটা বেশ মজা পাই। এরপর আশ্চর্যজনকভাবে বানরটা একেবারে লাফ দিয়ে আমার কাছের গাছে চলে আসে। তখন আমি পুরো প‍্যাকেট টা দিয়ে দেয়। বানরটা খেতে থাকে। ওটা দেখে বেশ অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে গেছিল।।


mangroves-gb7923fc90_1920.jpg

source


এরপর আমরা এগিয়ে গেলাম আরও সামনে। ঐ পথ ধরে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে প্রায় ২৫ মিনিট চলার পথে ঐ পথটা শেষ হয়ে যায়। আমরা আবার আমাদের ঐ আগের স্থানে ফিরে আসে। এবার অবশ‍্য একটু হাফিয়ে গেছি। ওখানে পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য ছাউনি রয়েছে। আমি এবং সোহান গিয়ে ওখানে বসি দেখি আমাদের বন্ধু সাঈদ এবং আলামিন রয়েছে। বেশ গরম পড়ছিল। তো আমরা আইসক্রিম খেলাম। যদিও দামটা বেশি নিয়েছিল সেটা নেবেই। একটা না এতোটা গরম লেগেছিল আমরা এক একজন তিনটা করে আইসক্রিম খাই। এরপর ওখানে বসে আছি আর উঠতে ইচ্ছা করছে না। সবে মাএ দেড় ঘন্টা হয়েছে। তখন সময় ২:৩০। এখনো প্রায় একঘণ্টা সময় আছে। তখন আমার ঐ টাউট বন্ধু ইব্রাহিম আমাকে ফোন করে। বলে আমি এবং তুহিন এদিকে খালের ধারে আয় নতুন কিছু দেখে আসি।

ওদের ফোন পেয়ে চলে গেলাম আমরা। এরপর ইব্রাহিম বলল আমার পেছন পেছন চলে আয়। আজব ব‍্যাপার দেখি এমনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে যেন ও সব চিনে। আমরা ঐ সরু খাল ধরে এগিয়ে অনেকটা এগিয়ে গেলাম। দেখলাম এদিকে একেবারে লোক নেই। ইব্রাহিম বলল আরও কিছুটা এগিয়ে চল আসল জিনিস এখনো বাকি। কিছুটা এগিয়ে যেতেই দেখি। সরু খালটা আর সরু থাকল না বিস্তৃত হয়ে গেল। এবং খালের ঐপারে হরিণ দেখা যাচ্ছে। মূলত ঐটাই হলো সুন্দরবনের অভয়ারণ‍্য। ওখানে বেশ অনেকগুলো হরিণ বিচরণ করছে। ইব্রাহিম বলল এইসব জায়গা থাকলে বাঘও দেখতে পারবি। ইব্রাহিমের আশ্বাসে বেশ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। কিসের বাঘ কিসের কী কোনো পদচিহ্ন নেই। তবে জায়গাটা কিন্তু অন‍্যদের আড়ালে ছিল। আমরা ছয়জন বাদে আমাদের ব‍্যাচ এর আর কেউ ওখানে যায়নি।।

চলবে.....





সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_-akkhy.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার সুন্দর বন ভ্রমণের ষষ্ঠ পর্ব দেখে অনেক ভালো লাগলো। আসলে সুন্দরবনের প্রধান উৎসই হচ্ছে সুন্দরী গাছ আমারও খুব ইচ্ছে হয় মাঝে মাঝে সুন্দরবন গিয়ে ভ্রমণ করে আসি। আপনি বলছেন কিছুদূর গিয়ে আপনারা সেখানে কাঁদা দেখতে পেলেন সেখানে পানি জমে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই সেখানে কোন গর্ত জাতীয় জায়গা হতে পারে।

চলে যান আপু গিয়ে ঘুরে আসেন।।

ভাইয়া আমিও বেশ কয়েক বছর আগে সুন্দরবন গিয়েছিলাম। কিন্তু তখন আমার বাংলা ব্লগে ছিলাম না। থাকলে পোস্ট দিতে পারতাম। 🤣 অনেক ভাল লাগলো আপনার ভ্রমন এর পোস্ট পড়ে। ভাল থাকবেন। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

আহ হা মিস করে গেলাম আমরা।। ধন্যবাদ আপনাকে।।

এই পর্বে আশা করেছিলাম আরো অনেক ফটো দেখতে পারবো সুন্দরবনের। যাইহোক সুন্দরবন সম্পর্কে খুব সুন্দর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। এত সুন্দর পোস্ট পড়ে আমি মুগ্ধ হলাম।

আপনাকে পরে দেখাব ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।।

ভাই আপনার সুন্দরবন ভ্রমণের ষষ্ঠ ধাপটা মনে হয় দারুণ উপভোগ্য। ১০০ বছরের কচ্ছপ, কিংবা বানরকে খাওয়ানো। আপনাদের ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং সবাই মিলে আইসক্রিম খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো ছিল দারুণ মজাদার। ধন্যবাদ ভাই এমন একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।।