প্রাণের বিদ‍্যালয় যখন ধ্বংসের মুখে(দ্বিতীয় পর্ব)।

in hive-129948 •  2 years ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ রবিবার, ৯ ই, অক্টোবর ২০২২।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



IMG_20210128_110337(1).jpg



গত পর্বে আমি আমার এই মাধ্যমিক বিদ‍্যালয়ের সৃষ্টি আমার ভর্তি হওয়া এসব নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ আমি আমার পছন্দের বিদ‍্যালয়ের শিক্ষা খেলাধুলা এবং অন‍্যান‍্য কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করব। এবং শেষ পর্বে বতর্মান অবস্থা আলোচনা করব তাহলে আপনাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সাল ২০১৬। আমি তখন অষ্ঠম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ২০১৫ সালের বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট খেলাধুলা এবং অন‍্যান‍্য সব এক্টিভিটি মিলিয়ে কুমারখালী এম এন পাইলট মাধ্যমিক বিদ‍্যালয় জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ‍্যাপীঠ এর সম্মান অর্জন করল। যেখানে কুমারখালী এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ‍্যালয় কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের মতো অসংখ্য স্কুলকে পেছনে ফেলে দেয়। বেশ জাকজমকভাবে র‍্যালি করে খাওয়া দাওয়া করে আমরা সেই অর্জন টা উৎযাপন করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালেও কুমারখালী এম এন পাইলট মাধ্যমিক বিদ‍্যালয় জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ‍্যাপীঠ এর সম্মান অর্জন করে। তখন আমাদের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম স‍্যার পুরষ্কার পেয়েছিলেন জাতীয়ভাবে। এভাবেই বেশ দারুণ চলছিল বিদ‍্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিদ‍্যালয় ছিল এটা কিন্তু পর পর দুইবার জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ হওয়াই চারিদিকে নাম ছড়িয়ে যায়। হ‍্যা বলে নেওয়া ভালো আমাদের বিদ‍্যালয়টা কিন্তু বেসরকারী ছিল। এখনো সরকারি হয়নি। তবে এমপিও ভুক্ত ছিল। আমাদের ঐ স্কুলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করত কুমারখালী পাইলট গার্লস স্কুল কিন্তু তারা খুব একটা পেরে উঠত না।


IMG_20210126_105056.jpg


এবার আসি খেলাধুলার বিষয়ে। প্রতিবছর আয়োজন করা হতো আন্তস্কুল ফুটবল, হ‍্যান্ডবল, কাবাডি টুর্নামেন্ট। আমাদের কুমারখালী এম এন মাধ্যমিক বিদ‍্যালয়ের মাঠ টা ছিল অনেক বড় এবং সুন্দর। এই মাঠেই টুর্নামেন্টের ম‍্যাচগুলো হতো। আমাদের স্কুলের ক্রিয়া শিক্ষা ছিলেন আশরাফুল ইসলাম স‍্যার এখনো অবশ‍্য আছে। এই টুর্নামেন্টের নিয়ম ছিল উপজেলা পর্যায়ে একটা স্কুল চ‍্যাম্পিয়ন হবে তারপর সেই স্কুল জেলা পর্যায়ে খেলবে সেখানে জিতলে বিভাগীয় পর্যায়ে। এবং বিভাগীয় চ‍্যাম্পিয়ন হলে জাতীয় পর্যায়ে খেলবে। ২০১৪-২০১৮ এই পাঁচবছর আমি আমার স্কুলের আন্তস্কুল প্রতিযোগিতার খেলাগুলো দেখেছিলাম। আমাদের বিদ‍্যালয় আবার ফুটবল খুব ভালো খেলত। এরমধ্যে আমি থাকাকালীন ২০১৪-২০১৮ প্রতিবার আমাদের বিদ‍্যালয় হয়েছিল উপজেলা চ‍্যাম্পিয়ন। এবং ২০১৪,২০১৭,২০১৮ এই তিনবার আমাদের স্কুল উপজেলা চ‍্যাম্পিয়ন, জেলা চ‍্যাম্পিয়ন হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে গিয়ছিল। যদিও বিভাগীয় পর্যায়ে কখনো চ‍্যাম্পিয়ন হতে পারে নাই। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ অর্জন ছিল সেমি ফাইনাল পযর্ন্ত। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমাদের বিদ‍্যালয়টা শুধু লেখাপড়া না খেলাধুলাতেও অসাধারণ ছিল।

এবার আসি অন‍্যান‍্য কার্যক্রমে। আমাদের বিদ‍্যালয়ে রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউট এই কার্যক্রম গুলো চালু ছিল। সারাবছর তাদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করানো হতো। এবং আমি নিজেও একজন রেড ক্রিসেন্ট সদস‍্য ছিলাম। প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে উপজেলার সব স্কুলের বিভিন্ন কার্যক্রম হতো। এরমধ্যে আমি যতবার দেখিছি প্রায় প্রতিবারই আমাদের বিদ‍্যালয় প্রথম স্থান অর্জন করত এবং কুমারখালী বালিকা বিদ‍্যালয় দ্বিতীয় স্থান। তো ২০১৬ সালে আমাদের দূর্নিতী করে একটা কার্যক্রমে দ্বিতীয় করা হয় এবং কুমারখালী বালিকা বিদ‍্যালয়কে প্রথম করা হয়। সেদিন তার প্রতিবাদে আমাদের স্কুলের ছাএরা বিচারক ইউএনও এর বাসভবন ঘেরাও করেছিল। এবং আমরা সবাই বলছিলাম শিক্ষা নিয়ে দূর্নীতি মানি না মানব না। বিচারক ইউএনও মুরদাবাদ। একপর্যায়ে ইউএনও এবং থানার প্রধান আমাদের স‍্যারদের সঙ্গে আলোচনা করে বলে আমাদের ভুল হয়েছে। আসলে বিচারে এইরকম হতেই পারে। আপনার ছাএদের বোঝান। পরবর্তীতে আমাদের স‍্যার রা আমাদের বলেন যে এবার হেরেছ ব‍্যাপার না পরবর্তীতে আমরা দেখিয়ে দেব। সেদিন ইউএনও এমপি সহ উপজেলার সবাই বুঝেছিল আমাদের স্কুলের ছাএরা বিদ‍্যালয়টা কতটা ভালোবাসে। এছাড়া অন্য সকল প্রতিযোগিতায় আমাদের স্কুল ছিল সব স্কুলের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।।




-------------
ফটোগ্রাফার@emon42
ডিভাইসVIVO Y91C
সময়মার্চ, ২০২১


সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_-akkhy.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি আপনাদের স্কুলের প্রত্যেকটি বিষয় জানতে পেরে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনাদের স্কুল বেসরকারি হলেও সব দিক দিয়ে এগিয়ে আছে। অনেক মজা করতেন মনে হয়। স্কুলের মাঠ অনেক বড় ছিল। এপাশ থেকে ওপাশ যেতেও অনেক সময় লাগবে। এরকম বড় মাঠে খেলতে ভীষণ ভালো লাগে।