বাঙালির সেই আড্ডা!!

in hive-129948 •  last year 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শনিবার, ২ রা ডিসেম্বর, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


people-4050698_1280.jpg

Source


আড্ডা শব্দটার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। পরিচিত বললে ভুল হবে বলতে হবে অভ‍্যস্ত। এমনও প্রবাদ আছে যে আড্ডা না দিলে নাকী বাঙালির পেটের ভাত হজম হতো না। কথাটা যে একেবারে শতভাগ সত‍্য কথা সেটাই কোন সন্দেহ নেই। বাঙালি আড্ডা দিয়ে একেবারে উস্তাদ। খোঁজ নিয়ে দেখেন এই আড্ডা ব‍্যাপার টা হয়তো কোন বাঙালি আবিষ্কার করেছিল হা হা। আপনি আমি জীবনে অনেক আড্ডা দিয়েছি। যদিও আমি খুব একটা বেশি এই আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। কিন্তু যতটা দিয়েছি সেটাও কম না। তবে আমাদের আগে আমাদের বড় ভাইয়েরা, বাবা কাকা, দাদা উনারা আড্ডা দিতেন অনেক বেশি। এগুলো আমি উনাদের থেকেই শুনেছি। আগে যখন গ্রামের দিকে ইলেকট্রিসিটি ছিল না। তখন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই বসে আড্ডা দিত। ভাগ করে নিত একে অপরের গল্পগুলো কথাগুলো।

এরপর আমাদের বড় ভাইয়ের সময় যখন আসলো। তাদের আড্ডা দেওয়ার ব‍্যাপার টা বেশ চমৎকার ছিল। তখন ইলেকট্রিসিটি থাকলেও সন্ধ‍্যার পর প্রচুর লোডশেডিং হতো। তো সেই লোডশেডিং এর মতো সবাই একটা নির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হতো। এবং একসঙ্গে চলতো আড্ডা। এই আড্ডায় তারা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতো। অনেক সময় আড্ডার মাঝে তারা বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা করতো যেমন পিকনিক খাওয়া দাওয়া এসব নিয়ে। তখন তাদের মাঝে আমাদের মতো এইসব ডিপ্রেশন ছিল না। তারা আমাদের মতো হয়তো এতোটা উচ্চবিলাসিও ছিল না। এবং তারা আমাদের মতো অল্প বয়সে রিলেশনশীপ এর মতো প‍্যারায় যেত না হা হা। এরপর যখন আমাদের সময় আসলো তখন আমরাও আড্ডা দিয়েছি। তবে সেটা তাদের মতো দীর্ঘ হয়নি। আমরা বেশিদিন এটা চালিয়ে যেতে পারেনি। কারণ ততদিনে আমাদের মগজ নষ্ট করে দেওয়ার জন্য স্মার্টফোন নামক যন্ত্র চলে এসেছে।


bonfire-1867275_1280.jpg

source


বাঙালিদের আড্ডা আবার বেশ কয়েক প্রকার হয়ে থাকে। যেমন চায়ের দোকানে আড্ডা, শীতের সকালে রোদে দাঁড়িয়ে আড্ডা, লোডশেডিং হলে রাতের আড্ডা, বৃষ্টির দিনের আড্ডা। এরমধ্যে সবচাইতে জমজমাট চায়ের দোকানে আড্ডা। একটা চায়ের দোকানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আড্ডা হয়। রাজনীতি থেকে শুরু করে খেলাধুলা। ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে মোনালিসা তারা সবাইকে নিয়ে চর্চা করতে বেশ পটু। আপনি শুধু একবার বিষয়টি তুলে দেবেন তারপর দেখবেন মজা হা হা। এই আড্ডাগুলো শুনতেও বেশ মজা লাগে। গ্রামের দিকে এখনো এইরকম চায়ের দোকানের আড্ডার প্রচলন রয়েছে তবে কম। শীতের দিনে তীব্র শীতে আগুনের পাশে বসে আড্ডা দেওয়ার মধ্যেও আলাদা একটা মজা রয়েছে কিন্তু। এই আড্ডা টাও আমরা দিয়েছি। কিন্তু এখন আর দেওয়া হয় না। হবে কী করে বলেন গভীর রাত পযর্ন্ত জেগে থেকে অনেক বেলা পযর্ন্ত সবাই ঘুমায়। শীতের সকাল কেমন কেউ সেটা দেখেই না।

এটা তো বাঙালিদের আড্ডার আগের দিনের কিছু কথা। কিন্তু এখন আমরা এবং আমাদের পরের জেনারেশন ভুলতে বসেছি এই আড্ডা বিষয়টা। আমরা কিছুটা এটা বুঝলেও আমাদের পরের জেনারেশন ফোন নিয়ে এতোটা ব‍্যস্ত। ফোনের বাইরে তাদের কোন জগত নেই। আমি আমার আপাত দৃষ্টিতে এমনটাই দেখছি। ব‍্যাপার টা এমন সারাদিনে যদি কয়েক বন্ধু এক জায়গা হয় তাহলে তখন তারা আড্ডা দেবে না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবে না। তারা পাশাপাশি বসে যে যার মতো ব‍্যস্ত থাকবে ফোন নিয়ে। এটা একেবারেই খারাপ লাগে আমার কাছে। ধীরে ধীরে আমরা স‍্যোসাল মিডিয়া ইন্টারনেট এগুলোর মধ্যে এতোটা ডুবে যাচ্ছি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো বাঙালির এই চিরচেনা আড্ডা টা একেবারেই ভুলে যাবে। হারিয়ে যাবে বাঙালির সেই সরল সাদা জীবন যাপন। আড্ডা বিলীন হওয়া মানে বাঙালির একটা সত্ত্বার মৃত্যু বলতে পারেন।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.