ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট‍্যুর(শেষ পর্ব)।

in hive-129948 •  2 years ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ রবিবার, , ২২ ই, জানুয়ারি, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



IMG-20230117-WA0000.jpg



পিজিসিবি বিদ‍্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্র খুবই নিরাপত্তা বেষ্টিত এবং রেস্টিকটেড এড়িয়া। সেজন্য এখানে ঢুকতে আমাদের একটু সমস্যায় পড়তে হয়। তবে আমাদের স‍্যারের বেশ কিছু ছাএ সেখানে কর্মরত থাকায় বিশেষ অসুবিধা হয়নি। তবে আমাদের বলে দেওয়া হয় বিশেষ কিছু অঞ্চলের ছবি বা ভিডিও আমরা ধারণ করতে পারব না। এরপর পিজিসিবির ভেতরে আমরা নেমে পড়ি। আমরা সবাই তিন জন স‍্যারের নেতৃত্বে ভাগ হয়ে যায়। আমি যায় আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স‍্যার এর সঙ্গে। কুষ্টিয়া ভেড়ামারার পিজিসিবি(পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ) এরা ভারত থেকে বিদ‍্যুৎ বা পাওয়ার নিয়ে আসে। ভারতের বহরমপুর থেকে ৪০০ কেভি লাইনে ১০০০ মেগাওয়াট পাওয়ার আসে এখানে। আপনাদের বলে রাখি আমরা বিদ‍্যুৎ হিসেবে যেটা ব‍্যবহার করি সেটা আসলে পাওয়ার। যেটা ভোল্টেজ ও কারেন্টের মানের গুনফল। আসলে যত বেশি ভোল্টেজে পাওয়ার নিয়ে আসা যায় লাইনে পাওয়ারের লস তত কম হয়। এবং এখানে পাওয়ার আসার পর ৬৬ কেভিতে স্টেপ ডাউন করে বাংলাদেশ সাইডে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে আবার ২৩২ কেভিতে স্টেপ আপ করে পাওয়ার টা সমান ভাগে বাংলাদেশের চারটা জায়গা রাজশাহী, ঈশ্বরদী, ঝিনাইদহ এবং ভেড়ামাড়ায় ভাগ করে দেওয়া হয়। এই হলো এই পিজিসিবি বিদ‍্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের কাজ।


IMG_20230117_141904.jpg

IMG_20230117_143601.jpg


স্থানীয় একজন কর্মরত লোক আমাদের এবং স‍্যারকে কন্ট্রোল রুমে নিয়ে যায়। আমরা তিনটা ভাগে ভাগ হয়ে কন্ট্রোল রুমে যাব। যাইহোক প্রথমে আমরা যায়। কন্ট্রোল রুমটা ভবনের দ্বিতীয় তলা। সেখানে গিয়ে দেখি একজন দায়িত্বরত প্রকৌশলী রয়েছেন। এবং আমাদের সামনে ছিল অনেক গুলো কম্পিউটার এবং প্রজেক্টরের মতো কিছু। কীভাবে কোন ইউনিটে কী হচ্ছে কত পাওয়ার আসছে কত ফিকুয়েন্সিতে আসছে সবকিছু সেখানে দেখা যাচ্ছে। এবং উনি নিয়ন্ত্রণ করছে। কোনো সমস্যা হলে এখনা থেকে অন‍্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে উনি আমাদের উনার মতো করে পুরোটা বুঝিয়ে দেয়। এরপর আমরা যে যার মতো প্রশ্ন করতে থাকি এবং উনি উওর দেন। ভারত থেকে যে পাওয়ার টা আসে ১০০ কিলোমিটার লাইনের মাধ্যমে। মোট চারটা সরবরাহ লাইন আছে। প্রতিটা লাইনে ৫০০ মেগাওয়াট করে পাওয়ার আসে। এবং অন্য দুইটা ব‍্যাকআপ হিসেবে আছে। এবং এই পাওয়ারের মূল‍্য পরিশোধ করে পিডিবি( পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বাংলাদেশ )। এরপর আমরা কন্ট্রোল রুম থেকে বের হয়।


IMG_20230117_145309.jpg

IMG_20230117_144557.jpg


এরপর পিজিসিবির একজন সহকারি প্রকৌশলী আমাদের পুরোটা ঘুরিয়ে দেখাই এবং বলতে থাকে কোন অংশের কী কাজ। আমাদের যাবতীয় প্রশ্নের উওর দেয় উনি। উনি আমাদের ভারত থেকে আসা পাওয়ার অর্থাৎ ভারতের অংশটুকু ভালোভাবে দেখান। উনি ঐ অংশেই কর্মরত। এরপর উনার সঙ্গে আমরা পরিচিত হয়। উনি একজন বুয়েটিয়ান। অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। এরপর আমি এবং আমার বন্ধু রাসেল নিজেদের মতো করে ঘুরতে থাকি। আমরা প্রথমবার এমন জায়গাই এসেছি। সেজন্য আমাদের কৌতূহল ছিল বেশি। এরই মধ্যে দিয়ে প্রায় ৩:৩০ টা বেজে যায় এখনো আমাদের খাওয়া বাকি। পিকনিকে বা ট‍্যুরে গেলে দুপুরের খাবার দেরিতে হবে এটাই নিয়ম। যাইহোক এরপর গিয়ে দেখি অন‍্যরা ইতিমধ্যে খেতে বসে গেছে। কিন্তু স‍্যার বললেন তোমরা কিছুক্ষণ পর এসো। যথারীতি কিছুক্ষণ পর আমরা যায়। আমাদের খাবার মেন‍্যুতে ছিল খিচুরির সঙ্গে মাংস এবং ডিম। এবং শেষে কোমল পানীয়। খাবার টা বেশ সুস্বাদু ছিল।


IMG_20230117_144656.jpg

IMG_20230117_141219.jpg


খাওয়া শেষ আমাদের ঘোরাঘুরি মোটামুটি শেষ। এরপর স‍্যার আমাদের সময় দেয় নিজেদের মতো ঘোরাঘুরি করতে এবং ছবি তুলতে। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ক‍্যামেরা নিয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে ছিল আমার অতি নিকট বন্ধু পাপ্পু। যাইহোক আমরা বন্ধুরা মিলে বেশ অনেকক্ষণ ফটোগ্রাফি করি। এভাবে দেখতে দেখতে আমাদের বিদায়ের সময় হয়ে যায়। শেষ বেলায় আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেয় জায়গা টাই। এরপর আমাদের বাস ছেড়ে দেয় ৫ টার সময়। আমাদের ট‍্যুরের আনন্দ এখনো বাকি। যাওয়ার সময় বাসের মধ্যে গান বাজতে থাকে। এবং গানের তালে তালে আমার বন্ধুরা নাচতে থাকে। মোটামুটি ৬ টার সময় আমাদের বাস আমাদের কলেজের সামনে এসে থামে। এরপর আমরা বাস থেকে নেমে কলেজের মধ্যে যায়। কারণ অন্য বাসে আমার বন্ধু নাভিদ এবং ইকরা আছে। ওদের বাস এখনো এসে পৌছায়নি। এভাবেই শেষ হয় আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট‍্যুর। বেশ সফলভাবে কোনো ঝামেলা ছাড়া শেষ হয়।





-------------
ফটোগ্রাফার@emon42
ডিভাইসVIVO Y91C
সময়জানুয়ারি ,২০২৩


সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_-akkhy.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

একটা শিক্ষনীয় পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। ট্যুরের পাশাপাশি বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়েছেন যার মধ্যে

ভারতের বহরমপুর থেকে ৪০০ কেভি লাইনে ১০০০ মেগাওয়াট পাওয়ার আসে এখানে।

এই তথ্যটা আপনার মাধ্যমে জানতে পেরে উপকৃত হলাম।