আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
কিছু কিছু বিকেল আছে একেবারেই যেতে চাই না। সময় টা যেন একেবারে থমকে যায়। চারিপাশের সবকিছু কেমন জানি অগোছালো লাগে। সাথে সাথে নিজেকে মনে হয় একটা অসহায় প্রাণী। জীবনানন্দ দাশের কবিতা আমার বরাবরই পছন্দ। এইজন্যই উনি আমার সবচাইতে পছন্দের কবি। উনার একটা কবিতার লাইন এমন "উড়ে গেল একঝাঁক হড়িয়াল পাখি, ভাবি কতদূর যেতে পারে মানুষ একাকী"। সত্যিই তো মানুষ একা কতদূর যেতে পারে। কয়েকদিন আগের কথা। শুক্রবার অফিস ছুটি থাকলেও আমার ছুটি নেই। ঐদিন পুরোটা দিন কেটে যায় ইউনিভার্সিটি তে। ঐ শুক্রবার আমার পরীক্ষা ছিল। মোটামুটি দুইটা পরীক্ষা দ্রুতই শেষ হয়ে গেল। তাই ভাবছিলাম কী করা যায়।
সাধারণত সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলো তে আমি একেবারেই সময় পাই না। সময় যেটুকু পাই সেটা কেটে যায় ঐ অফিস এবং আমার রুমের মধ্যে। শুক্রবার যখন ইউনিভার্সিটি তে আসি তখনই মূলত একটু বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়। এইজন্যই মনটা একেবারে বিষাদগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। ঐদিন পরীক্ষা দিয়ে এইজন্যই সিদ্ধান্ত নিলাম না যায় একটু ঘুরে আসি। একঘেয়েমি টা দূর করা অত্যাবশ্যক। এইজন্যই আমি চলে গেলাম হাতিরঝিল। ঢাকা শহরের মধ্যে মোটামুটি এই জায়গাটাই আমার পছন্দ। কারণ এর প্রকৃতি। একটা নিরিবিলি পরিবেশ এখানে পাওয়া যায়। যেটা অন্য কোন জায়গাই দেখা যায় না। তবে শুক্রবার মানুষের ভীড় থাকে বেশি।
হেঁটে গেলে আমার ইউনিভার্সিটি থেকে খুবই কাছে হাতিরঝিল। যাইহোক আমি হেঁটে চলে গেলাম। আমার সাথে আমার আরেকটি বন্ধু ছিল। দুজনে গিয়ে উপস্থিত হলাম হাতিরঝিলের গুলশান অংশের একটা ব্রীজে। ওখানেও বেশ লোকজন। যেহুতু শুক্রবার তার উপর আবার বিকেল মানুষের আনাগোনা থাকবেই। আমরা একটু ফাঁকা দেখে অন্য দিকে চলে যায়। চেষ্টা করছিলাম একটু নিরব জায়গা খোঁজার। পাশেই একজন চা বিক্রেতা চা কফি বিক্রি করছিল। এইরকম বিকেলে এককাপ রং চা। আর কিছু দরকার নেই। যথারীতি উনার কাছ থেকে এককাপ রং চা নিয়ে আমি খেতে শুরু করি। চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব অবসাদ সব বিষাদ যেন অনেক টা কমে গেল।
একটা অন্যরকম অনূভুতি কাজ করতে শুরু করল। দক্ষিণ দিক থেকে একটা বাতাস এসে আমার চুলগুলো উড়া শুরু করল। আমার চুলগুলো বেশ পাতলা এবং সিল্কি। এইজন্যই বাতাসে দুলে উঠে সব একযোগে হা হা। বেশ কিছুটা সময় হাতিরঝিলের ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে থাকলাম। চারপাশের মানুষ প্রকৃতি এগুলো আমি লক্ষ্য করে দেখছিলাম। বেশ দারুণ লাগছিল সবকিছু। অনেকদিন পর যেন নিজের বেঁধে দেওয়া গন্ডির বাইরে বের হতে পেরেছি। জীবনে আমার লক্ষ্য ছিল আলাদা। যেখানে আমি এমন হতে চেয়েছিলাম যে কোনকিছুই আমাকে একটা আবদ্ধ করে রাখতে পারবেনা। আমার কোন পিছুটান থাকবে না। কিন্তু সময় পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টে দিয়েছে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Daily task
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit