আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
তার জন্মই হয়েছিল চির দুঃখী হিসেবে। নিজের জীবনের প্রথম থেকেই তার কষ্টে কেটেছে। পরবর্তীতে নিজেই বরণ করে নিয়েছেন দারিদ্রতা। বাংলা কবিতা, গল্প, গান, শ্যামা সংগীত, ইসলামি সংগীত সবদিকে মানুষটার অবদান রয়েছে। ১৮৯৯ সালের ২৪ শে মে অর্থাৎ আজকের দিনে মানুষটা জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পরে বাবা মারা যাওয়ায় খুব একটা লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। ঐসময়ে তিনি রুটির দোকানে কাজ করেছেন, মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন কিছুদিন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন মাএ ১৬ বছর বয়সে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তখনই যেন তিনি তার সাহসের পরিচয় দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ১৯১৯ সালে চুরুলিয়ায় ফিরে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। মাএ ২২ বছর বয়সে রচনা করেন তার সেই বিখ্যাত কবিতা বিদ্রোহী।
বিদ্রোহী কবিতা শুনলে এখনও শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায়। এরপর তিনি একের পর এক গান, কবিতা রচনা করে বৃটিশদের ভীত নাড়িয়ে দিতে থাকেন। যার মধ্যে ছিল কালাপানি হওয়া বন্দিদের উদ্দেশ্য করে লেখা কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট, কান্ডারি হুশিয়ার, চল চল চল যেটা বর্তমানে রণসঙ্গিত নামেও পরিচিত। আজীবন সত্যকে আকড়ে ধরেছেন। সেজন্য একপর্যায়ে গিয়ে তাকে জেলও খাটতে হয়। এমন আরও অনেক সাহসী কাজ করেন তিনি। যেগুলোর তুলনা নেই। হাম'নাত, শ্যামা সঙ্গীত রচনার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সারাজীবন অন্যায়, অত্যাচার, ফ্যাসিবাদ, নিপীড়ন, অনাচার এসবের বিরুদ্ধে লড়ে গিয়েছেন। পরাধীনতার বিরুদ্ধেও সেচ্চার থেকেছেন।
বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কবির জীবনে প্রেমও এসেছে বার বার। যদিও জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন প্রমিলা দেবী কে। ঐসময় তিনি কঠোর হিন্দুত্ববাদী মানুষের রোশানলে পড়লে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঐসময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক সাহায্য করেছিলেন তাকে। আজ আমরা প্রতিটা ঈদে যে গানটা শুনি, রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ এটা কিন্তু উনার লেখা এবং সুর করা। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এই গানের রেকর্ড করিয়েছিলেন। তার একটা কবিতার লাইন এমন হে দারিদ্র তুমি করেছ মোরে মহান, তুমি আনিয়া দিয়াছ মোরে খিষ্ট্রের সম্মান। এইরকম মনমানসিকতা থেকেই যেন তিনি দারিদ্রতা বরণ করে নিয়েছেন। সারা টা জীবন ঐভাবেই অতিবাহিত করেছেন।
যে রাতে তার চার বছরের ছেলে বুলবুল মারা যায় তার কাছে ছেলের দাফন করার টাকাও ছিল না। কবি বিভিন্ন লাইব্রেরি ঘুরে প্রকাশকদের কাছ থেকেও টাকা যোগার করতে পারেননি। শেষে এক প্রকাশক তাকে শর্ত দেয় এখনই একটা গান বা কবিতা লিখে দিতে হবে তাহলেই টাকা দেবে। তখন তিনি মনের দুঃখ প্রকাশ করেন কবিতার মাধ্যমে
ঘুমিয়ে গেছে শান্ত হয়ে
আমার গানের বুলবলি
করুন চোখে চেয়ে আছে
সাঁঝের ঝরা ফুলগুলি।
১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। পরবর্তীতে তাকে দেওয়া হয় বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা। হ্যা আমি আর কারো না বলছি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা। আজ ২৪ শে মে কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মদিন।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই! বিদ্রোহী কবিতাটি পড়লে এখনো বেশ অন্যরকম অনুভূতি হয় আমার! বিশেষ করে যখন থেকে জানতে পেরেছি এক বিদ্রোহী কবিতাতেই লাইনে লাইনে লুকিয়ে আছে অনেক গল্প, কাহিনী এবং চরিত্র! আমরা যতটুকু জানি - বুঝি, তার চেয়েও অনেক বেশি গভীর তার বিদ্রোহী কবিতার ভাব! আমাদের মন্দ কপাল, আমরা আমাদের গর্বের বিষয় গুলোকে সংরক্ষণ করে, মর্যাদা দিয়ে ধরে রাখতে পারি না।
আপনার লেখা পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit