ব‍্যবহারিক পরীক্ষার সময় মজার কিছু মূহুর্ত।

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ মঙ্গলবার, ৭ ই মার্চ,২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে



received_3401246433537783.jpeg



গত ৩০ জানুয়ারি আমার ষষ্ঠ সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। সেই পরীক্ষা শেষ হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি। তবে থিওরী শেষ হলেও ব‍্যবহারিক পরীক্ষা বাকি ছিল। সত্যি বলতে টানা একমাস ধরে থিওরী পরীক্ষা দেওয়ার পরে ব‍্যবহারিক পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা টাই আর থাকে না। তার উপর যদি দেখা যায় যে পরবর্তী সেমিষ্টারের পরিকল্পনা দিয়ে দিয়েছে তাহলে বিষয়টি কেমন লাগে বলেন তো। যাইহোক পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগের দিন রাতেই ব‍্যবহারিক পরীক্ষার রুটিন দিয়ে দেয়। সেখানে মোটামুটি ১,২,৪ মার্চ বিভিন্ন সময়ে পাঁচটা বিষয়ের ব‍্যবহারিক সম্পন্ন হবে এমনটাই রুটিনে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনদিনে পাঁচটা এটা আমাদের জন্য একটু বেশিই কষ্টের ছিল। সেজন্য আমার কিছু ফ্রেন্ড আমাদের ডিপার্টমেন্ট ম‍্যাসেনজার গ্রুপে প্রস্তাব দেয় একদিনে পাঁচটা শেষ করার। কিন্তু আমাদের ক্লাস ক‍্যাপ্টেন পরিষ্কার করে জানিয়ে দেয় এটা সম্ভব না। প্রথমদিন ১ লা মার্চ ইলেকট্রনিক্সের দুইটা সাবজেক্ট এর ব‍্যবহারিক পরীক্ষা হবে।


received_623730156184338.jpeg

received_1350656679066873.jpeg


তবে একটা ভালো দিক ছিল দুই স‍্যার একসঙ্গে ভাইবা নেওয়াই প্রায় অর্ধেক সময়েই পরীক্ষা হয়ে যায়। কিন্তু ঝামেলা হয় অন্য জায়গাই। ভাইবার সময় ফরমাল ড্রেসে যাওয়া লাগে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি সহ আমার আরও কিছু বন্ধু কলেজ ড্রেস পরিধান করলেও ইন করে ফরমালি যায়নি। সেজন্য অবশ্য স‍্যার বেশ কিছু কথা শুনিয়ে দেয়। কিন্তু সেগুলো গায়ে লাগাইনি খুব একটা হি হি। যাইহোক সেদিন পরীক্ষা শেষ হলো। পরের দিন সকাল ৮:৩০ এর সময়ে আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ইয়াকুব আলী স‍্যার এর ব‍্যবহারিক। কোনো ভাবেই দেরি করা যাবে না। স‍্যার আবার খুবই সময় সচেতন এবং রাগী। স‍্যার এর ভাইবাই গিয়ে অন্য সমস্যা ফেস করি। দেখি স‍্যার একটার বেশি প্রশ্ন করছেন না। অর্থাৎ যদি ঐ একটা পারো তাহলে সম্পূর্ণ মার্ক পাবা আর না পারলে কিছুই পাবা না। এজন্য অবশ‍্য কিছুটা ভয়ে ছিলাম। কিন্তু কীভাবে জানি না বইয়ের সবচেয়ে সহজ প্রশ্নটাই স‍্যার আমাকে করে হা হা।


received_894840454895662.jpeg

received_237624552024107.jpeg


পরে আমাদের ম‍্যাম বলল তিনিও এখন ভাইবা নিবে। আমরা গিয়ে ভাইবার পূর্বের কাজগুলো শেষ করলাম। ম‍্যামের ভাইবা দিতে গিয়ে আবার নতুন ঝামেলা। ম‍্যাম দেখি অসংখ্য প্রশ্ন করছেন। এক আমাকেই প্রায় ৬-৭ টা প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু আমি নিয়মিত ক্লাস করা ছেলে ম‍্যাম কী আর আমাকে ঐসব প্রশ্ন দিয়ে আটকাতে পারে। যদিও একটা প্রশ্ন তাড়াতাড়ি বলতে গিয়ে গুলিয়ে ফেলে ভুল বলেছিলাম। কিন্তু সর্বোপরি ভালো হয়েছিল। এবার আসি আসল ঘটনায়। ব‍্যবহারিক বাকি আর একটা। এটা কোনোরকম স‍্যারকে রাজি করিয়ে আজ দিতে পারলে আর ৪ তারিখে আসা লাগবে না। কিন্তু ঐটার ব‍্যবহারিকের সময় বিকেল ৪ টা। তখন বাজে মাএ ১২ টা। তো আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স‍্যার যদি ৪ টার সময়ই তার বিষয়ের ভাইবা নেয় তাহলে এই সময়ে আমি আমার পছন্দের মানুষকে নিয়ে একটু ঘুরে আসব। তাকে আগে থেকে বলে রেখেছিলাম সে নিজেও রাজি হয়েছিল। কিন্তু আমার সব আশায় পানি ঢেলে দেয় স‍্যার।

স‍্যার বলে ঠিক আছে তোমরা আসো দুই গ্রুপ মানে এ এবং বি একসঙ্গে ভাইবা নেব। কিন্তু বি গ্রুপ বায়না জুড়ে দেয় তারা আগে ভাইবা দেবে। কী আর করার দাও তোমরা। কিন্তু তখন আমরা পরিণতি টা ভাবিনি। বাবলু স‍্যার তার ভাইবাতে এত পরিমাণ সময় নেয় কী আর বলব। অতোক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না। ঠিক সেই সময়ে আমার কিছু বন্ধু আমাকে বলে ট্রিট দিতে হবে। কিছু করার ছিল না। বিশেষ কিছু কারণে ওদের বলেছিলাম খাওয়াব। এবং সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বোর হয়ে গেছিলাম। তাই চলে গেলাম কলেজের কাছেই একটা ফাস্টফুডের দোকানে। গিয়ে ওদের ছোটখাট একটা ট্রিট দেয়। এরপর আসে বাবলু স‍্যারের ভাইবার সময়। এই মানুষ টা আবার অনেক টা আলাদা। পুরো একটা সেমিষ্টার ক্লাস করালেন অথচ একবারও হাতে বই নেননি। উনার ক্লাসগুলো আমি নিয়মিত করেছিলাম। সেজন্য উনার ভাইবাতে অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা উওর দিতে না পারলেও আমি ঠিক দিয়েছিলাম। সবগুলো সাবজেক্টের ভাইবা যখন শেষ হলো ঘড়িতে তখন বাজে ৩ টা। অনেক দেরী হয়ে গেছে তবে একটু দীর্ঘশ্বাস ফেললাম যাক এই সেমিষ্টারের মতো তো শেষ। পরের সেমিষ্টারে আবার দেখা যাবে।




সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



DSC_0363.JPG

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আসলে খুব মজার কিছু মুহূর্ত তুলে ধরেছেন তবে আমার সবচাইতে হাঁসি পেল যেখানে আপনি ভয়ে আছেন কি না কি প্রশ্ন করে, সে জায়গাতে একদম সহজ প্রশ্নটাই আপনাকে করল। তাহলে ধরতে হবে আপনার রাজ কপাল, যার কারণে আপনার বেলায় সহজ প্রশ্ন করেছে স্যার। খুব ভালো লাগলো আপনার এই মুহূর্তটি পড়ে ভালো থাকবেন।

ভাইবা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য গিয়ে খুব মজার মজার কিছু ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনাদের গরম শিক্ষক একটাই প্রশ্ন করেন শুনে খুব ভালো লাগলো। প্রশ্ন টি উত্তর দিতে পারলে সম্পূর্ণ নাম্বার দিয়ে দে। কিন্তু আপনি ভয়ে ছিলেন তারপর আপনাকে অনেক সহজ প্রশ্নটা করেছে আপনার শিক্ষাকে। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

সেই স্কুল লাইফের কথা আবার মনে পড়ে গেল। আমার নিজেরও অনেক স্মৃতি আছে ভাইবা দেওয়া নিয়ে। আপনার মত আমারও এক সময় মনে হতো যে ভাইবার সহজ প্রশ্নগুলো যেন আমাকে ধরে। আর আমি সবগুলোর উত্তর করতে পারি। কিন্তু সেই গিয়ে সবথেকে কঠিন এবং ঝামেলার প্রশ্নগুলোই আমার ঘাড়ে পড়ত। বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা পড়ে।

স্কুল লাইফে ভাইবা মানেই হল আতঙ্ক। পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পর একটা এক্সট্রা ঝামেলা। ভাইভা দিতে গিয়ে আমি কখনো তেমন ভয় পেতাম না, তবে ঘুরে ফিরে কঠিন প্রশ্নগুলোই আমাকে ধরত কেন জানি না। অনেকদিন পর আপনার পোস্ট পড়ে সেই স্কুল লাইফের কথা মনে পড়ে গেল।