আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমার বাংলা ব্লগ ডিসকোর্ড মিডিয়া চ্যানেল থেকে সংগ্রহ করা
আমার স্টিমিট ক্যারিয়ার মোটামুটি চার'বছরের। তার মধ্যে তিনবছরই কেটেছে আমার বাংলা ব্লগের সঙ্গে। অধিকাংশ সুন্দর মূহূর্ত বা স্মৃতি সেটা বাংলা ব্লগকে ঘিরেই। এগুলো বলতে গেলে কখনও শেষ করা যাবে না। তারপরও আমি আমার অনূভুতি টা প্রকাশ করব কিছু স্মৃতিচারণ এর মাধ্যমে আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে। পোস্ট টা একটু বড় হতে পারে। কারণ বুঝতেই পারছেন চার বছরের স্মৃতি।
২০২০ সালে যখন স্টিমিটে জয়েন করলাম তখন প্রথম দিকে সেরকম কিছু বুঝতাম না। মোটামুটি আমাদের দেশীয় একটা কমিউনিটিতে কাজ শুরু করি। তো একমাস পর আমার কমিউনিটির একটিভ সবাই তাদের পোস্টে steemcurator01 থেকে ভোট পেল। সর্বনিম্ন ১৩ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ ডলার পযর্ন্ত। কিন্তু পেলাম না শুধু আমি। স্বাভাবিকভাবেই আমার আত্মবিশ্বাস আমার মনোবল একেবারে ভেঙে গিয়েছিল। ঐসময় আমার স্টিমিট পথপ্রদর্শক একটা কথা বলেছিলেন ইমন ধৈর্য্য ধরো কাজ করো সাপোর্ট পাবা। উনার মাধ্যমেই আমি এখানে আসি। উনার কথা শুনে আমি কাজ অব্যাহত রাখি। এরপর মোটামুটি আরও মাসখানেক কেটে যায় একদিন সকালে উঠে দেখি steemcurator01 আমার প্রায় পাঁচটা পোস্টে সাপোর্ট দিয়েছে একইদিনে। এবং ভোটের অ্যামাউন্ট টা ছিল যথাক্রমে ৪৫ ডলার ৩৯ ডলার, ২৫ ডলার ১৩ ডলার এবং ৯ ডলার। ঐদিনের ঐ অনূভুতি আমি এখন পযর্ন্ত ভুলতে পারিনি না আর কখনও ভুলতে পারব।
shy-fox আগমনের সময়ে কিছু স্মৃতিময় স্কিনশর্ট
মোটামুটি বছরখানেক কেটে গেল আমরা কাজ করার মতো কোন কমিউনিটি পাচ্ছিলাম না। তখন ২০২১ সালের জুলাই মাস চলছে। তো একদিন আমার ঐ স্টিমিট পথপ্রদর্শক আমাদের একটা কমিউনিটির লিংক দেয় এবং বলে এখানে সবাই বাংলায় লেখালেখি করতে পারবা নতুন কমিউনিটি। এই কমিউনিটির ভবিষ্যৎ অনেক ভালো । ঐদিন ভাইয়ের কথা শুনে আমি আর দেরী করিনি। সম্ভবত ৪ জুন,২০২১ সালে আমি জয়েন করি আমার বাংলা ব্লগে। শুরু হয় আমার বাংলা ব্লগের সাথে আমার পথচলা। ঐদিনই যুক্ত হয় আমার বাংলা ব্লগের ডিসকোর্ড সার্ভারে। ডিসকোর্ড সার্ভারে এসে প্রথমদিনই পরিচয় হয় আমাদের rme দাদার সঙ্গে। প্রথম দিন তার কথা শুনে বুঝে গিয়েছিলাম এই মানুষটা অন্যদের থেকে আলাদা। তারপর চলতে থাকে নিয়মিত পোস্ট করা। নিজের মাতৃভাষায় লেখা যার অনূভুতি ছিল একেবারে আলাদা একেবারে অন্যরকম। সবকিছু ভুলে নিজের অনূভুতি প্রকাশ করতাম।
তখন দাদা দুইটা কিউরেশন একাউন্ট থেকে আমাদের ভোট দিত amarbanglablog এবং rme. দুইটা মিলিয়ে ঐ $১.৫ ডলার মতো হতো। মোটামুটি তাতেই আমি খুশি ছিলাম। আস্তে আস্তে কমিউনিটির সদস্য বাড়তে থাকল দাদা দেখল না এদের সার্পোটের ব্যবস্থা করা দরকার। তারই ধারাবাহিকতায় উনি নিয়ে আসলেন shy-fox. সেটাও এক মজার কাহিনী। হঠাৎ একদিন দাদা ডিসকোর্ডে সবাই কে tips দিয়ে shy-fox কে ফিডিং করাতে বললেন। তখনই কেউ জানে না এই shy-fox টা কী?আমি আমাদের এডমিন হাফিজ ভাইকে জিজ্ঞেস করি ভাই Shy-fox কী। জবাবে উনি বলেন tips দেন সারপ্রাইজ আছে। মজার বিষয় ততক্ষণে আমি ইউটিউব, গুগল সব ঘেটে ফেলেছি shy-fox কী এটা লিখে হা হা। পরের দিন জানা গেল এটা দাদার নতুন কিউরেশন একাউন্ট। প্রথম অবস্থায় দাদা প্রায় ১ মিলিয়ন পাওয়ার নিয়ে শুরু করে কিন্তু একমাসের মধ্যে এই পাওয়ার আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি করেন উনি।
দুই বছর আগে আমার তৈরি করা সেই meme যা এখন বাস্তব
প্রথমবার shy-fox এর ভোট পাওয়ার অনূভুতি ছিল আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দদায়ক মূহুর্ত। এরপর আমাদের বিনোদনের জন্য দাদা নিয়ে আসলেন dj-party. এখন তো ডিসকোর্ডে অনেক গুলো মিউজিক বট রয়েছে কিন্তু তখন ছিল মাএ একটা। এবং তখন এডমিন মডারেটর বাদে খুবই কম সংখ্যক সাধারণ সদস্য গান প্লে করতে পারত। তার মধ্যে আমি ছিলাম একজন। আমি ছিলাম দ্বিতীয় সাধারণ সদস্য যে দাদার থেকে Dj-party এর role পেয়েছিলাম। সেই অনূভুতি টাও দারুণ ছিল। এরপর একে একে আড্ডা ঘর, abb-school এসব প্রজেক্ট শুরু করল দাদা। যার সবগুলো ছিল যেন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।
আরেকটি মজার ব্যাপার শেয়ার করি সেটা হলো রাত জেগে চ্যাটিং করা। এখন তো দাদা সেরকম সময় দিতে পারেন না ডিসকোর্ডে। কিন্তু একসময় অনেক রাত পযর্ন্ত কথা হতো উনার সাথে। উনি একেবারে সাধারণভাবে আমাদের সাথে কথা বলতেন। এখনও সেটাই করেন তবে সময় কম দেন আর কী। একটা সময় গিয়ে আমার বাংলা ব্লগ এর টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা হয়। এবং প্রতিমাসে একবার বা দুইবার কুইজ কনটেস্ট হতো এবং যেটার পুরষ্কার ছিল অনেক বেশি। আমার মনে আছে আমি প্রায় ৭০ স্টিমের মতো পুরষ্কার জিতেছিলাম দুইবারের কনটেস্টে। কিন্তু সময়ের অভাবে এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। টেলিগ্রামে কুইজ টা অনেক মিস করি।
আমার লাইফের সবচাইতে বড় অর্জন
মজার ছলে আমি একদিন একটা মিম শেয়ার করেছিলাম abb-meme এর ডিসকোর্ড চ্যানেলে। সেটা প্রায় আজ থেকে দুই বছর আগে। কিন্তু সেইটা যেন এখন বাস্তব হয়ে গিয়েছে। আমার লাইফে সবচাইতে বড় অর্জন সবচাইতে বড় পাওয়া ছিল আমার বাংলা ব্লগ থেকে। সেটা ছিল গতবছর দাদার আয়োজিত ক্রিপ্টো প্রাইজ প্রেডিকশন -২০২৫ কনটেস্ট থেকে প্রথম পুরষ্কার জেতা। আমি যখন কনটেস্ট এর রেজাল্ট দেখছিলাম তখন আমি ক্লাসে বসে ছিলাম। নোটিফিকেশন দেখে আমি এমনভাবে লাফিয়ে উঠি ক্লাসের মধ্যে সবাই আমার মধ্যে হা করে তাকিয়ে ছিল। এতোবড় পুরষ্কার তার আগে আমি কখনও পাইনি। পুরো পোস্ট করতে অ্যানালাইসিস করতে আমার প্রায় ১ সপ্তাহ সময় লেগেছিল।
এখনও অনেক মূহূর্ত অনেক স্মৃতি আছে। আমাকে জীবনে কেউ কখনও জিজ্ঞেস করেনি ভবিষ্যতে আমি কী চাই আমার পছন্দের কাজ কী বাহ গান কী। আমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেউ কখনো জানতে চাইনি কেউ কখনও প্রশ্নও করেনি। কিন্তু সেই অনূভুতি টা আমি পেয়েছিলাম গতবছর ৫ মার্চ যখন আমি রবিবারের আড্ডায় প্রথম অতিথি হয়ে আসি। সত্যি সেদিন আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম। আমাকে নিয়ে আপনাদের আগ্রহটা সেদিন আমার চোখে পানি নিয়ে এসে দিয়েছিল। এসব মূহূর্ত এসব অনূভুতি শুধু আমার মাঝে রয়েছে থাকবে। আর সময় সুযোগ পেলে সবকিছু ভুলে গিয়ে প্রকাশ করব। ইনশাআল্লাহ সারাজীবন আমার বাংলা ব্লগের সাথে থাকব।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি এই কমিউনিটির তুলনা হয়না। আপনি সেই ২০২০ সাল থেকে এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এখনো পর্যন্ত আছেন এই কমিউনিটিতে ভালো লাগলো শুনে। আপনার খুব সুন্দর স্মৃতিচারণ এবং স্ক্রিনশর্ট এর মাধ্যমে দৃশ্য গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম শুরু থেকে এই পর্যন্ত খুব সুন্দর ভাবে স্মৃতিচারণ করেছেন আমার বাংলা ব্লক কমিউনিটির ইউজার হিসেবে। আর আপনার এই পোস্ট করার মধ্য দিয়ে বেশ দারুন অনুভূতি জানতে পারলাম। অনেক অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার লেখা সুন্দর গোছানো পোস্ট পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনারা যারা দীর্ঘ দিন থেকেই আমার বাংলা ব্লগ এর সাথে আছেন, তাদের স্মৃতি মূলক কথা গুলো আসলে আমাদের নতুন দের চেয়েও অনেক আলাদা। আপনি একই দিনে ৫ টি পোস্টে বেশ ভালো রকমের ভোট পেয়েছেন, যা আসলেই ভোলার মতোন না! আবার চোখের সামনেই এবিবি-স্কুল, শাই-ফক্স গঠন হতে দেখা কিংবা প্রেডিকশন পোস্ট এ এত হিউজ এমাউন্ট এর ভোট পাওয়া... উফফ! কী দারুণ ব্যাপার!!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit