বুক রিভিউ ; ( আরণ‍্যক- বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায়)।

in hive-129948 •  5 months ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ বুধবার, ১২ ই জুন , ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000556553.jpg


বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

------------
বইয়ের নামআরণ‍্যক
লেখকবিভূতিভূষণ বন্দোপাধ‍্যায়
প্রকাশনীসূর্যোদয় প্রকাশন
প্রচ্ছদআদনান আহমেদ রিজন
মূল‍্য৩০০ টাকা


কাহিনী সংক্ষেপ


1000556554.jpg

1000556556.jpg

1000556557.jpg


বি.এ পাশ করে কলকাতায় বেকার হয়ে বসে ছিল একটা সাধারণ ছেলে। এমন অবস্থা ছিল দীর্ঘদিন মেসের টাকা পযর্ন্ত দিতে পারে না। শেষমেশ তার একটা বন্ধুর সাথে পরিচয় হয় কথায় কথায় সেই বন্ধু তাকে একটা চাকরির প্রস্তাব দেয়। কলকাতা থেকে অনেক দূরে তাদের একটা জঙ্গল মহাল আছে যেটা প্রায় ২০ হাজার বিঘার বেশি। সেখানে একজন কর্মকর্তা লাগবে যে সব দেখাশোনা করবে। মোটামুটি কোন কিছু না ভেবে রাজি হয়ে যায়। এবং কলকাতা থেকে বহুদূর সেখানে চলে যায়। কোন জনবসতি নেই জঙ্গলের মধ্যে একটা কাছারি বাড়িতে সে এবং আরও কয়েকজন কর্মচারী থাকে। প্রথম প্রথম কিছুতেই লেখকের মন সেখানে টিকে না।

সে সারাজীবন কলকাতার কোলাহলে থেকেছে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়েছে থিয়েটার দেখেছে এই জঙ্গলে কীভাবে থাকবে সেখানে কেউ বাংলা পযর্ন্ত বোঝে না। তবে আস্তে আস্তে থাকতে থাকতে তার ভালো লাগতে শুরু করে এই জঙ্গলটা। ক্রমেই সে প্রেমে পড়ে যায় ঐ অরণ‍্যের। তার মহালে সেই ছিল সব। তবে ঐ এলাকার লোক ছিল বড় গরীব। সেখানে ধান একেবারেই হতো না। ফসল বলতে মকাই অর্থাৎ ভূট্টা, কালাই এবং গম। সেখানে উচ্চশ্রেণির বড়লোক ছাড়া ভাত সেরকম কেউ খাইতে পেত না। সবাই কালাইয়ের ছাতু মকাই সেদ্ধ চিনা ঘাস সিদ্ধ এগুলো খেত। ভাত খাওয়া ছিল তাদের কাছে ভোজের মতো। ক্রমেই অরণ‍্যের প্রেমে পড়ে যায় সে। পাশাপাশি গাঙ্গোতা ঐ গরীব জাতি সহ ঐ এলাকার সব সাধারণ মানুষকে ভালোবাসে ফেলে সে।


1000556558.jpg

1000556559.jpg

1000556560.jpg


একটা সময় গিয়ে জঙ্গল ছাড়া আর মন টেকে না অবস্থা এমন। তবে সেখানে রাজপুত রা ছিল ক্ষমতাশালী তারা সুযোগ পেলেই নিরিহ গাঙ্গোতাদের উপর নির্যাতন করত। সেটাও তিনি যতটা সম্ভব রুখে দেন। সেখানে গিয়ে কান্তা, মঞ্চী এদের সাথে তার পরিচয় হয়ে যায়। মঞ্চী ছিল এক গাঙ্গোতা প্রজার দ্বিতীয় বউ। তার মহালের পাশেই ছিল একটা আদাবাসী রাজা নাম দোবরু পান্না। সে এমন এক রাজা যার দুইটা মহিষই সম্পদ। এবং তার যে রাজবাড়ী তার চেয়ে কলকাতার গরীব বাঙালির অবস্থা ভালো। তবে তার বংশের মর্যাদা আছে তার জাতির সবাই তাকে সম্মান করে। প্রায়ই সে রাজা দোবরু পান্নার ওখানে ঘুরতে যেত। সেখানে গিয়ে রাজ বংশের এক কন‍্যা ভানুমতির সাথে তার পরিচয় হয়।


1000556561.jpg

1000556562.jpg


তবে সে সেখানে এসেছিল ঐ জঙ্গল মহালে বসতি স্থাপন করতে। দীর্ঘ ছয় বছর থাকার পর একে একে লবুটুলিয়া,.নাঢ়া বইহার, ফুলকিয়া বইহার এর জঙ্গলে সে বসতি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। তবে তিনি যে জঙ্গল কে নিজের চেয়ে বেশি ভালোবেসেছিলেন চোখের সাথে সেটা ধ্বংস হতে দেখতে কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু এসব তো তার না। সেজন্য সে কিছু করতে পারেনি। ছয় বছর থাকার পরে তার কাজ শেষ হয়। জঙ্গল মহাল এখন বসতি স্থাপন হয়ে গিয়েছে এখন তাকে আবার কলকাতা ফিরতে হবে। ফেরার আগে সে শেষবারের মতো যায় রাজা দোবরু পান্নার ওখানে। শেষে ভানুমতির সরলতা, তার সুন্দর গঠন রুপ ব‍্যবহার তাকে মুগ্ধ করে। সে যদি এখানে থাকত তাহলে ভানুমতি কে সে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথাও ভাবে। কিন্তু তা তো সম্ভব না তাকে চলে যেতে হবে। তবে যাওয়ার আগে সম্ভবত আদিবাসী কন‍্যা ভানুমতি তার হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। এখানেই শেষ হয় উপন‍্যাস টা।



ব‍্যক্তিগত অনূভুতি



যেকোনো উপন‍্যাসের ক্ষেএে প্রথমদিকে আমার পড়তে ভালো লাগে না। কিন্তু পরবর্তীতে গিয়ে একটা নেশা ধরে যায়। পড়া যেন ছাড়তে পারি না। তবে এই উপন‍্যাস টা শেষ করতে প্রায় বিশ দিন সময় লেগেছে কারণ আমার নতুন চাকরি। আমার লাইফে পড়া সেরা উপন‍্যাস এইটা। প্রকৃতি জঙ্গল এগুলোর প্রতি একটা ভালোবাসা তৈরি হয়েছে উপন‍্যাস টা পড়ে। পাশাপাশি ঐ এলাকার সাধারণ মানুষের যে দুঃখ কষ্ট সেটাও অসাধারণভাবে লেখক ফুটিয়ে তুলেছে। লেখক যেভাবে প্রকৃতি পরিবেশ এর রুপ টা বর্ণনা করেছেন সেটা অসাধারণ ছিল। মূহূর্তের জন্য আমার মনে হয়েছে আমি যেন এই লবটুলিয়া, ফুলকিয়া বইহার, নাঢ়া বইহার ঘুরে এসেছি।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বেশ সুন্দর আলোচনা করেছেন ভাইয়া। আমার প্রিয় উপন্যাসসমূহের মধ্যে এটি অন্যতম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।