আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
ওর সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছে শেষ কথা হয়েছে সেটাও প্রায় ৪ বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। ওর সঙ্গে যেদিন শেষ কথা হয়, আমার পরিষ্কার মনে আছে সেদিন আমি অনেক কান্না করেছিলাম। ফোনের ওপাশ থেকে ও শুধু আমার ফুপিয়ে কান্না করার আওয়াজ পাচ্ছিল। কিছু বলতে পারছিল না। ওর কিছু বলারও ছিল না। কারণ দোষটা সম্পূর্ণ আমার ছিল। ও তো কখনো আমাকে ভালোবাসেনি ও তো কখনো আমাকে আশা দেখাইনি আমি তো নিজেই সবকিছু ভেবে নিয়েছিলাম। তবে যেদিন শুনলাম ওর বিয়ে এবং ও রাজি,নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি। নিজের ভেতরের সব রাগ ক্ষোভ উপরে দিয়েছিলাম। এক পর্যায়ে আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে ওপাশের মানুষটাও বুঝতে পারে সেটা। সত্যি হয়তো ওকে অনেক ভালোবেসেছিলাম। সেসব তো অনেক আগের কথা। এখন ওসব নিয়ে ভাবার সময় কোথায়! তারপর থেকে ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই। শুনেছিলাম বেশ ভালো জায়গাই বিয়ে হয়েছে, ছেলে ভালো চাকরি করে। আমি তখন বেকার, ওকে অপেক্ষা করার কথা বলারও সাহস পায়নি।
শেষ কথা হওয়ার পর নিজেই রাগ করে ফেসবুক ওয়্যাটঅ্যাপস থেকে ওকে ব্লক করি। তারপর নিজের ফেসবুক একাউন্ট না ডিঅ্যাকটিভ করে দেয়। অনেকদিন ডিপ্রেশনে ছিলাম। মোটামুটি বছরখানেক পুরোপুরি একা ছিলাম। তারপর নিজেকে কিছুটা গুছিয়ে নিয়ে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে ঢুকে যায়। সেটাও অবশ্য পরিবারের চাপে। ও চলে যাওয়ার পর আমার আর কোনো লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল না। ও হ্যা তার নাম টা শুনবেন না। নামটা বেশ চমৎকার ছিল। তবে আমি ওকে অদিতি বলে ডাকতাম। আসল নামটা না বলি। অদিতি ছিল আমার ক্লাসমেট। কীভাবে যেন ওকে পছন্দ করে ফেলি ওর প্রেমে পড়ে যায়। আজ এতো কিছু বলছি কেন?? সেটা পরে বলছি। প্রথম দিকে খুব একটা ভালো স্যালারি দিত না এরা। মোটামুটি দুই বছর কম স্যালারিতে সেখানে কাজ করি। পরে তারা প্রমোশন দেয় আমিও বেশ ভালো পারফর্ম করি। কিন্তু সেখানে বেশিদিন থাকিনি পরে ভালো একটা মাল্টিন্যাশনালে জব হয়ে যায় তাও ভালো স্যালারিতে এখন সেখানেই আছি। কিছুদিন হলো নিজের পুরানো ফেসবুক একাউন্ট টা আবার এক্টিভ করেছি।
দেখি আমার প্রায় সব বন্ধুরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সবাই নিজের রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে ফেলেছে কারো কারো তো ছেলে মেয়ে হয়ে গিয়েছে। ইনবক্সে অসংখ্য মানুষের ম্যাসেজ বেশিরভাগই ফ্রেন্ড। প্রথম দিনই অদিতির আইডিতে গেছিলাম। উদ্দেশ্যে ছিল ব্লকটা ছাড়িয়ে কথা বলব। কেমন আছে জিজ্ঞেস করব। কিন্তু মনের মধ্যে কিছুটা সংশয় ছিল এখনো কী ওর সেই একাউন্ট টা আছে? হ্যা যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হলো। ওই একাউন্ট টা আর ফেসবুক ম্যাসেনজারে নেই। আমাদের পুরাতন কলেজ ম্যাসেনজার গ্রুপের মেম্বারদের তালিকা চেক করি না ওর একাউন্ট টা নেই। নিশ্চয়ই নতুন একাউন্ট খুলেছে। দুই চারজন বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম ওর বিষয়ে, কেউ কিছু বলতে পারল না। কিন্তু আমি কেন আবার ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাচ্ছি,বিষয়টি আমারও জানা ছিল না। এখন বাড়ি থেকে মা খুব চাপ দিচ্ছে বিয়ের জন্য। বয়স তো কম হলো না ২৬-২৭ তো হবেই। কিন্তু ক্রমাগত আমি না করে আসছি।
ইদানিং অফিস থেকে এসেই আমি বসে যায় ল্যাপটপ নিয়ে ফেসবুকের সামনে। ওর নামটা লিখে সার্চ দেয়। এই একমাসে ঐ নামের অন্তত ১০০ জনকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছি। কিছু কিছু একসেপ্ট করছে কথা বলেই বুঝতে পেরেছি, না আমি যাকে খুঁজছি উনি সে না। তারপর যথারীতি ব্লক। আবার অসংখ্য এমন ছিল যারা একসেপ্ট করেনি। ও সবসময়ই ওর প্রোফাইল পিকচার দিয়ে রাখত গোলাপ ফুলের ছবি। আচ্ছা এখনো কী ওর এই স্বভাব আছে? না বিয়ের পর স্বামীসহ ছবি দিয়ে রেখেছে প্রোফাইলে। আচ্ছা ওর কী ছেলে মেয়ে কিছু হয়েছে এসব প্রশ্ন আমার মনে আসতো। অফিসে তখন লাঞ্চ টাইম চলছে। কান্টিনে বসে কলিগদের সঙ্গে লাঞ্চ করছি এমন সময় আমার এক কলেজের বান্ধবীর ম্যাসেজ। একটা লিংক দিয়ে বলল এটা অদিতির নতুন আইডির লিংক। সেটা দেখে বুকের মধ্যে কেঁপে উঠেছিল মূহূর্তের জন্য। কিছুটা উওেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। বেশি দেরি করিনি তখনই পাঠিয়ে দিলাম ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট। তবে মনের মধ্যে একটা সংশয় ছিল ও কী আমার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করবে??
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit