আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
যতই দিন যাচ্ছে প্রকৃতির সাথে যেন একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে আমার। এটা ঠিক কেন তৈরি হচ্ছে সেটার সঠিক কারণ আমার অবগত না। তবে এটার বেশ ভালো একটা প্রভাব আমার মন আমার মানসিকতার উপর পড়ছে। আমাদের জেনারেশন টা যেন স্যোসাল মিডিয়া ছেড়ে বের হতেই পারছে না। আমিও তার বাইরে না। আমার নিজেরও দিনের অধিকাংশ সময় কাটে ইন্টারনেটে। সারাদিন মোবাইল এবং ল্যাপটপের মাধ্যমে পুরো পৃথিবী কে নিজের ঘরের মধ্যে নিয়ে চলে আসি। এমন একটা অবস্থা আমি ভুলেই গেছি এর বাইরে একটা সুন্দর জগত আছে। যদিও অনেক টা বাধ্য হয়েই আমি আমার জগত টা এইরকম করে নিয়েছি। এই যে রমজান মাস চলছে। এই মাসটা যেন আমার জীবন টা আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। সারা রাত জেগেই থাকি।
সেহেরি করে একেবারে ঘুমাই। ঘুম থেকে যখন উঠি ঘড়ির কাঁটা তখন ১২ এর ঘরে থাকে। তারপর বাকি সময় টাও এই ইন্টারনেটেই কাটে। বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে ভরা সবুজ মাঠ টাতেও উকি দেওয়া হয় না। গ্রামে থাকার একটা সুবিধা আমি নিতে পারছি না। পারছি না প্রকৃতি কে উপভোগ করতে। গতকাল বেশ গরম ছিল। বেশ বলতে আমার সহ্য সীমার বাইরে বলতে হয়। বাধ্য হয়েই বিকেলে বের হলাম। ভাবলাম ইফতারের আগে ঘন্টা খানেক সময় বাইরে কাটাব। ঘরে আর টিকতে পারছি না গরমে। আর আমার একটা সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত গরমে সারাদিন ঘরের মধ্যে থাকলে এইসব ফোন ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকলে আমার প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা করে। এইজন্যই এই সিদ্ধান্ত টা নেওয়া। যাই একটু প্রকৃতির সান্নিধ্য নিয়ে আসি। মাঠ টা একেবারে আমার বাড়ির পাশেই।
মাঠে গিয়ে আমার অনূভুতি টা বেশ ভালো ছিল। তখন হঠাৎ একটা লাইন মনে পড়ে গেল "দেখা হয় নাই চক্ষু মিলিয়া, ঘর হইতে দুই পা ফেরিয়া। সত্যি কী সুন্দর। মাঠে যে ধানগুলো রয়েছে সেগুলো এখন প্রাথমিক পর্যায়ে। ধানক্ষেতের মাঝ দিয়ে রয়েছে পানি দেওয়ার ড্রেন। যদিও এখন পানি খুবই কম দেয়। যেহেতু বিকেল বেশ দারুণ বাতাস ছিল মাঠে। সুন্দর বাতাসে কচি ধানগুলো মাথা নাড়াচাড়া করছিল। হাওয়ার দিকে বার বার তাদের হেলে পড়া টা অসাধারণ লাগছিল। মনে হচ্ছিল এই গরমে এইরকম বাতাসে ওরাও বেশ উৎফুল্ল। আমি ধানক্ষেতের পাশেই বসে ছিলাম। সবার আগে ফোন টাকে কাছ থেকে সরিয়ে দিলাম। মনে মনে বললাম তুই একটু দূরে থাক হা হা। যদিও ফটোগ্রাফি করার জন্য মাঝে মাঝে আমি হাতে নিচ্ছিলাম ফোনটা। যাইহোক ঐ সময়টাতেও বেশ কিছু নোটিফিকেশন আসছিল। কিন্তু আমি সেটা পুরোপুরি ইগনোর করি।
দেখতে দেখতে যেন সময় টা পেরিয়ে গেল। ঐদিকে মসজিদে ইমাম সাহেব ইফতারের প্রস্তুতি নিতে বলছে। সূর্যটাও পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। আজকের দিনে সে আমাদের বিদায় দিতে প্রস্তুত। শেষ বিকেলে সে যেন নিজের তাপ বেশ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। তবে তার যে একটা সৌন্দর্য আছে সেটা সে প্রকাশ করছে। কী অসাধারণ লাগছিল এই মূহূর্তে সূর্যটা। আমাদের জীবন টা খুবই অদ্ভুত হয়ে গেছে। সারাজীবন আমরা একটা প্রতিযোগিতায় নেমে যায় ভালো থাকার প্রতিযোগিতা। সবকিছু পেতে হবে সেজন্য টাকা ইনকাম করতে হবে। কিন্তু কখন যেন এটা করতে গিয়ে আমরা এতোটা ব্যস্ত হয়ে পড়ি নিজের জীবন কে উপভোগ করতে ভুলে যায়। নিজেকে সময় দিতে ভুলে যায়। ফলস্বরুপ নিজের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। আমি প্রায়ই একটা কথা বলি মানুষের জীবন ভয়ংকর সুন্দর। কথাটা কিন্তু শতভাগ সত্য।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি গ্ৰামে অবস্থান করছেন কিন্তু আপনি গ্ৰামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন না। এটা আসলেই আপনার জন্য দুর্ভাগ্যজনক।গ্ৰামের মধ্যে থাকা অবস্থায় যখন একটু গরম লেগে যায়, তখন একটু বাহিরে বের হলেই মনের মধ্যে আলাদা রকম শান্তি লাগে। কেননা গ্ৰীষ্ম কালে গ্ৰামের গাছপালা গুলো গ্ৰামের মানুষদের ঠান্ডা বাতাস উপহার দিয়ে থাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাই ঠিকই বলেছেন । ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit