আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
Midnight horror station থেকে স্কিনশর্ট নেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রভাঁগার সমুদ্র তটে এক সূর্য মন্দিরের কাজ চলছিল ১২ বছর ধরে। সেখানেই স্থপতি হিসেবে ছিল বিশু মহারানা। তার ছেলে ধর্মপদোর বয়স ১২ বছর। জন্মের পর ধর্মপদ এবং তার বাবা কেউ কাউকে দেখেনি। জন্ম থেকেই ধর্মপদ অসাধারণ কিছু গুণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অনেক ছোট থেকে জটিল নকশা তৈরি করতে সেগুলো বুঝতে পারত। বাবার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার সাহস করে ধর্মপদ। ঘটনাচক্রে ধর্মপদ এসে পড়ে শিবেই সান্তারার কাছে। শিবেই ছিল ঐ সূর্যমন্দিরের প্রথম ও প্রধান স্থপতি। তবে এক সন্দেহের জের ধরে মন্ত্রী মহাবীর পট্টনায়ক এর কথায় তাকে অব্যাহতি দেয় মহারাজ নরসিংহ দেব।
মন্দিরের কাজ শেষ। তবে মন্দিরের উপরে একটা পাথর খন্ড কিছুতেই বসানো যাচ্ছে না। দুই বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে সবাই। এই অবস্থায় মহারাজ নরসিংহ দেব ঘোষণা করে আগামী পূর্ণিমার মধ্যে কাজ শেষ না হলে মন্দিরে কর্মরত সকল শ্রমিকের প্রাণ যাবে। এই অবস্থায় বিশু মহারানা ছুটে যায় শিবেই এর কাছে। শিবেই প্রথমে না বললেও পরবর্তীতে কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর ঘটনাচক্রে ঐ ঘটনার সমাধানের জন্য ধর্মপদকে বিশু মহারানার কাছে পাঠায় শিবেই সান্তারা। বাবা ছেলের প্রথম দেখা হলেও কেউ জানত না তাদের পরিচয়। ধর্মপদ তার নাম বলে কৃষ্ণ। নিজের জন্মগত প্রতিভার কারণে ঐ সমস্যার সমাধান করে দেয় ধর্মপদ। মন্দিরের উপরে পাথর টা বসানো যায়।
কিন্তু এক নতুন সমস্যার উদয় হয়।ঐ সমস্যার সমাধানের জন্য এক কঠিন পথ বেছে নেয় শিবেই সান্তারা। শিবেই ঐদিন চিরকালের মতো ঘর, রাজ্য ছাড়বেন। শিবেই যাবেন ঐ বটগাছের পাদমূলে যেখানে তার আরাধ্য রাজকুমার সিদ্ধার্থ অর্থাৎ গৌতম বুদ্ধ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। হাজার শ্রমিকের প্রাণ বাঁচানোর জন্য ঐদিন শিবেই ইচ্ছা করেই আজীবনের জন্য মুছে ফেলে ধর্মপদোর অস্তিত্ব। বাবা ছেলের পরিচয়ের আগেই শেষ হয় ধর্মপদোর জীবন। শিবেই এগিয়ে গিয়ে ছোট্ট কিশোর ধর্মপদোর ছোট্ট নিথর দেহটা কাঁধে তুলে নিলেন। মন্দির শীর্ষে উড়ছে মহারাজ নরসিংহ দেবের কৃতিত্ত্ব। মাদল বাজছে হাজার মানুষের উল্লাস ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। ওখানেই কোনো এক শনের কুঠিরের সামনে বসে ধর্মপদোর কথা ভাবছে বিশু মহারানা। শিবেই একবার সেদিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। তারপর নিচে নামতে শুরু করলেন। শিবেই পৌঁছে গেলেন নদী তটে। মাথার উপর জেগে বিষণ্ন চন্দ্রভাগার চাঁদ। মাঝে মাঝে মেঘ এসে ঢেকে
দিচ্ছে তাকে।
মাদলের শব্দ আর উল্লাস ধ্বনি এ জায়গাতে ক্ষীণ হয়ে এসেছে। নোনা বাতাস বয়ে আনছে সমুদ্রের গর্জন। শিবেই চড়ে বসলেন তার ছোট্ট নৌকাতে তারপর সেই বৌদ্ধ মূর্তি এবং ধর্মপদোর দেহটা রশি দিয়ে নিজের দেহের সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে নিয়ে মোহনার দিকে দাঁড় বাইতে লাগলেন। ক্রমেই তীব্র হতে লাগল সমুদ্রের গর্জন। একসময় শিবেই দাঁড় টাকে ছুড়ে ফেলে দিলেন জলে ঐ দুটোকে আর প্রয়োজন নেই। ঐ তো দেখা যাচ্ছে মোহনা। শিবেই শান্তারা তার বুঁকে বাঁধা বৌদ্ধ মূর্তি আর ধর্মপদকে ভালো করে জাপটে ধরলেন। ঠিক সেই সময় একখণ্ড মেঘ এসে ঢেকে দিল মাথার উপরের চন্দ্রভাগার চাঁদকে। সমুদ্রের আহবানে উল্কা গতিতে শিবেই শান্তারা ধর্মপদকে নিয়ে মোহনার দিকে ছুটে চলল নৌকায়, সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার জন্য.......।
কালের যাএাপথে কত সম্ভাবনাময় প্রাণ নিভে যায়। তার খেয়াল কেই বা রাখে। বলেছিলাম না সময় এক অবুঝ শিশু মৃত্যু কিংবা শোক বলে এখনো কিছু চিনতে শেখেনি সে।
আমার জীবনে পড়া সেরা একটা বই ছিল এটা। যদিও এটা আমি প্রথম অডিও বুক হিসেবে শুনেছিলাম। প্রথমবার শোনার পর এতো ভালো লেগেছিল তারপর আরও কয়েকবার শুনেছিলাম। শেষে ধর্মপদোর করুন পরিণতি রীতিমতো আমার চোখে পানি এনে দেয়। আমার লাইফে এটাই প্রথম কোন বই ছিল যেটা শুনে কেঁদেছিলাম। আজ আরেকবার শুনলাম অডিও বুকটা। মনে হলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেয়।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্যাড এন্ডিং!!
বাংলা অডিও বুক আছে নাকি?
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit