আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আমি তখন সম্ভবত ক্লাস সিক্সে পড়ি। আমার পছন্দের সাবজেক্ট গুলোর মধ্যে একটা ছিল বাংলা এবং আনন্দপাঠ। ঐ বইগুলোতে যে গল্প গুলো থাকত আমার বেশ ভালো লাগত পড়তে। আমাদের বাংলা বইয়ে গুরুচন্ডালী নামক একটা গল্প ছিল। গল্পটা আশাকরি অনেকেই পড়েছেন। এখানে গুরুচন্ডালী বলতে লেখার ক্ষেএে সাধু এবং চলিত ভাষা মিশ্রিত করে ফেলার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। ক্লাসের বাংলা স্যার আবার ছাএদের এই গুরুচন্ডালী দোষ ক্ষমা করতেন না একেবারেই। সেই সাধুভাষার যুগ তো পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন শুধুমাত্র ঐ বাংলা ব্যাকারণে যতটা পড়ি আর কী। এইতো কয়েকদিন আগেই গেল একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অন্য দেশগুলোর কাছে এটি শুধুমাত্র ভাষা দিবস হলেও বাঙালিদের কাছে আলাদা একটা গুরুত্ব বহন করে দিনটা। ১৯৪৮ সালে সর্বপ্রথম যখন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করে উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাএ রাষ্ট্রভাষা। ঘটনার শুরু সেখান থেকেই। তারপর সেই ঘোষণার ফলাফল দাঁড়ায় ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ঐ ভাষা আন্দোলন। ভাষার জন্য রাস্তায় লুটিয়ে পড়েছিল বাংলা মায়ের কিছু সন্তান।
তারপর তো কত আন্দোলন গেল। আমরা স্বাধীনতাও পেয়ে গেলাম। এখন শুধু ঐ প্রতিবছরে একদিন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা দিবস পালন করি। তাহলেই ভাষা শহীদদের প্রতি ভাষার প্রতি আমাদের দায়িত্ব শেষ। গতকাল দাদা হ্যাংআউটে কিছুটা বলেছিলেন ওপার বাংলা মানে কলকাতায় বাংলা ভাষার করুণ অবস্থা নিয়ে। অসংখ্য বাঙালি নাকি বাংলা ভাষায় কথা বলতে দ্বিধাবোধ করে। আমাদের দেশে অবস্থা ততটা খারাপ না। তবে বিগত কয়েক বছরে শহীদ দিবসে যা হচ্ছে সেটা এর থেকেও খারাপ। স্যোসাল মিডিয়ায় গেলে এগুলো নজরে আসে। কয়েকদিন ধরে দেখছি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ভাষা দিবস উপলক্ষে অনেক স্কুল কলেজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। যেখানে তারা হিন্দি গান সহ বাংলা গানের তালে তালে নাচছে। এই হলো আমাদের দেশের কিছু সংখ্যক মানুষের মাতৃভাষা দিবস উৎযাপন।
আরও কিছু মজার ঘটনা আছে। শহীদ মিনার চত্বরে অসংখ্য ছেলে মেয়ে ফুল দিতে আসে। তো আমাদের দেশের কিছু মিডিয়ার সাংবাদিক এইরকমই কিছু ছেলে মেয়ের কাছে জিজ্ঞেস করেছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি কী,কেন,কীভাবে? সেখানে তারা যে উওর দিয়েছে সেটা মোটেই কাম্য না। তখনই বোঝা হয়ে গেছে আমাদের বর্তমান জেনারেশনের একটা বিশাল অংশ গৌরবময় একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কতটুকু জানে। তখন আমার নিজের কাছেই লজ্জা লাগছিল। অবস্থাটা এখন এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে "রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই",, হিন্দি ছাড়া গান নাই, আর ইংরেজি ছাড়া চাকরি নাই। না আমি কোনো ভাষাকে অবজ্ঞা বা কটাক্ষ করছি না। তবে এটা বর্তমান অবস্থা। আমরা এখন যে বাংলা ভাষায় কথা বলি সেটা একেবারে পিওর বাংলা ভাষা না। ভাষা পরিবর্তনশীল যেটা গতকাল দাদা নিজেও বলেছে। তাই বলে এতটা পরিবর্তন যেন না হয় যে বাংলা ভাষা একসময় তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে।
বতর্মান সময়ে সবচেয়ে বেশি চলমান রয়েছে বাংলিশ ভাষা। এটা না বাংলা না ইংরেজি। যদিও আমরা স্যোসাল মিডিয়া চ্যাটিংয়ের জন্য এটাই ব্যবহার করি। আসলে নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলে আপনি যে শান্তি পাবেন যে তৃপ্তি পাবেন সেটা অন্য ভাষায় কথা বলে পাবেন না। আমরা যতটা অপসংস্কৃতি চর্চা করা শুরু করেছি তাতে বাংলা ভাষা হারিয়েও যেতে পারে। ভাষা শহীদের প্রতি আমরা সম্মান দেখাই একদিন। ভাষা নিয়ে আমাদের চেতনা জাগ্রত হয় একদিন। কিন্তু এমন মানুষ,মানে এমন বাঙালি এখন কী আছে যে তার মাতৃভাষা বাংলা কে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। হ্যা আছে আমার দেখা একজন আছে। সে আমাদের দাদা। তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলা ভাষাকে নিয়ে। এখন স্টিমিট প্লাটফর্মে বাংলা ভাষার কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগের অবস্থান শীর্ষে। একবার ভাবুন এক দাদা যদি নিজের ভাষা টা নিয়ে এতটা করতে পারে তাহলে জাতীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষার অবস্থান কতটা শক্তিশালী হবে। শুধু ফেব্রুয়ারি না বাংলা ভাষা আমরা সর্বদা চর্চা করব। নিজের ভাষার প্রতি সর্বদা সম্মান দেখাব এটাই হোক এই ফেব্রুয়ারিতে আমাদের প্রতিশ্রুতি।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।