আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
একটা সময় ছিল যখন মনে করতাম ইস কবে যে বড় হবো। আর তারপর সবকিছু নিজের ইচ্ছামতো করতে পারব। কেউ কিছু নিষেধ করতে পারবে না যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাব এই করব সেই করব। কিন্তু এখন বড় হয়ে বুঝতেছি আসলে ঐ সময়টাই ভালো ছিল। তখন ভুল বুঝলেও এখন বুঝতেছি আসলে আমাদের মা বাবা বা বড় ভাই তখন কেন শাসন করত। কেন ঐকাজগুলো করতে দিতে চাইত না। আমার বিশ্বাস একজন মানুষ তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় অতিবাহিত করে স্কুল বা কলেজ বা ইউনিভার্সিটি লাইফে। জীবনে সবচাইতে উপভোগ্য সময় হয়ে থাকে এগুলো। তবে হ্যা কিছুক্ষেএে ব্যতিক্রমও দেখা যায়। তা যাক সেটা কোনো ব্যাপার না। আমার কথা বলতে গেলে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় বা ভালো সময় কাটছে এখন। এখন আমি কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে লেখাপড়া করছি আমার লাইফে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করছি সময় টা। তবে ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলতে পারি না।
সবচাইতে ভালো সময় কলেজ লাইফে অতিবাহিত করলেও আমার স্মৃতিতে, আমার হৃদয়ে একটা নামই রয়েছে সেটা হলো আমার মাধ্যমিক বিদ্যালয় কুমারখালী এম এন পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। স্কুলটা নিয়ে আগেও আপনাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটা লেখা শেয়ার করেছি। ২০১৪-২০১৯ পাঁচ বছর এখানে লেখাপড়া করেছি। স্কুলে ভালো খারাপ অনেক অভিজ্ঞতা অনেক স্মৃতি রয়েছে। জীবনে অনেক কিছু শিখেছি এখান থেকে। অনেক নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। প্রথম স্কুল পালানো প্রথম ফেল করা প্রথম প্রধান শিক্ষকের থেকে মার খাওয়া সবকিছু এখান থেকেই পেয়েছি। সেজন্যই মনে হয় এটা আমার স্মৃতিতে এখনো গেঁথে আছে। সেদিন বিকেল বেলা আমি এবং আমার বন্ধু রাসেল চলে গেলাম স্কুলে। রাসেলই প্রথম আমাকে বলল ইমন অনেকদিন স্কুলে যাওয়া হয়না চলো যায়। আমি বলি ঠিক আছে চলো যায়।
গেট দিয়ে ঢুকতেই একটা জিনিস নজরে আসে এম এন কে এখন মথুরানাথ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নাম কুমারখালী মথুরানাথ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মথুরানাথ হলো এম এন এর ফুল ফর্ম। এবং ১৮৫৬ সালে উনিই প্রতিষ্টা করেন স্কুলটা। ঐসময়ে অনেক প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি ছিলেন উনি। স্কুলের ভেতরে গিয়ে দেখি সবকিছু আগের মতোই আছে। প্রধান শিক্ষকের রুমের সামনে ফুল বাগান টা এখনো আছে। সমাবেশ করার স্থানটা ঐরকমই আছে। তবে স্কুলের দেয়াল টাই মাঝে রং করা হয়েছে সেটাও নজরে আসলো। আমাদের সময়ে স্কুলের চারিদিকের প্রাচিল ছোট ছিল। সহজেই আমরা সেটা টপকে বাইরে চলে যেতাম। কিন্তু প্রাচিল টা এখন অনেক বড় করা হয়েছে চেষ্টা করলেও কোনো স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে সেটা টপকানো সহজ না। স্কুলের মধ্যে বড় মাঠটা এখনো আছে। এবং এটা দেখে সবচাইতে ভালো লাগল এখনো বিকেল হলে অসংখ্য ছেলে এখানে খেলতে আসে। এই জিনিসটার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বলা যায় বিকেলবেলায় যেন মাঠটা প্রাণ ফিরে যায়।
পাশাপাশি আমরা যেখানে প্রাইভেট পড়তাম আমাদের স্যারের কাছে সেই রুমটাও একইরকম আছে। তবে এখন সেখানে পড়াতে দেওয়া হয় না। দরজার উপর এখনো আমার বন্ধুদের মধ্যে লিখন, সাগর, গালিব, আপন, শাওন এদের নাম লেখা আছে। আমাদের এম এন স্কুলের সাইকেল গ্যারেজটা অনেক বড়। সেটাও ঐরকমই আছে। এই সাইকেল গ্যারেজের দায়িত্বে থাকেন শুকুর নামের একজন। কোনো কিছুতেই স্কুল ছুটির আগে উনি কাউকেই সাইকেল দিতেন না। তবে যদি উনার দোকান থেকে ছোলা, মুড়ি, এসব কিছু খাওয়া যেত উনি সাইকেল দিয়ে দিত হা হা। আমাদের এম এন হাইস্কুলের মধ্যে প্রায় শতাধিক আম গাছ রয়েছে। এটা এম এন স্কুলের ঐতিহ্য বলা যায়। এই আম বিক্রি করে প্রতিবছর স্কুল কতৃপক্ষ বেশ অনেক টাকা পেয়ে থাকে। এবং সেগুলো স্কুলের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। সবকিছু আগের মতো আছে। খুব একটা বড় পরিবর্তন হয়নি। তবে সেই আমরা আর নেই। পড়ে আছে শুধু স্মৃতি যেগুলো আজীবন থেকে যাবে।
------- | ------ |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @emon42 |
ডিভাইস | VIVO Y91C |
সময় | মার্চ ,২০২৩ |
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে স্কুল আমাদের ছোট থেকে বড় করেছে, প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে থেকেছে,সেই স্কুলের শেষ দিনের বিদায়বেলায় সব অনুভূতিগুলো যেন বর্ণহীন হয়ে যায়।স্কুলের সময় শেষ হয় কিন্তু স্মৃতি থাকে চিরকাল।ভাইয়া অনেক দিন পর স্কুলে নিজের স্কুলে গিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি জায়গা দেখা আর আগের স্মৃতি গুলো মনে করা এ এক অন্য রকমের অনুভূতি।শতাধিক আম গাছ,ছোলা মুড়ি দিয়ে সাইকেল নেওয়া অনেক ভালো লাগলো।এম,এন স্কুলের সুন্দর দৃশ্য ও অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার আজকের ব্লগটি পড়ে আমার নিজের স্কুল লাইফের কথা মনে পড়ে গেল। আপনি ঠিক বলেছেন আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হল কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি লাইফ। জীবনে এই লাইফের মতো আনন্দ আর আসেনা। আমিও মাঝে মাঝে আমার স্কুল কলেজ লাইফটাকে খুব মিস করি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit