সুন্দরবন ভ্রমণ ( শেষ পর্ব)।

in hive-129948 •  5 months ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ শনিবার, ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000551643.jpg


আমরা যখন কুষ্টিয়ার মধ্যে প্রবেশ করি তখন স‍‍্যার একটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। তার সেই অজানা ভয়টা কেটে যায়। তবে ততক্ষণে অনেক টা সময় অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। আমাদের ধারণার চেয়ে প্রায় এক ঘন্টা পর আমরা কুষ্টিয়া তে আসি। রাত ৩ টার পরে আমাদের বাস চলে আসে কুমারখালীতে এবং সেই জায়গাই থামে যেখানে থেকে বাস ছেড়েছিল। সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আমাদের শিক্ষা সফর শেষ। এখন বাড়ির দিকে যেতে হবে। নিজের প্রিয় শহরটার বুকে পা রাখতেই অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করে। রাত তখন সাড়ে তিনটা প্রায়। যাদের বাড়ি দূরে তারা এই বাকি রাত টা কেউ স‍্যারের বাড়িতে কেউ বন্ধুর বাড়িতে থাকবে। আমি তার সেই দিকে যায়নি।

আমি এবং মেহেদী হাঁটা শুরু করি। শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত চোখে ঘুম। আশা ছিল কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে গেলে কিছু একটা পেয়ে যাব বাড়ি যাওয়ার জন্য। হ‍্যা বেশ কিছু গাড়ি ছিল। কিন্তু তারা এতো রাত হিসেবেও অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছিল। ১০ টাকার ভাড়া তারা চাইছিল ১০০ টাকা। ব‍্যাপার টা মোটেই ভালো লাগেনি। একপর্যায়ে গিয়ে সেটাতেই রাজি হয়ে যায়। কারণ এই আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। কিন্তু তখন তারা বলে যাবে না। প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল ঐসময়। কিন্তু কিছু করার নেই। কোন উপায় র্ন দেখে আমি এবং মেহেদী হাঁটা শুরু করলাম। ঠিকমতো হাঁটলে এই ২৫-৩০ মিনিট লাগে। তবে ঐদিন ঐ রাতে আমাদের সময় লেগেছিল প্রায় ৪৫ মিনিটের বেশি। অবশেষে বাড়ির কাছে যখন যায় দেখি ফজরের আযান দিচ্ছে।


1000551635.jpg


তবে এরমধ্যে আমার এবং মেহেদীর সঙ্গে একটা আজব কাহিনী ঘটে যায়। যেটার কোন ব‍্যাখ‍্যা তো নেই। সেটা নিয়ে লিখতে গেলে অনেক লেখা যায়। তবে সেটা আজ না অন্য কোন দিন। নিজের এলাকায় এসে অন‍্যরকম একট শান্তি কাজ করছিল। তবে পাশাপাশি মনটাও একটু খারাপ ছিল। বাড়িতে গিয়ে সোজা ঘুমিয়ে যায়। এক ঘুমে দুপুর ১ টা। ঘুম থেকে যখন উঠি সবকিছু কেমন জানি এলোমেলো লাগছিল। দুই দিনের ঘুম আমার চোখে। দুপুরে খাওয়া শেষ করে আবার ঘুমিয়ে যায়। এবার ঘুম থেকে উঠি বিকেল ৬ টাই। ঐ দিন টা যে কীভাবে কেটে গিয়েছিল সেটা ধরতেই পারিনি। পরে ব‍্যাগ থেকে সবকিছু বের করতে থাকি। আমি ঘুমিয়ে থাকায় আমার ব‍্যাগে কেউ হাত দেয়নি।

এভাবেই শেষ হয় আমাদের সুন্দরবন ভ্রমণটা। একটা বিষয় তখন আমি খেয়াল করেছিলাম যখন আমরা যাচ্ছিলাম ঘুরতে মনের মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ ছিল একটা ভালো লাগা ছিল। এবং মনে হচ্ছিল এই পথ যেন আর শেষ হবে না। অথচ যখন আমরা ফিরে আসলাম তখন মনের মধ্যে একটা খারাপ লাগা কাজ করছিল। মনে হচ্ছিল না ফিরে যায়। ব‍্যাপার টা কেমন জানি। ঘুরতে যাওয়ার সময় যতটা ভালো লাগা কাজ করছিল ফিরে আসার সময় ঠিক ততটাই খারাপ লাগছিল। এটা আমার জীবনের সেরা একটা ভ্রমণ ছিল। চাইলেও কখনও এটা ভুলতে পারব না। সারাজীবন স্মৃতির পাতায় থেকে যাবে।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বেশ কিছুদিন ধরে আপনি সুন্দরবোন ভ্রমণের অনেকগুলো পর্ব আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার এই পোস্টগুলো দেখার মধ্য দিয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। ঠিক আজকেও তেমন সুযোগ করে দিয়েছিলেন। অনেক অনেক ভালো লাগলো আমার পর্ব টা দেখে।

যদিও আপনার ভ্রমণের আগের পর্বগুলো পড়া হয় নি আমার।তবে এটা পড়ে বুঝতে পারলাম, সুন্দরবনে আপনি দারুণ সময় পার করলেও পরে কিছুটা সমস্যা পোহাতে হয়েছে।আসলে গাড়িওয়ালারা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।তারপরও আপনারা দুইজন হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন ভালোভাবে জেনে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।