বাড়ি ফেরা।

in hive-129948 •  11 months ago 


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ বুধবার,১ লা নভেম্বর, ২০২৩।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


IMG_20231101_065729.jpg


সেই আগষ্ট মাসে বাড়ি থেকে গিয়েছি। আর এখন প্রায় অক্টোবরের শেষ। প্রায় তিন মাস বাড়ির বাইরে। এর আগে আমি কখনো এতোদিন বাড়ির বাইরে থাকিনি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আমার অবস্থা টা ঠিক কী। বাড়ি ফেরার জন্য মনটা একেবারে উৎফুল্ল ছিল। আমাদের ইন্টার্নশীপ শেষ হয় গতকাল ৩১ অক্টোবর। সেটা অবশ্য আমরা আগে থেকেই জানতাম। সেজন্য ট্রেনের টিকিট যখন অনলাইনে ছাড়ে তখনই কেটে নিয়েছিলাম। আমার ট্রেনে যাওয়ার খুব একটা ইচ্ছা যদিও ছিল না। কিন্তু সব বন্ধু যাচ্ছে সেজন্য সিদ্ধান্ত নিলাম ঠিক আছে আমিও যাব। যেমনটা চিন্তা তেমনটাই। ৩১ অক্টোবর বেনাপোল এক্সপ্রেসে টিকিট কেটে ফেলি।বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আমাদের ট্রেন ছিল রাত ১১:৪৫ এর সময়। বাংলাদেশের ট্রেন যে কখনোই সঠিক সময়ে আসে না সেটা তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু তারপরও আমরা অনেক আগেই পৌছে যায় স্টেশনে।


IMG_20231101_023005.jpg

IMG_20231101_015454.jpg

IMG_20231101_015450.jpg

IMG_20231031_234808.jpg

received_2511908082300821.jpeg



নিজেদের সব মালপত্র ব‍্যাগ নিয়ে দশটার আগেই চলে যায় স্টেশনে। গিয়ে দেখি প্রত‍্যেকটা ট্রেন ৩ ঘন্টা লেট। তাহলে একবার ভেবে দেখুন অবস্থা টা। আফসোস কী আর করার অপেক্ষা করতে থাকলাম স্টেশনে। স্টেশনে এইদিন আমার অসংখ্য ক্লাসমেট ছিল এবং বন্ধুদের মধ‍্যেও অনেকেই ছিল। সবমিলিয়ে আড্ডা দিতে দিতে সময় কেটে গেল। অবেশেষে ঠিক ৩ ঘন্টা লেটে রাত ২:৪৫ এর সময় আমাদের ট্রেন আসে। যথারীতি ট্রেনে উঠে পড়ি। ট্রেনে উঠার পরে বেশ স্বস্তি হচ্ছিল। তখন মনের মধ্যে একটা অনূভুতি হচ্ছিল যাক এইবার তো সত্যি সত্যি বাড়ি যাচ্ছি। ট্রেনের মধ্যে জার্নির সময় কখনোই আমি ঘুমাতে পারিনা। ফলাফল এইদিনও আমার ঘুম হয়নি। পুরোটা রাস্তায় হয় ফোন টিপেছি না হয় বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটিয়ে দিয়েছি। বেশ কিছুক্ষণ পরে আমরা যায় বঙ্গবন্ধু সেতু অর্থাৎ যমুনা সেতু তে। যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন খুবই আস্তে যায়। তখন প্রায় ভোর নদীর কিছু অংশ দৃশ‍্যমান হচ্ছে।


IMG_20231101_065737.jpg

IMG_20231101_065729.jpg

IMG_20231101_042902.jpg

IMG_20231101_042843.jpg


যমুনা সেতু হয় বেনাপোল এক্সপ্রেস এই শেষবারের মতো ঢাকা থেকে আসলো। কারণ ২ রা নভেম্বর থেকে ট্রেন যাবে পদ্মা সেতু হয়ে অর্থাৎ রুট পরিবর্তন করবে। আস্তে আস্তে তখন চারিদিকে আলো ফুটতে শুরু করল। মাঠের পর মাঠ দেখা যাচ্ছে সত্যি যেটা একেবারেই অসাধারণ লাগছিল। অনেকদিন পর এইরকম দৃশ্য চোখে পড়ে চোখটা একেবারেই জুড়িয়ে যাচ্ছিল। আমি একেবারে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। আবার চোখ বন্ধ করে ঐ বাতাসের ফিল নিচ্ছিলাম। তারপর একে একে চাটমোহর, ঈশ্বরদী, ভেড়ামাড়া স্টেশনে ট্রেন থামে। আমরা যারা একসঙ্গে ছিলাম অন্যরা বাকি সবাই ভেড়ামাড়া স্টেশনে নেমে পড়ে। যাইহোক ওদের বিদায় দিয়ে আসি। ওদের কে মালপত্র গুলো নামিয়ে নিতে সাহায্য করি। এরপরের স্টেশন পোড়াদহে আমরা নামব। শরীরের মধ্যে অসাধারণ একটা অনূভুতি হচ্ছিল। তারপর আমি আমার ব‍্যাগপএ গুলো নামিয়ে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি। অবশেষে ৮ টার সময় আমরা পোড়াদহ জংশনে পৌছায় যেটা আমাদের গন্তব্য ছিল।


IMG_20231101_075833.jpg

IMG_20231101_075830.jpg

IMG_20231101_075824.jpg

IMG_20231101_075801.jpg


পোড়াদহ জংশনে নেমে একেবারে অন্যরকম একটা অনূভুতি হচ্ছিল। অনেকদিন পর আবার নিজের শহরে সকাল। যাইহোক ওখান থেকে আমার বাড়ি আরও বেশ কিছুটা দূর। সেটাও প্রায় ২৫ কিলোমিটার হবে। সেখান থেকে একটা ইজিবাইক ভাড়া করে আমি এবং আমার তিন বন্ধু যাএা শুরু করি কুমারখালীর উদ্দেশ্য। কিছুক্ষণ যাএার পরেই চোখে পড়ে সেই রাস্তা সেই পথঘাট আহ কী অসাধারণ। সত্যি প্রাণটা একেবারে জুড়িয়ে যাচ্ছিলভ অবেশেষে অনেকদিন পর নিজের বাড়িতে। আমার খুশির তো কোন সীমানা ছিল না। যাইহোক এইভাবে পুরোটা পথ দেখতে দেখতে আর সকালের সিগ্ধ বাতাস অনুভব করতে করতে বাড়ি চলে আসি। পুরো ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আমি ঘুমাইনি। আমার চোখ জ্বালাপোড়া করছিল। এসেই প্রথমে গোসল করে খাওয়া দাওয়া শেষ করি। তারপর আবার নিজের সেই চিরচেনা জায়গাই শান্তির ঘুম।



-------------
ফটোগ্রাফার@emon42
ডিভাইসVIVO Y91C
সময়নভেম্বর ,২০২৩


সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG_20230518_131529.JPG

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png



Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

এই প্রথম আপনি বাড়ি ছেড়ে তিন মাস ধরে বাইরে।মন তো ছটফট করবেই।আপনি সবার সাথে তাল মিলিয়ে ট্রেনে যাবেন বলে ঠিক করলেন।আগে আগে বের হয়ে গেলেও ট্রেন এলো তিন ঘন্টা লেট করে।খুবই দুঃখের বিষয়। জার্নিতে আমিও ঘুমাতে পারিনা।যাই হোক চিরচেনা নিজ গ্রামে পা দিয়ে অনুভূতি খুব ভালোই ছিল।কিন্তু অপেক্ষায় ছিলাম বাড়িতে যাওয়ার পর বাকিদের অনুভূতি জানার।🙂 সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

যাক বাড়ি ফেরার মুহূর্তে আপনি রেলস্টেশনের বেশ কিছু ফটো ধারণ করেছেন আর সে সমস্ত ফটোগুলো আজকে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে। খুবই ভালো লাগলো আপনার এই দীর্ঘ রেল জার্নির বিস্তারিত অনুভূতি জেনে।

চোখ জ্বালাপোড়া তো করারই কথা ভাই ,সারারাত জেগে ছিলেন যখন। আর বাংলাদেশের ট্রেন লেট থাকে শুনেছি সবসময় তবে ৩ ঘন্টা এতটা সময় দেরি করে ট্রেন আসলে তো অধৈর্য্য হয়ে পড়ার কথা। যাইহোক প্রায় তিন মাস পর বাড়িতে গিয়ে নিশ্চয়ই খুব মজা করছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো ভাই।