আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
এই বছরে আমেরিকার একটা চলচ্চিত্র সংস্থা বিশ্বের এখন পযর্ন্ত সর্বকালের সেরা ১০০ চলচ্চিত্রের একটা তালিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে একমাএ ভারতীয় এবং একমাএ বাংলা সিনেমা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত পথের পাঁচালি সিনেমা টা। সত্যজিৎ রায় এই সিনেমা টা তৈরি করেছিলেন আমাদের বাংলা ভাষার বিখ্যাত একজন লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপ্যাধায় এর বিখ্যাত উপন্যাস পথের পাঁচালি থেকে। পথের পাঁচালি উপন্যাস যদি আপনি না পড়ে থাকেন আমি বলব অনেক বড় কিছু মিস করেছেন। আমাদের দেশে দশম শ্রেণির বইয়ে আম আঁটির ভেপু নামে একটা গল্প আছে যেখানে ছোট অপু এবং দূর্গার সারাদিনের দূরন্ত শৈশব এর কথা তুলে ধরা হয়েছে। আম আঁটির ভেপু পথের পাঁচালি উপন্যাসের একটা পরিচ্ছেদ মাএ। সত্যি বলতে এই বছরেই আমার চাচাতো ভাইয়ের কথায় আমি পুরো উপন্যাস টা পড়ি। একপর্যায়ে গিয়ে দূর্গার ঐ মৃত্যু আমাকে কাঁদিয়ে দেয়। শেষমেশ অপু এবং দূর্গার আর রেলগাড়ি দেখতে যাওয়া হয় না। এই অসাধারণ উপন্যাসের লেখক হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু যে গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনী নিয়ে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপন্যাস লিখেছে ব্যাপার টা সেটা না। হীরা মানিক জ্বলে আবার চাঁদের পাহাড় এর মতো দূরন্ত অ্যাডভেঞ্চার এর উপন্যাসও তিনি লিখেছেন। হীরা মানিক জ্বলে এই উপন্যাস টা আমি পড়েছি কিন্তু চাঁদের পাহাড় উপন্যাস টা পড়া হয়নি। তবে এটা সম্পর্কেও শুনেছি। এই বছরেই আমি বিভূতিভূষণের আরেকটা উপন্যাস পড়ি আরণ্যক। একেবারে অসাধারণ একটা উপন্যাস এটা। শহরের শিক্ষিত এক বেকার ছেলে চলে চাকরির তাগিদে চলে যায় একটা গ্রামের জঙ্গলে। তারপর স্থানীয়দের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। এককথায় অসাধারণ একটা উপন্যাস। আমার জীবনে পড়া সেরা একটা উপন্যাস হলো আরণ্যক।
নিজের ছোট স্বপ্নকে দীর্ঘদিন ধরে লুকিয়ে রেখে সেই টাকে বাস্তবায়ন কীভাবে করতে হয়। নিজের পরিশ্রম কে কীভাবে কাজে লাগাতে হয় সেইরকম হোটেলের গল্প নিয়ে লেখা হয়েছে আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাস টা। এই উপন্যাস টার অর্ধেক টা আমি পড়লেও পুরোটা শেষ করতে পারিনি। কিন্তু যেটুকু পড়েছি অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। আবার এই সপ্তাহেই শুরু করেছি আরেকটা গল্প ইছামতি। যেটা কীনা বাংলাদেশের যশোরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়া ইছামতি নদীকে নিয়ে লেখা। যদিও এটা আর বেশি দূর পড়া হয়নি। সবমিলিয়ে এই উপন্যাস গুলো ছিল অসাধারণ। এগুলো আমি মোটামুটি পড়েছি। কিন্তু এগুলো বাদেও উনার আরও অনেক গুলো বিখ্যাত উপন্যাস আছে এরমধ্যে সুন্দরবনে সাত বৎসর, অশনি সংকেত অন্যতম।
আমি খুব একটা বই পড়ি না। তবে ইদানিং যতগুলো বই বা উপন্যাস পড়েছি প্রায় সবগুলোই বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর। ফেসবুকে আমি অনেকগুলো বইয়ের গ্রুপ এবং পাঠকের গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত আছি। যেখানে সবাই বই পড়ে রিভিউ দেয় আবার অনেকে বই একচেঞ্জ করে থাকে। আজ সকালে ফেসবুক ক্রল করছি। এইরকম কয়েকটা গ্রুপ দেখি পোস্ট করেছে আজ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্মদিন। ১৮৯৪ সালের ১২ ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এই লেখক। সত্যি বলতে বাংলা সাহিত্য উনি ছাড়া অপূর্ণ। বাংলা সাহিত্যে উনার অবদান কখনো ভুলে যাবার নয়। একজন বিভূতিভূষণের জন্য আজীবন প্রতীক্ষা করে যেতে হবে এই বাঙালিদের। আমার অনেক পছন্দের একজন লেখক উনি। আজ উনার জন্মদিন সেজন্য মনে হলো উনাকে নিয়ে আমার মনের মধ্যে যত কথা আছে তুলে ধরি। উনার লেখা শুধু আমাকে না সব পাঠক কেই বিমোহিত করে ফেলে। শুভ জন্মদিন এই সাহিত্যিক কে। বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে সারাজীবন বেঁচে থাকবেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit