আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
কালের যাএাপথে কত সম্ভাবনাময় প্রাণ হারিয়ে যায়। কে'ই বা রাখে তার খবর। হিমাদ্রী কিশোর দাশগুপ্তের চন্দ্রভাগার চাঁদ উপন্যাসের এই শেষ কথাটা আমার অনেক পছন্দের। এখন যখনই কোন তারা বা ট্যালেন্ট এর অসময়ে পতন ঘটে তখনই আমার এই কথাটা মনে পড়ে। প্রবল সম্ভাবনা থাকা সত্বেও যারা শেষ পযর্ন্ত কিছু করতে পারে না। একেবারে সাধারণ হয়ে থেকে যায়। কিন্তু তাদের মধ্যে সেরা হওয়ার সব কিছু ছিল। কিন্তু কিশোর ধর্মপদোর মতো হারিয়ে যায় লাইন টা সাধারণত তাদের জন্যেই। সময় আপনাকে কখন কীভাবে ব্যবহার করবে। সময় এবং নিয়তি আপনাকে কীভাবে হারিয়ে দেবে আপনি বুঝতেও পারবেন না। নিজের সর্বোচ্চ টা দিয়ে চেষ্টা করবেন কিন্তু কিছুই হয়তো হবে না। সেজন্যই হয়তো বলে আপনার চেষ্টার সঙ্গে নিয়তি বা ভাগ্যটাও জরুরি। না হলে হয়তো আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন। এখন আসল কথায় আসি।
আমি ক্লাব ফুটবল দেখা শুরু করি মোটামুটি ২০১৫ সাল থেকে। ঐসময় থেকেই ক্লাব ফুটবল বুঝতে শুরু করি। তখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের খেলা দেখতাম বেশি। ঐ সিজেনে ম্যানচেষ্টার সিটির বতর্মানের মতো দাপট ছিল না। টেবিল টপার ছিল চেলসি। বিশেষ করে আমার চেলসিকে ভালো লাগত ওদের নীল জার্সির জন্য হা হা। এবং তখন চেলসির কোচ ছিল আমার পছন্দের একজন কোচ হোসে মরিনিও। সেজন্যই চেলসির ম্যাচ দেখতাম বেশি। ঐসময়ে চেলসির হয়ে দূর্দান্ত খেলত একটা ছেলে। ছেলের নামটা ছিল ইডেন হ্যাজার্ড। উচ্চতা একটু কম হলেও কী অসাধারণ গতি স্কিল এবং ফিনিসিং। বলতে গেলে ঐসময় ইডেন হ্যাজার্ড একাই চেলসির অ্যাটাক সামলে নিত। কী অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে। আমি ঐসময় একেবারে মনমুগ্ধ হয়ে তার খেলা দেখতাম। তখন থেকেই রীতিমতো আমি তার ভক্ত।
২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের সবচাইতে ভালো খেলোয়ার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মাদ্রিদ ছেড়ে ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে পাড়ি জমায়। তারপর মাদ্রিদ এর ঐ পজিশন টা ফাঁকা ছিল। মাদ্রিদ রোনালদোর একজন যোগ্য রিপ্লেস খুজছিলেন। ২০১৯ এর জুলাইয়ে মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট পেরেজ রোনালদোর জায়গাই নিয়ে আসে হ্যাজার্ড কে। বলা হয় পেরেজ কখনো রত্ম চিনতে ভুল করেন না। ঐদিন আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম আমার পছন্দের খেলোয়ার টা শেষ পযর্ন্ত আমার পছন্দের ক্লাবে। কিন্তু তারপরে যেটা ঘটেছে সেটা ভুলে যাওয়ার মতো। চেলসির হয়ে অসাধারণ খেলতে থাকা ছেলেটা হঠাৎ মাদ্রিদে এসে বিবর্ণ হয়ে যায়। গোল অ্যাসিস্ট কোন কিছুরই দেখা পাচ্ছিল না। রীতিমতো তার খেলার বেশ অবনতি হচ্ছিল। হঠাৎ হ্যাজার্ড বেশ বড় একটা ইঞ্জুরিতে পড়ে ৬ মাসের অধিক সময় মাঠের বাইরে থাকে। না তারপর আর ফিরে আসেনি হ্যাজার্ড। ক্রমেই যেন হারিয়ে গিয়েছে।
চেলসির হয়ে ৩৫২ ম্যাচে ১১০ গোল করা ছেলেটা মাদ্রিদ এর হয়ে ৭৬ ম্যাচে করেছে মাএ ৭ গোল। যেটা একেবারেই বেমানান। তার উপর এই দুই বছরে হ্যাজার্ড প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় ইঞ্জুরির জন্য ছিল মাঠের বাইরে। তার উপর রিয়াল মাদ্রিদ এর হয়ে উঠে আসে বেশ কিছু তরুন তারকা। বিশেষ করে ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং ইডেন হ্যাজার্ড একই পজিশন লেফট উইঙ্গার এর খেলোয়ার। ফলে হ্যাজার্ড ঐভাবে আর একাদশে সুযোগ পেত না। এবং অজানা কারণে সে আর পুরাতন সেই রুপে ফিরে আসেনি। তার যেই রুপ আমি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে দেখেছিলাম সেই প্রাইম হ্যাজার্ড। সেই রুপ আর দেখিনি। কিন্তু সে মাদ্রিদ ছেড়ে কোথাও যায়নি। এই বছর গ্রীষ্মকালীন দলবদলে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল তাকে প্রস্তাব করলে সে রাজি হয় নি। গতকাল দুপুরের পর হঠাৎ একটা নিউজ চোখে পড়লো। "Eden Hazard is retired from football ". নিউজটা দেখার পর আমি প্রথমে বিশ্বাস করিনি। কারণ তার বয়স এখন মাএ ৩২ বছর। কিন্তু পরে দেখি না নিউজটা সত্য। দেখে খুবই খারাপ লেগেছিল। এই অসময়ে একজন অসাধারণ প্রতিভার ঝরে যাওয়া। যেটা একেবারেই অনাকাঙ্খিত। প্রায়ই আমি একটা কথা বলি "সব সেরার সেরা হয়ে উঠা হয় না"।।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একটা কথা ভালো লাগলো যে চেষ্টার সাথে ভাগ্য থাকাটাও জরুরি কারণ ভাগ্য না থাকলে সামনে এগোতে পারবো না। আপনি অনেক দিন যাবত
যখন প্রথম কাজ শুরু করি তখন থেকে ফুটবল প্রেমী। এগুলো অনেক খারাপ লাগে এখনকার সময় আসলে মানুষ এমনি এমনি অবসর নেয় না কোন একটা কারণে নিজে কষ্ট পেয়েছে তাই অবসর নেয়। যেমন ক্রিকেটে তামিম ইকবাল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit