আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
----- | ----- |
---|---|
বইয়ের নাম | ইছামতী |
লেখক | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় |
প্রকাশনী | সূর্যদ্বয় প্রকাশনী |
প্রচ্ছদ | পরাগ ওয়াহিদ |
মূল্য | ৪০০ টাকা |
নালু পাল মাথায় মোট বয়ে পান সুপারি বিক্রি করে। নীলকুঠির বড়সাহেব শিপটন আসছে শুনে সে রাস্তা ছেড়ে দিয়ে ধানক্ষেতে গিয়ে লুকিয়ে থাকে। আশাপাশের প্রতিটা অঞ্চলের লোক বড় সাহেব শিপটন কে বেশ ভয় পায়। শিপটন মোল্লাহাটি নীলকুঠির প্রধান। সে আশাপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে নীল চাষ করে থাকে। নীলকুঠির দেওয়ান রাজারাম রায় বেশ প্রতাবশালী। রাজারাম রায়ের তিন বোন তিলু, নিলু, বিলু। তাদের বয়স হয়ে গেলেও বিয়ে হয়নি। তবে পঞ্চাশ বছর বয়সী ভবানী বাড়ুয্যে তিন বোনকে একসঙ্গে বিয়ে করে। ভবানী নিজের জীবনে সন্যাস গ্রহণ করেছিল। সেজন্য সে বিয়ে করেনি। সেখান থেকে ফিরে এসে সে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করে। তিন বোনকে একসঙ্গে বিয়ে করেলেও ভবানী বাড়ুয্যে সবচাইতে বেশি ভালোবাসতেন তিলুকে।
প্রজারা তখন নীল চাষের ক্ষতি সম্পর্কে জানে। তারা আর নীল চাষ করতে চাই না। যখনই কোন গ্রামে নীল চাষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে উঠত তাদের জীবনে নেমে আসত দূর্ভোগ। দেওয়ান রাজারাম অনেক গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে অনেক মানুষ হত্যা করেছে শুধুমাত্র নীল চাষ করতে না চাওয়ার জন্য। কয়েক বছর পরে ভবানী বাড়ুয্যে ও তিলুর কোল আলো করে এক পুএসন্তান আসে। সবাই খোকা বললেও নাম তার রাজ্ব্যেশ্বর। ভবানী বাড়ুয্যে বেশ ভালো মানুষ। গ্রামের সবাই তাকে সম্মান করে শ্রদ্ধা করে। একদিন ঘটে গেল এক অঘটন। বাগদি সম্প্রদায়ের কাছে খুন হয় দেওয়ান রাজারাম রায়। এর কারণ ছিল তার করা অত্যাচার। রাজারাম এর মৃত্যুর পরে তার স্ত্রী মারা যায় বছর খানেকের মধ্যে। তিলু তার দাদার বাড়ি গিয়ে উঠতে চাইলে ভবানী সেটা না করে দেয়। এবং বলে আমার ছেলে কখনোই তোমার দাদার সম্পদ নেবে না। আমি আমার ছেলেকে মানুষের রক্ত লেগে থাকা সম্পত্তি নিতে দেব না।
দেখতে দেখতে তাদের ছেলে খোকা বড় হয়ে যায়। একদিন যে নালু পাল মাথায় করে মোট বয়ে বেড়াত। এখন সে গ্রামের মধ্যে বেশ ধনী। মুদি খানার ব্যবসা করে বেশ বড়লোক হয়েছে। ছোটখাট জমিদারি এখন তার হয়ে গিয়েছে। সে এখন প্রায়ই গ্রামের ব্রাক্ষণদের ভোজ দেয়। একপর্যায়ে গিয়ে ভবানী বাড়ুয্যের ছোট স্ত্রী বিলু মারা যায়। এটা তাদের অনেক কষ্ট দিয়েছিল। রাজারামের মৃত্যুর পরে নীলকুঠির নতুন দেওয়ান নিযুক্ত হয় হরকালী সুর। তবে আস্তে আস্তে নীল চাষের দিন ফুরিয়ে আসে। একপর্যায়ে গিয়ে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় নীল চাষ। এর পেছনে অনেক গুলো কারণ ছিল। নীল চাষ বন্ধ হয়ে গেলে ছোট সাহেব ডেভিড নিজ দেশে ফিরে গেলেও শিপটন যাননি। জীবনের শেষ দিন পযর্ন্ত সে এই দেশেই ছিল। গয়ামেম এই গ্রামের মেয়ে হলেও ছোটবেলা থেকে সে এই নীলকুঠিতে সাহেবদের ছায়ায় মানুষ হয়েছে।
সাহেব থাকতে তার বেশ কদর থাকলেও সাহেব মারা যাওয়ার পর তার অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়। এরপর সেই নালু পাল নীলকুঠি কিনে নেয়। একদিন যে নালু পাল শিপটন সাহেবের টমটম আসবে শুনে ধানক্ষেতে লুকিয়েছিল আজ সেই সবকিছুর মালিক সে। দেখতে দেখতে ভবানীর ছেলে খোকা বড় হয়ে যায়। গ্রামের অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়। আরও অনেক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মূলত ইছামতী নদীর পাড়ের মানুষের জীবন এবং নীল চাষের কিছু ঘটনা তুলে ধরেছেন লেখক। শেষ পর্যায়ে সেই ইছামতীর বর্ণনা দিয়েই লেখক উপন্যাস টা শেষ করে।
ব্যক্তিগত মতামত
ইছামতী একটা নদীর নাম। এই উপন্যাসের শুরু হয়েছে এই নদী থেকে আবার লেখক শেষও করেছেন এই নদীর বর্ণনা দিয়েই। তবে মাঝে নীল চাষের সময়ের গ্রামের মানুষের জীবন ধারা তুলে ধরেছেন লেখক। আপনাদের সুবিধার জন্য মোটামুটি একটা স্পয়লার মুক্ত রিভিউ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষের জীবন কত সহজ হতে পারে। একজন মানুষের জীবনের আসল লক্ষ্য। ঐসময়ের মানুষের জীবনধারা অনেক কিছু উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে উপন্যাস টা।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেক গুলো উপন্যাস আমি পড়েছি। আসলে তার প্রতিটি উপন্যাস খুবই দারুণ। আজকে আপনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইছামতী উপন্যাস রিভিউ করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনার উপন্যাস রিভিউ বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit