আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
চলছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২। আর আমি আগাগোড়া একজন ফুটবল ফ্যান। তবে স্পোর্টস নিয়ে আমাদের কমিউনিটিতে লেখা খুব একটা হয় না। কারণ খেলাধূলার বিষয়গুলো সবাই জানে। তবে আমি এখন থেকে স্পোর্টস এর কিছু এমন জিনিস পোস্ট আকারে শেয়ার করব যেগুলো খুব কম সংখ্যক মানুষই জানে। এবং বিষয়গুলি খুবই ইন্টারেস্টিং। সেটা আপনি পোস্ট টা পড়লে বুঝতে পারবেন। ব্রাজিল ফুটবল বিশ্বে একটা ঐতিহাসিক নাম। শুধু যে তারা পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেটা না। তারা ফুটবল টা ফেরি করে বেড়াই। এবং ফুটবলার রপ্তানিতে সবার উপরে ব্রাজিল। ব্রাজিল দলে কিংবদন্তি ফুটবলারের অভাব নেই। তবে আমি আজ কথা বলব একেবারেই আন্ডাররেটেড একজনকে নিয়ে। জিকো ব্রাজিল ফুটবলের অবিচ্ছেদ্য একটা নাম। যিনি কীনা নান্দনিক ফুটবলের জন্য বিখ্যাত।
৩ রা মার্চ ১৯৫৩ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে জন্মগ্রহণ করেন জিকো। জিকো ছিল মধ্যমাঠের খেলোয়ার। জিকোর স্কিল ড্রিবলিং ছিল অসাধারণ। ২০০০ সালে ব্রাজিল ফুটবল এসোসিয়েশন তাদের ইতিহাসে শতাব্দীর সেরা ফুটবলারদের নাম ঘোষণা করে। এই দলে যারা স্থান পাই তারা সবাই ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল শুধুমাত্র একজন বাদে।যেখানে ছিল পেলে, গারিঞ্চা, সক্রেটিস, রোমারিওদের নাম। তবে ছিল আরেকজন কিংবদন্তির নাম। ব্রাজিলের হয়ে সে বিশ্বকাপ জিতেনি। তবে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে বিশ্বকাপের দরকার নেই। সেই মানুষটি ছিল জিকো। জিকো ব্রাজিলের হয়ে ৮৮ টি ম্যাচে ৬৬ টি গোল করেছেন। ১৯৮৯ সালে জিকো খেলোয়ার হিসেবে ফুটবল থেকে অবসর নেয়। সেই সময়ে তার সামনে ভালো ভালো দলের কোচ হওয়ার অফার এসেছিল। কিন্তু মানুষটা জিকো শৈল্পিক ফুটবলের ধারক। জিকোর চিন্তাভাবনা ছিল আলাদা। এরপর জিকো বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতেন ফুটবলের নেশায়। বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোতে। সেখানে সে ট্যালেন্ট খুঁজত এবং ফুটবলার বের করে নিয়ে আসত।
এরপর ২০০২-২০০৬ পযর্ন্ত জিকো ছিল এশিয়ার দল জাপানের কোচ হয়ে। এবার আসি আসল ফ্যাক্টে। সাল ২০১৪ অল ইন্ডিয়া ফুটবল এসোসিয়েশন তাদের ফুটবলের উন্নয়নের জন্য শুরু করে আইএসএল ( ইন্ডিয়ান সুপার লীগ) টুর্নামেন্ট। প্রথম সিজেনে এই টুর্নামেন্টে ফ্রাঞ্চাইজি বা দল ছিল ৮ টা। এরমধ্যে একটি দল ছিল এফসি গোয়া। তো সেই সময়ে এফসি গোয়া দলের ফ্রাঞ্চাইজি ম্যানেজমেন্ট আলোচনা করে জিকোর সঙ্গে। জিকো জানত এই ভারত উপমহাদেশে ফুটবল কতটা জনপ্রিয়। সেজন্য সে রাজি হয়ে যায় এফসি গোয়ার কোচের অফারে। এবং জিকো ইন্ডিয়ান সুপার লীগে এফসি গোয়ার কোচ হয়ে আসে। ঐ আসরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল জিকোর কোচ হয়ে আসা। আইএসএল এর প্রথম আসর ছিল সেটা। সেই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় এটিকে ( অ্যাথলেটিকো দি কলকাতা )। তবে জিকোর দল এফসি গোয়া ছিল সেরা চারে। সেমিফাইনালে এফসি গোয়া অ্যাথলেটিকো দি কলকাতার কাছে হেরে যায়। এবং টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়। তবে সেই আসরে গোয়া টেবিল টপার হয়েই সেমিফাইনালে গিয়েছিল।
পরের বছর ২০১৫ তেও জিকো ছিল এফসি গোয়ার কোচ। জিকো ২০১৪-২০১৭ পযর্ন্ত চার সিজেন এফসি গোয়ার কোচ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আইএসএল সিজেন-2, ২০১৫ তে জিকো তার দল এফসি গোয়াকে ফাইনালে তুলে। আইএসএলের দ্বিতীয় আসরেও জিকোর দলের পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। ফলাফল এফসি গোয়া এবার ফাইনালিস্ট। তবে পুরো আসর অসাধারণ খেলে আসা গোয়ার কপালে চ্যাম্পিয়ন হওয়া লেখা ছিল না। ফাইনালে এফসি গোয়া চেন্নাইন এফসির কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায়। এবং চ্যাম্পিয়ন হয় চেন্নাইন এফসি। তবে সেই আসরেও এফসি গোয়ার পারফরম্যান্স দেখার মতো ছিল। সেই আসরে কোচ হয়েও জিকো ছিল আলোচনার তুঙ্গে। জিকোর গেমিং প্ল্যান ফর্মেশন টেকনিক সবার নজর কেড়েছিল। ২০১৭ সাল ছিল এফসি গোয়ার হয়ে জিকোর শেষ আসর। এরপর জিকো আর আইএসএল এর কোনো দলের কোচ হয়ে আসনি। বলে রাখা ভালো ঐসময়ে আমি নিজেও আইএসএল এর নিয়মিত দর্শক ছিলাম। আমার প্রিয় দল চেন্নাইন এফসি। তবে এফসি গোয়ার কোনো ম্যাচ আমি মিস করতাম না। কারণ তখন এফসি গোয়া দলের ফুটবলে আমি ব্রাজিলের নান্দনিকতা খুঁজে পেতাম। ফুটবল এভাবেই এগিয়ে যাবে সেগুলো ছড়িয়ে দেবে জিকোর মতো কিংবদন্তি ফুটবলার রা। যারা কীনা শুধুমাত্র ফুটবল টাকেই গুরুত্ব দেন টাকা কে না।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।