আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আপনার পছন্দের খেলা কী? যদি কোনো বাঙালিকে এই প্রশ্ন করা হয় তাহলে আমার মনে হয় অধিকাংশ মানুষের উওর আসবে ফুটবল। আর যেহেতু ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে সেজন্য এখন পথে ঘাটে সব জায়গাই এই নিয়ে চলছে আলোচনা এবং উন্মাদনা। ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ কে বলা হয় "গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ"। কথাটা একেবারেই সত্য। এবারের কাতার বিশ্বকাপ পুরো পৃথিবীর ২২৫ টা দেশের জনগণ দেখছে মিডিয়ার মাধ্যমে। তবে বাঙালির ফুটবল উন্মাদনা টা সত্যি অনেক অনেক বেশি। এইজন্যই হয়তো উপমহাদেশের কিংবদন্তি কন্ঠশিল্পী মান্না দে তার গানে বলেছিল " সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল "। চলছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২, কাতার। এটা দিয়ে এশিয়ায় এটা ফিফার দ্বিতীয় আসর। এর আগে ২০০২ সালে এশিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল।
বাঙালিরা ফুটবল বেশ পছন্দ করে। এর প্রমাণ পাবেন লোকাল ফুটবল ম্যাচগুলো দেখলে বা ফুটবল বিশ্বকাপের সময়। খুব পরিষ্কার করলে বলা যায় বাঙালির ফুটবল দুই দলে বিভক্ত। আন্তজার্তিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনা ব্রাজিল কলকাতায় আসলে সেটা হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান আবার বাংলাদেশে আসলে হয়ে যায় আবাহনী, মহামেডান। যদিও আবাহনী মহামেডান তাদের পুরাতন সেই জৌলুস হারিয়েছে। তবে বিশ্বকাপ খেলার সময় এমন কিছু বাঙালি দেখা যায় যারা আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের বাইরে গিয়ে জার্মানি, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস এদের সাপোর্ট করে তবে তাদের সংখ্যা খুবই সীমিত। ফুটবল বিশ্বকাপের সময় আপনি যদি বাংলাদেশের আকাশে তাকান তাহলে দেখবেন অসংখ্য দলের পতাকা। তবে বিশেষ করে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের পতাকার সংখ্যাই থাকে বেশি। ১৯৮৬ তে মারাদোনার জাদু ১৯৯৪,২০০২ এ কাফু রোমারিও রোনালদো দের জাদুতেই বাঙালিই মাতে আর্জেন্টিনা ব্রাজিল বন্দনায়। একজন বাঙালি হিসেবে বলি আমি একজন আগাগোড়া ফুটবল ফ্যান। তবে আমি তথাকথিত সিজেনাল ফ্যান না। আমি সারাবছর ক্লাব ফুটবল দেখি আমার পছন্দের দল রিয়াল মাদ্রিদ। সেজন্য বিশ্বকাপ নিয়ে অন্যদের তুলনায় আমার উন্মাদনা কিছু টা কম।
তবে প্রিয় দলের এতগুলো খেলোয়ার যখন একসঙ্গে দলগতভাবে মাঠে নামে তখন আর আবেগ ধরে রাখা যায় না। আজ থেকে দশ বা বিশ বছর আগে সেসময়ে সবার বাড়িতে এইরকম ইলেকট্রিসিটি টিভি ছিল না। সেই সময়ে কী ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা কম ছিল। না তখন আরও বেশি ছিল। তখন একটা এলাকার সবাই মিলে কারো বাড়ির উঠানে বসে সাদা কালো টিভিতে খেলা দেখত। এবং চলতো কথা যুক্তি তর্কের লড়াই। আমার এলাকায়ও ঠিক এমন টাই হতো। এখন সবার বাড়িতে টেলিভিশন হাতে মোবাইল ইচ্ছা করলেই খেলা দেখা যায়। কিন্তু একা একা খেলা দেখে কোনো মজাই নেই। আসল মজাটা তখনই আসে যখন বন্ধু এলাকার বড় ভাই সবাই একসঙ্গে বসে খেলা দেখা হয়। প্রিয়দলের জার্সি। আগে পতাকা নিয়ে একটু বেশি মাতামাতি হলেও এখন সেটা কিছুটা কম। তবে এখন প্রিয় দলের জার্সি নিয়ে বেশ মাতামাতি করতে দেখা যায় সমর্থকদের। এই যেমন আমি নিজে এই বিশ্বকাপে প্রিয়দলের দুইটা জার্সি কিনেছি।
এবার আরেকটু মজার ব্যাপার বলি। ফুটবল বিশ্বকাপ আসলে ফুটবলের কিছু না বোঝা ছেলেটা, ফুটবলের সম্পূর্ণ নিয়ম না জানা চাচা টাও ফুটবল বিশ্লেষক হয়ে যায়। এদের বেশির ভাগকে পাবেন চায়ের দোকানে। তবে আমি আপনাকে বলব এদের সঙ্গে কখনো ফুটবল নিয়ে তর্কে যাবেন না। শেষে নিজেই অপমানিত হবেন। অন্তত আমার অভিজ্ঞতা সেটাই বলে। একপর্যায়ে তারা আপনাকে পার্সোনাল অ্যাটাক ও করবে। তবে এরা না থাকলে হয়তো এদেশে ফুটবল বিশ্বকাপ তার উন্মাদনার রং অনেকটাই হারাতো। এই বলি বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনা আমাদের কমিউনিটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আজ আমি নিজেই তো অনেকক্ষণ কয়েকজনের সঙ্গে তর্ক করেছি হি হি। এটাতে মজা আছে। যাইহোক আজ আর না। সবাই ফুটবল বিশ্বকাপ উপভোগ করুন রাইভাদলের ট্রল করুন তবে দেখবেন পার্সোনাল অ্যাটাক যেন না হয়ে যায়। এবং এই দুইটা বলে দিয়ে যাবেন।
কাতার বিশ্বকাপে আপনি কোন দল সাপোর্ট করছেন।
কাতার বিশ্বকাপে কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।