আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।
আমি @emon42.
বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে
আজকের আমার কথাগুলো কোন গল্প না। আমার সামনে দেখা বাস্তবতা। এইতো কিছুদিন আগেই বিসিএস(বাংলাদেশ ক্যাডার সার্ভিস ) এর রেজাল্ট দিল। বিসিএস মানে তো একেবারে সোনার হরিণ। ক্ষমতা টাকা নারী বাড়ি গাড়ি সবকিছুই পাবেন আপনি। আমার খুব কাছের একজন বড় ভাই। আমার বাড়ির পাশেই বাড়ি। ভাইয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভাইয়ের নাম রোহান। ভাইয়া ছোটবেলা থেকেই বেশ ব্রাইট স্টুডেন্ট। বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী সবগুলো বোর্ড পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস এবং স্কলারশীপ পেয়ে উওীর্ণ হয়। ভাইয়ের ব্যবহার অনেক ভালো। এরপর ভাই এডমিশন দিয়ে বাংলাদেশের সেরা বিদ্যাপীঠ বুয়েটে ( বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) চান্স পাই। শুধু বুয়েটে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও কয়েকটা তে চান্স পেয়েছিল। শেষমেশ রোহান ভাইয়া বুয়েটে ইইই ( ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ) সাবজেক্ট টা পাই।
যথারীতি চলতে থাকে ভাইয়ের লেখাপড়া। ভাই আমাদের এলাকার গর্ব বলা চলে। বাড়িতে আসলে আগে যখন আমি ভাইকে প্রশ্ন করতাম ভাই তখন বলত আমি ভালো একজন প্রকৌশলী হবো। দেখতে দেখতে বুয়েটের চারটা বছর কেটে যায়। রোহান ভাইয়া বুয়েট থেকে ৩.৭৫ সিজিপিএ নিয়ে ইইই তে বিএসসি শেষ করে। আমার ধারণা ছিল ভাই তখন হয় উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যাবে অথবা দেশেই প্রকৌশলীর চাকরি করবে। কিন্তু ততদিনে ভাইয়ের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে সব বদলে গিয়েছে। ভাই বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করেছে। যদিও সেটা আমি তখন জানতাম না। রোহান ভাইয়া নিজের প্রথম বিসিএস ৪১ তম বিসিএসে টিকে যায়। পর পর ৪২ এবং ৪৩ তম বিসিএসেও ভাই টিকে যায়। যাকে বলে একেবারে তিনে তিন। ৪১ তম বিসিএস রোহান ভাইয়া শিক্ষা'ক্যাডার পাই। ৪২ তম বিসিএসে ভাই স্বাস্থ্য ক্যাডার পাই।
এবং সর্বশেষ বিসিএস এর ফলাফল দিয়েছে কিছুদিন আগে। সেখানে রোহান ভাইয়া ৪৩ তম বিসিএসে পেয়েছে তার কাঙ্ক্ষিত সেই প্রশাসন ক্যাডার। বেশ ভালো একটা সংবাদ। রোহান ভাই নিজে অনেক খুশি ভাইয়ের পরিবারের লোকজন খুশি। এবং এলাকার সবাই ভাইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু আমার মনে একটা প্রশ্ন ছিলই। এইতো ভাইয়ের সঙ্গে পরশুদিন কথা হলো। ভাইকে বললাম ভাই আপনি তো প্রকৌশলী হতে চেয়েছিলেন তাহলে বিসিএস দিলেন কেন। আর দিলেন তো শিক্ষা ক্যাডার না নিয়ে প্রশাসন কেন নিলেন। তখন রোহান ভাইয়া আমাকে যে কথাগুলো বলল সেগুলো যেন একেবারে বাস্তবতা। ভাই বলল তুই এখনো ছোট এগুলো কিছুই জানিস এগুলো বুঝবি না। এই দেশে একজন প্রকৌশলী বলিস আর ডাক্তার বলিস আর বিজ্ঞানি বলিস এদের এতোটা সম্মান বা ক্ষমতা নেই যতটা প্রশাসনের আছে। প্রশাসন চাইলেই যা ইচ্ছা করতে পারে। প্রশাসন ধরতে পারে মারতে পারে ক্ষমতা দেখাতে পারে।
কিন্তু একজন প্রকৌশলী বা বিজ্ঞানি বা ডাক্তার সেটা পারে না। এজন্যই আমার বিসিএস দেওয়া এবং প্রশাসন ক্যাডার না পাওয়া পযর্ন্ত আমি দিয়ে গিয়েছি। আসলেই ভাইয়ের কথায় যুক্তি ছিল। একবার ভেবে দেখুন আমাদের দেশ থেকে এখন কজন বিজ্ঞানী বা বিশ্বমানের প্রকৌশলী বের হচ্ছে। কী আবিষ্কৃত হচ্ছে আমাদের দেশ থেকে। অথচ প্রতিবছর গন্ডায় গন্ডায় হচ্ছে বিসিএস। এটা নিয়ে আর কী বলব বলেন। একজন পাতিনেতা ট্রেন্ডারবাজ গায়ে হাত তোলে প্রকৌশলীর। তার কোন বিচার হয় না। তাদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়। কিন্তু একজন বিসিএস ক্যাডার একজন প্রশাসন ক্যাডার এর সব ক্ষমতা রয়েছে। টাকা ক্ষমতা নারী বাড়ি গাড়ি সবকিছু আছে। তাহলে কে আর কষ্ট করে বলুন। আমাদের দেশটা এই বিসিএস এর জন্য দিন দিন ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। শিক্ষা খাত একেবারে শেষের দিকে। যেটা খুবই ভয়ের। একটা জাতিকে ধ্বংস করতে বিসিএস নামক সোনার হরিণই যথেষ্ট। কী বলেন আপানারা।
সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।
অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার রোহন ভাইয়ের কথায় যুক্তি আছে। এটা ঠিক ভাই , প্রশাসনের কাছে অনেক ক্ষমতা থাকে। প্রশাসনিক ক্ষমতায় আসলে ক্ষমতার সুব্যবহার করা যায় আবার অপব্যবহারও করা যায়। এটা তো মানসিকতার উপর নির্ভর করে। তবে প্রশাসনিক ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করা কখনোই উচিত না। আপনাদের দেশে বিসিএস নিয়ে কি হচ্ছে পুরো বিষয়টা আমি জানিনা। তবে আপনার কাছ থেকে যা জানতে পারলাম তাতে বুঝতে পারছি সবকিছু সঠিকভাবে হচ্ছে না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit