ক্রিটিভ রাইটিংঃ জীবনে প্রথম নদী পথে ভ্রমন করার ছোট্ট একটি গল্প।

in hive-129948 •  last month 

আজ - শুক্রবার

২২, কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নভেম্বর ০৮, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

🌺 চলুন শুরু করি 🌺

হিন্দু ভাইদের নমস্কার এবং মুসলমান ভাইদের কে সালাম জানিয়ে আজকের নতুন আরেকটি ব্লগ শুরু করতে যাচ্ছি..! আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

আজকে আমি আমার জীবনের অনেক পুরনো এবং স্মৃতিময় একটা মুহূর্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের আজকের এই পোস্টটি বেশ ভালোই লাগবে তবে চলুন মূল গল্পে ফিরে আসা থাক। রাসেল হঠাৎ করে আমাকে ফোন দিল ফোন দিয়ে বলল ইমন পরশুদিন সজীব বলল যে ওদের কাকুদের এলাকায় সবাই মিলে নদী পথে পিকনিক করতে যাচ্ছে তুই কি যাবি? আমি প্রথমে শুনে একটু থমকে গেলাম কারণ আজও কখনো নদী পথে পিকনিকের যাওয়া হয় নাই। আর যদি নদী পথে ভ্রমণ করতে যাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে সাঁতার শেখাটা অনেক বেশি জরুরী আমি যদিও সাঁতার জানি তবে বেশি সময় একটা দম ধরে রাখতে পারে না। কারণ প্যাকটিস না থাকলে যা হয় আর কি। তবে জীবনের প্রথম নদীপথে ভ্রমণ করতে যাচ্ছিলাম তাই বিষয়টা আমার কাছে বেশি ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছিল। আমি তৎক্ষণাৎ ফোনে বলে দিলাম হ্যাঁ ঠিক আছে তোরা যদি সবাই যাস তাহলে আমিও যাব। তো মোটামুটি আর সেদিন যাওয়ার পরে ৫০০ টাকা চাঁদা নির্ধারিত করা হলো চাঁদাটা দেওয়ার পরে আমরা দুইদিন পরে ধুকুরিয়া এলাকায় রওনা দিলাম। আসলে আমাদের এই মেহেরপুরে তেমন একটা নদী নেই।

1000004937.jpg

source

বলা যায় আমাদের এদিকে নিচু জায়গা নেই। যদিও নদী থাকে তাহলে আমাদের এলাকার অপজিটে আলমডাঙ্গা বলে একটা এলাকার রয়েছে ওখান থেকে নদীর উৎপাত শুরু অর্থাৎ বড়, বড় যেই খাল বিল এবং নদী নালা ওখান থেকেই শুরু হয়েছে। তো তারপরে আমরা ধুকুরিয়া এলাকায় যাওয়ার পরে দেখলাম যে প্রথমে আমাদের জন্য খাওয়া দাওয়া এবং নাস্তা পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তো সবাই মিলে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে খিচুড়ি খেয়ে নিলাম। খিচুড়ি খাওয়ার পরে আমাদের প্রত্যেক জনকে একটি করে টি-শার্ট উপহার দিল আসলে টি শার্টগুলো সব একই কালারের ছিল এবং ওখানে লেখা ছিল আমাদের ভ্রমণ কোথা থেকে আমরা শুরু করছি এবং কোথায় যাই শেষ করব। আমাদের মূল আকর্ষণ ছিল হচ্ছে চিনির ফ্যাক্টরি দেখা তো। এক পর্যায়ে যখন আমরা রওনা দিলাম তখন আমাদের সাথে কিছু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষও ছিল। তবে ওদের সাথে কথা বলে আমার বেশ ভালই লাগলো কারণ তারা বেশিরভাগই সব আমাদের বয়সী ছিল আর যারা এটি আয়োজন করেছিল তারা এদেরকে নিয়ে এসেছিল কারণ তারা সম্পর্কে এদের ক্লাসমেট ছিল।

1000004938.jpg

source

তারপরে মোটামুটি ওদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বললাম এবং তাদের জীবন সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করলাম। তো সত্যি বলতে তাদের গায়ে প্রচুর এনার্জি আমরা নাচা নাচি করে হাঁপিয়ে যাচ্ছিলাম তবে ওরা কোন মতই হাঁপাচ্ছিল না সেই কি যে একটা ড্যান্স করছিল দেখতেও ভালো লাগছিল । আর অনেকগুলো সাথে সাউন্ড বক্স ছিল এবং ভিতরে একটা জেনারেটর ছিল ওই জেনারেটর এর মাধ্যমে ওই সাউন্ড বক্সগুলো চালিত করা হচ্ছিল। তো এক পর্যায়ে নদী মাঝপথে এসে আমরা আমাদের বড় নৌকাটাকে থামালাম এবং সবাইকে নাস্তা পানি করার কথা বলা হলো আমরা বাজারের দিকে গিয়ে পানি নিয়ে আসলাম এবং পুনরায় আমাদেরকে আবার বিরিয়ানি খাওয়ানো হলো এবং খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যখন এক জায়গায় সবাই বসে ছিলাম তখন আমি ওই তৃতীয় লিঙ্গের একটা ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম যে আপনাদের জীবনটা কেমন আমার যে জানতে খুব ইচ্ছে করছে যদি একটু বিস্তারিত বলতেন খুশি হতাম। তো সত্যি বলতে উনি অনেক ভালো স্বভাবের একটা মানুষ ছিল প্রথম দিনেই যেন কেমন ভাবে আপন করে নিয়েছিল। উনি বন্ধুর মতো করে আচরণ করছিল এবং বলল যে আসলে সত্যি বলতে আমি কিন্তু এক পর্যায়ে ছেলে তবে আমার ভিতরে ছেলের কোন অনুভূতি নেই এর কারণে আমরা এমন।

1000004939.jpg

source

তারপরে উনার কথাগুলো একটু বোঝার চেষ্টা করলাম আসলেই ঠিক যে যদি একজন মেয়ে তার ভিতরে মেয়ের কোন অনুভূতি না থাকে তাহলেই কোনভাবেই সে বিয়েতে বসতে চাইবে না অথবা যদি কোন ছেলে ছেলের ভিতরে তার কোন অনুভূতি না থাকে সে যদি মেয়ের মতো আচরণ করবে। ওই জন্য এনাদেরকে আলাদা একটা গুষ্টিতে আমাদের সমাজে রেখেছে এবং ওনারাও উনাদের মত জীবন উপভোগ করছে। তবে অনেক সময় ওনাদেরকে অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তবে সব মিলিয়ে আশা করি আমাদের সমাজটা ভারসাম্যপূর্ণ রয়েছে এটাই আমাদের সবার জন্য মঙ্গল। তো এক পর্যায়ে ওনার সঙ্গে অনেক গল্প করলাম ওনার জীবন সম্পর্কে জানলাম উনার স্কুল লাইফ কলেজে লাইফ সবকিছুই মোটামুটি উনি শেয়ার করলেন। তো এভাবে অনেকক্ষণ কেটে গেল এবার সন্ধ্যার দিকে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছালাম। পরবর্তীতে আমরা ওখানে বর্ডার দেখলাম তারপরে চিনির ফ্যাক্টরি মিল দেখলাম। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সেদিনকার জার্নিটা বেশ ভালই লাগছিল তো সন্ধ্যা হতে আমরা পুনরায় আবার ব্যাক করলাম এবং ভোর পাঁচটার দিকে আমরা আবার চলে আসলাম।

আসলে সেদিন তেমন একটা ঘুম হয়েছিল না বলা যায় যে রাতের অধিকাংশ সময়ই আমরা জেগে ছিলাম।আর সেদিনের নতুন অভিজ্ঞতাতে আমার বেশ ভালই লেগেছিল। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে এতক্ষণ পাশে থেকে ব্লক টি উপভোগ করার জন্য। আমি আবারও খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব ততক্ষণ সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

ব্লগার@emonv
ডিভাইসTecno camon 20
শ্রেণী ‌ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট
লোকেশনসিরাজগঞ্জ মৎস্য ডিপ্লোমা

🔚 সমাপ্তি

Screenshot_20240511-225100.jpg

আমার নাম মোঃ ইউনুস আলী ইমন। বর্তমানে আমি সিরাজগঞ্জ মৎস ইনস্টিটিউট এর একজন ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করছি। এছাড়া পরিচয় দেওয়ার মতো এখনো কিছু করে উঠতে পারেনি তবে নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ক্যারিয়ারের উপরে কাজ চলমান......। আমি নিজেকে ভেঙে চুড়ে নতুন করে আবিষ্কার করতে অনেক পছন্দ করি এবং আমি মানুষকে সাহায্য করতে অনেক ভালোবাসি। আমি প্রায়শই নিজেকে আবিস্কার করি। কেননা এটা আমার কথায় এবং লিখাতে নতুন স্বাদ যুক্ত করে, যার ফলে আমি নিজের সবথেকে ভালো টুকু আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পারি। আমি প্রতিদিন একবার নিজের সাথে কথা বলি, কারণ এটা আমার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেয়। আমি ভ্রমণ করতে এবং ফটোগ্রাফি করতে অনেক পছন্দ করি। আমি প্রতিনিয়ত নতুন ,নতুন মানুষদের সাথে মিশে তাদের জীবনের অভিজ্ঞতার ভালোটুকু আমার জীবনে বাস্তবায়িত করতে পছন্দ করি। আপনাকে স্বাগতম আমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়ার জন্য। ভালোবাসা রইলো অবিরাম সবাইকে 💝।

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPjVagCKakAuSTsQyj2bkd5a1qGy627tazWyRR8KvSGF5XUzUYGAJxbEm1Wagp...Lv2At2mGmrfEMg6f1U32Fbx5AMXoYvtwxPoGN64iEBA4Rv1YhRRuUftAwRmKthwLZXLSTwWxtFD7Sj1QyBBErTgPny6vsjAKSJvXy9ovR9TDNhx7vqPZQ8nKqg.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

1000004142.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

@tipu curate

;) Holisss...

--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.

দারুন একটি ভ্রমণ পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করলেন ভাই। কিন্তু আপনার এত সুন্দর নৌকা ভ্রমণের ছবি কোথায়? ছবি তুলে পোস্ট করলে আরো ভালো লাগতো। মাঝে মাঝে এমন ব্যতিক্রমী পিকনিক খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে তা যদি নদীবক্ষে হয় তবে তো আর কথাই নেই।