রাখাল-ও-ছোট-পরি

in hive-129948 •  4 months ago  (edited)

Fairy.jpg

রাখাল-ও-ছোট-পরি

ছয় পরি ছোট বোনকে একা সরোবরের তীরে ফেলে রেখে উড়ে চলে গেল। বেচারি ছোট পরি মনের দুঃখে বসে বসে কাঁদতে লাগল। তাকে ওভাবে কাঁদতে দেখে রাখাল সাহস করে আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো।
চারদিকে পাহাড়ঘেরা উপত্যকার মাঝে ছিল অপূর্ব সুন্দর এক সরোবর। সেই সরোবরের তীরে প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে বেড়াতে আসে সাত পরি, সাত বোন। তারা ডানাগুলো একটা গাছের তলায় রেখে পানিতে আনন্দ করে বেড়ায়। জনশূন্য চারপাশ। ঠিক সাত দিন ধরে আনন্দ করে আবার ডানাগুলো পরে উড়ে যায় তাদের নিজের দেশে।

এদিকে কাছাকাছি যে কিছু গ্রাম আছে সে খবর তারা না রাখলেও পরিদের সব খবর রাখে সেই গ্রামেরই এক রাখাল ছেলে। সে গরু চরায়, বাঁশি বাজায় আর দূর থেকে দেখতে থাকে পরিদের কাণ্ডকারখানা।

একসময় তার খুব ভালো লেগে যায় সবচেয়ে ছোট পরিটিকে। কী অপরূপ মিষ্টি চেহারা! ওকে দেখলেই রাখালের বাঁশিতে বেজে ওঠে স্বর্গীয় সব সুর। দূর থেকে পরিরা তা শোনে আর অবাক হয়ে ভাবে এমন সুন্দর সুর কে বাজায়। এ সুর তো তাদের দেশের পাখিদেরও অজানা! তারা মুগ্ধ হয়ে শোনে, কিন্তু রাখাল থাকে আড়ালে, তাকে কেউ দেখতে পায় না।

একবার হলো কী, রাখালের মাথায় একটি দুষ্টবুদ্ধি জাগল। পরিরা যখন স্নানে ব্যস্ত, সে চুপিচুপি এসে দাঁড়াল সেই গাছতলায়, যেখানে খুলে রাখা আছে পরিদের ডানাগুলো। বেছে বেছে সবচেয়ে ছোট ডানাজোড়া নিয়ে সে লুকিয়ে রেখে দিল একটা বড় গাছের ফোকরে। তারপর ধীরে ধীরে সরে পড়ল সেখান থেকে।

সাত দিন পরে পরিদের যাওয়ার সময় হলে দেখা গেল তাদের ছোট বোনের ডানাজোড়া নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তারা সেটা পেল না। এদিকে বাবার কড়া হুকুম, এক সপ্তাহের বেশি তাদের স্বর্গ ছেড়ে থাকা চলবে না। কী করবে ভেবে না পেয়ে সবচেয়ে বড় পরি ছোট বোনকে বুঝিয়ে বলল, ‘উপায় নেইরে বোন, আমাদের যেতেই হবে। আর গেলে পরের বছরের আগে আর আসতে পারব না। তুই বরং এখানে থেকে ডানা জোড়া ভালো করে খুঁজে দেখ। পেলেই দেশে চলে আসিস, কেমন। আমরা বাবাকে বুঝিয়ে বলব তিনি যেন রাগ না করেন।'

ছয় পরি ছোট বোনকে একা সরোবরের তীরে ফেলে রেখে উড়ে চলে গেল। বেচারি ছোট পরি মনের দুঃখে বসে বসে কাঁদতে লাগল। তাকে ওভাবে কাঁদতে দেখে রাখাল সাহস করে আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো। সব শুনে সে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে গেল। তারপর অনেকক্ষণ ধরে বাঁশি বাজিয়ে শোনাল। এই রাখালের বাঁশিই যে তাকে দূর থেকে এত আনন্দ দিয়েছে ভেবে পরির খুব ভালো লাগল। তাদের বন্ধুত্ব হতে দেরি হলো না।

রাখাল আর পরি গ্রামের একপ্রান্তে একটি কুঁড়েঘরে থাকে। একত্রে গরু চরায়। রাখাল বাঁশি বাজায় আর পরি ঘাঘরা উড়িয়ে নাচে। দেখে গ্রামের লোকেরা ঠিক করল, এদের বিয়ে হওয়া উচিত। রাখাল তো রাজি ছিলই, পরিও রাজি হয়ে গেল। তারপর একদিন বেশ একটা উৎসবের মধ্য দিয়ে তাদের বিয়ে হয়ে গেল।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Khub sundor gulpo

খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি আপনার গল্পটি পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো। এই ধরনের গল্প পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে, আপনার এই গল্পের শেষটি অসাধারণ ছিল রাখাল বাঁশি বাজায় আর পরি ঘাগড়া উড়িয়ে না নাচে। আর গ্রামের লোকজন দেখে সিদ্ধান্ত নিল যে তাদের বিয়ে দিবে, শেষ পর্যন্ত তাদের বিয়ে হয়ে যায় এটা পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো ,এমন সুন্দর গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মতামত জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ, প্রতিদিন নিত্য নতুন গল্প আপনাদের মাঝে সেয়ার করব।

টাইপ: চৌর্যবৃত্তি।

এ ধরনের পোস্ট আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি Allow করে না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।

কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493

Source:
https://www.facebook.com/100068996926857/posts/102740691331924/