দুঃসময়ের বন্ধু সুসময়ে পর হয়ে যায়। || Open your eyes & be human.

in hive-129948 •  7 months ago 
দুঃসময়ের বন্ধু সুসময়ে পর হয়ে যায়

ছবিটি কেনভা দিয়ে তৈরি

আমরা মানুষজন বড্ড জটিল। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যতগুলো গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে তার থেকেও মনে হয় আমাদের মনের প্যাচ আর কুটিলতা বেশি। কি ভাবছেন কথাটা কেমন যেন হলো তাইনা 😄
একজন মানুষের মনের ভেতর প্রতিনিয়ত যে চিন্তা আর কথাগুলো ঘুরপাক খায় সেগুলো যদি আপনি আমি চারিদিক থেকে শুনতে পেতাম তাহলে হয়তো পাগল হতে সময় লাগতো না। যাইহোক সেদিকে যাবো না, একটু প্রসঙ্গ পরিবর্তন করি।

উপর ওয়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ, তিনি নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন কি নিপুণভাবে। তার ভেতর বেশ কিছু পার্থক্য তৈরি করেছেন, পুরুষ এবং মহিলা বানিয়েছেন। আবার আকারে বড় ছোট তো রয়েছেই। এরপর আসে গায়ের রংয়ের পার্থক্য এবং এরপর সামাজিকভাবে ছোট বড়। আবার বিভিন্ন ছোট বড় মানুষ এবং সমাজের মানুষের মাঝে ভালোবাসা, মায়া এবং মমতা দিয়ে এক অদৃশ্য সুতায় গেঁথে রাখার চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি যতই আমাদের কাছাকাছি রাখতে চান না কেন আমরা আমাদের ছোট ছোট স্বার্থ সেগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে শুরু করি। ধরুন ব্যাপারটা এরকম, আমি কোন কারনে একটু খারাপ রয়েছি , কিন্তু পাশের মানুষটি একটু ভালো রয়েছে। তাহলে আমরা চিন্তায় পরে যাই কিভাবে তার ক্ষতি করে আমার থেকে খারাপ পরিস্থিতিতে নামিয়ে আনা যায়।

আবার কোন একজন মানুষকে সমাজের সবাই ভালো বলে, কিন্তু তাকে কেন ভালো বলবে এই চিন্তা করে তার দূর্নাম রটানো শুরু করে দেই। মানে ব্যাপারটা এমন আমি ভালো নেই তাহলে সে কেন ভালো থাকবে?

আমরা যখন বিভিন্ন অপ্রিতিকর পরিস্থিতিতে পরে যাই সবাই যে ক্ষতি করে এমন কিন্তু নয়। কিছু মানুষ কিন্তু এগিয়ে আসে এবং পরিস্থিতি ঠিক রাখার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে। যারা এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে পারে তারাই হলো সত্যিকারের বন্ধু। আর সেই বন্ধু গড়তে জানে আর আগলে রাখতে জানে। কিন্তু সব ঠিকঠাক হবার পর যখন সেই বন্ধুকেই আপনি ছুঁড়ে ফেলে দেন, তখন ব্যাপারটা কেমন হবে? 🥺 ব্যাপারটা মোটেও সুখকর নয়। পরিস্থিতি সবসময় একরকম থাকে না। হয়তো আপনার আজ দিন ফিরেছে, আপনি উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু এখন আর সেই মানুষটার কথা আর মনে করার প্রয়োজন বোধ করেন না। এমনকি সুযোগ বুঝে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেন আঁস্তাকুড়ে তাহলে আপনি কিসের মানুষ?

মানুষ তুমি অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, লোভ ঘিরে ধরেছে তোমার চারপাশ। গোগ্রাসে গিলে ফেলতে চাইছো সবকিছু। আহারে মানুষ খান্ত হও, ছিটেফোঁটা যদি কিছু থাকে তাই দিয়ে পাশের মানুষটার খবর লও। দুঃসময়ের বন্ধুর পাশে থাকো, তাকে আগলে লও আর যোগ্য সম্মান দাও। নইলে আজ উড়িয়েছো ফানুস বাতি কাল হয়তো ধ্বংসের সাগরে দেবে পাড়ি। কারন সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। ‌



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে মানুষের রুপ বোঝা বড় মুস্কিল। আসলে সমাজে এমন অনেক বন্ধু রয়েছে যারা নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ভালো ভালো বন্ধুকে কাজে লাগিয়ে তাদের স্বার্থ হাসিল করে নেয়। তারপর একটা সময় যখন‌ সে একটু বড় পজিশনে উঠে যায়। তখন সেই বন্ধুকে আর চিনে না। তবে আপনি ঠিক বলেছেন আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ধন্যবাদ এমন শিক্ষনীয় পোষ্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।

image.png

কারন সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না।

উপরের এই কথাটি চিরন্তন সত্য কথা। আপনার এধরনের জেনারেল রাইটিং গুলোর অপেক্ষায় থাকি। আপনার এধরনের শিক্ষনীয় বিষয় এর উপরে পোস্ট গুলো থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি। ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত। বর্তমান সময়ের মানুষ কেউ কারো ভালো চায় না। সবাই সবার ক্ষতি করার চেষ্টা করে। সবাই নিজের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করে চলেছে। তবে বিপদে যে বন্ধু নিঃস্বার্থ ভাবে পাশে দাঁড়ায়। সেই বন্ধুকে সত্যি সম্মানের চোখে দেখা উচিত। আপনার লেখা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার নতুন জেনারেল রাইটিং পোস্ট এর অপেক্ষায় রইলাম।

আপনি ঠিক বলছেন ভাই দুঃসময়ের বন্ধু সুসময়ে পর হয়ে যায়। আজকাল মানুষ চেনা অনেক কঠিন। নিজের লাভে হবে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়। নিজের ক্ষতি কেউ চায় না। দুঃসময়ের বন্ধু সুসময়ে পর হয়ে যায় এই কথা ঠিক বলছেন ভাই। কারন সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। ‌বাস্তবিক বিষয় নিয়ে দারুণ একটি পোস্ট উপহার দিলেন আপনি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন ভাই।

আমি তো প্রথমে ক্যাপশন পড়ে ভেবেছিলাম ক্যাপশনে ভুল লিখলেন কি না! সবসময়ই তো শুনে এসেছি সুসময়ে বন্ধু অসময়ে খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে আপনি বিষয় টি কে অন্যভাবে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে লিখেছেন। আসলেই মানুষ ভীষণ অদ্ভুত প্রাণী! যা পায় না তার পিছনে ছুটতে থাকে আর যা পায় তা যেন হাত দিয়েই হেলায় হারায়! আর পরে আবারো আফসোস করে!

ধন্যবাদ আপু আমার লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য এবং যথোপযুক্ত করার জন্য।

"আমরা মানুষ বড্ড বেশী জটিল" একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া। আজকাল মানুষ চেনা বড় দায়। কে আপন কে পর বুঝাই মুশকিল। সব যেন মুখোশ। অনেক সুন্দর লিখেছেন আর্টিকেলটি ভাইয়া।ভালো লেগেছে আমার, আপনার আজকের আর্টিকেলটি। একটি কথা বলা যায়, যারা সুসময়ে বন্ধুকে ছুড়ে ফেলে দেয় তারা স্বার্থপর। নিজের ছাড়া কিছুই বুঝেছেনা। তারা মানুষ রুপে অমানুষ। দুঃসময়ের বন্ধু সুসময়ে পর হয়ে যায় শিরোনামে লেখাটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি পড়ে যথোপযুক্ত মন্তব্য করার জন্য। মানুষ এখন আর মানুষ নেই, তবে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই।

যারা দুঃসময়ের আমাদের পাশে দাঁড়ায়, নিজেদের সুসময় আসলে তাদেরকে অবশ্য ভুলে যাওয়া উচিত না কোন ভাবেই। কিন্তু বাস্তবতা হয়ত ভিন্ন ভাবে আমাদের কাছে ধরা দেয়। নিজেদের ভাল সময়ে আমরা আর অতীতকে মনেই করতে চাই না। কিন্তু অতীতের উপর ভিত্তি করেই আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত।

সুন্দর একটা রিমাইন্ডার মূলক পোস্ট করেছেন।

ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি পড়ে বেশ গোছানো মন্তব্য করার জন্য। আমি নিজের জীবনে এমন অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি, যা আমাকে বাস্তবতা চেনতে সহযোগিতা করেছে।

দুঃসময় পাশে থাকবে এমন বন্ধু খুঁজে পাওয়া এখন বর্তমান সময়ে বেশ মুশকিল। আমাদের জীবনে এখন যারা বন্ধু নামে থাকে তারা তো সুসময়ের। একটু অসুবিধা হলেই তারা কেটে পড়ে। তবে হ্যাঁ সবাইকে খারাপ বলছি না ভালোও কিছু আছে।কারণ খারাপ ভালো মিলেই তো দুনিয়া। লেখাটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো ভাইয়া।

বিপদেই বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায়। দুঃসময়ে যে পাশে থাকে সুসময়ে তাকে ভুলে গেলে আমরা কিন্তু সত্যিকারের বন্ধুকে হারিয়ে ফেলবো। তাই সত্যিকারের বন্ধুকে পেতে হলে বিপদের সময়ই পাওয়া যায়। আর তাকে সুসময়ে হারিয়ে ফেলা যাবে না।চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাইয়া আসলেই মানুষের মনের প্যাচ খুবই জটিল আর তা বোঝা খুবই কঠিন। ভাইয়া খুব সুন্দর কিছু বিষয় আলোচনা করেছেন। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু এই পৃথিবীর সব মানুষ গুলো যদি আপনার মতো চিন্তা করতো তাহলে হয়তো পৃথিবীটাই অন্য রকম হতো। সবার চিন্তা ধারা কেন যে এক হলো না? তাহলে তো পৃথিবীতে খারাপ কিংবা গরীব মানুষ বলে কেউ থাকতো না। বর্তমানে পৃথিবীর পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যেখানে মানুষ শুধু বুঝে কাকে মেরে কিভাবে উপরে উঠা যায়। কিন্তু সেটা বুঝে না উপর থেকে নিচে নামানোর জন্যই সবার উপরে একজন রয়েছেন আর তিনি হলেন সৃষ্টিকর্তা। যিনি সময় মতো আমাদের অপকর্মের পুরষ্কার পাঠিয়ে দেন। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি বিষয় সুন্দরভাবে আলোচনা করার জন্য।

অনেক ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। মানুষের বিবেক এখন বিলুপ্ত তাই মানুষকে ঠকিয়ে উপরে উঠতে চায়।

এটা একদমই ঠিক কথা ভাই, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যতগুলো গ্রহ নক্ষত্র রয়েছে তার থেকেও আমাদের মনের জটিলতা আরো বেশি। হা হা হা... আমাদের আশেপাশে আসলে কিছু পাড়া-প্রতিবেশী রয়েছে যারা আসলেই অন্যের সুখ সহ্য করতে পারে না। তবে আপনি যে কথাটা বললেন, সেটা সবথেকে ইম্পরট্যান্ট। অর্থাৎ যে বিপদের সময় পাশে থাকে তাকে যদি বিপদ কেটে গেলে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়, তার থেকে খারাপ কাজ আর কিছু হতে পারে না। তাই এটা থেকে আমাদের সব সময় বিরত থাকতে হবে।

অনেক ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। মানুষ এখন অনেক বেশি স্বার্থপর এবং অন্যের ক্ষতি করতে মুখিয়ে থাকে।

মানুষ এখন অনেক বেশি স্বার্থপর এবং অন্যের ক্ষতি করতে মুখিয়ে থাকে।

এটাই বর্তমান সমাজের বাস্তব চিত্র ভাই। এই ব্যাপারটাকে মেনে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।